বিশ্বকাপে একের পর এক হ্যাটট্রিক করবো ভাবিনি 

ডেস্ক রিপোর্ট
  ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩:৪৮
আলো ছড়াচ্ছেন আমিরুল

ভারতে অনূর্ধ্ব-২১ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দারুণ পারফরম্যান্স করে যাচ্ছে।  ইউরোপিয়ান দলগুলোর সঙ্গে প্রায় সমানে সমান লড়াই করছে। দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দলকেও হারিয়েছে। এছাড়া লাল সবুজ দলের হয়ে  আমিরুল ইসলাম নিজেকে আলাদা করে চিনিয়ে যাচ্ছেন৷ এখন পর্যন্ত ৫ ম্যাচে ৪ হ্যাটট্রিক করেছেন। ১৫ গোল করে এককভাবে শীর্ষেও আছেন তিনি। সোমবার স্থাননির্ধারণী ম্যাচে অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে শেষ ম্যাচ৷ শেষ ম্যাচও ইতিবাচক পারফরম্যান্স রাখতে চান ফরিদপুর থেকে উঠে আসা খেলোয়াড়।  তবে এমন পারফরম্যান্সের পর নিজেকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিতে চান আমিরুল।
এমনিতে দারুণ পারফরম্যান্সের পর চারদিক থেকে প্রশংসা পাচ্ছেন।  যদিও এভাবে অভাবনীয় সাফল্য পাবেন, চিন্তাও করেননি ২০ বছর বয়সী খেলোয়াড়।  ভারতের মাদুরাই থেকে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘ভারতে বিশ্বকাপে একের পর এক হ্যাটট্রিক করবো ভাবিনি। এখনও স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে। আসলে হ্যাটট্রিক করবো বা শীর্ষ গোলদাতা হবো- এ নিয়ে আগে ভাবিনি। শুধু নিজের খেলাটা খেলে গেছি।  দলের জন্য যা ভালো হয়, তাই করার চেষ্টা করেছি। পরিশ্রমের ফল পেয়েছি বলতে পারেন।’
মাদুরাইতে তো স্থানীয় দর্শকদের ভালোবাসা পাচ্ছেন আমিরুল। জানালেন, ‘শেষ ম্যাচের পর অনেকেই এসে ছবি তুলেছে, অভিনন্দন জানিয়েছে।  আমাদের দলকে তো আগেই সাপোর্ট করেছে। সব মিলিয়ে আমি আসলে অবাক হয়েছি তাদের ভালোবাসা পেয়ে।’
এছাড়া অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর কোচরাও প্রশংসা করেছেন। আমিরুল বললেন, ‘আর্জেন্টিনা ও ভারতসহ অন্য দেশের কোচরা বাহবা দিয়েছে। এতে আরও ভালো লাগছে। আশা করছি, সামনের দিকে নিজেকে আরও মেলে ধরতে পারবো।’
আমিরুলের সবগুলো গোলই এসেছে পেনাল্টি কর্নার থেকে। ড্র্যাগ এন্ড ফ্লিকে চয়ন ও আশরাফুলের পর আমিরুল এখন তারকা।  বিশ্বকাপের মতো জায়গায় আলো ছড়ানো আমিরুলের কিন্তু শুরুটা হয়েছিল ফরোয়ার্ড পজিশনে। বিকেএসপিতে কোচ শেখ মো. নান্নু তার পজিসন বদলে দেন। ডিফেন্ডার হয়ে তখন পেনাল্টি কর্নার নিয়ে আলাদা কাজও শুরু করেন।  সময়ের পরিক্রমায় বর্তমানে ডাচ কোচের ছোঁয়ায় ২০ বছর বয়সী খেলোয়াড় আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে।
বাংলাদেশের হকিকে নতুন করে পাদপ্রদীপের আলোতে নিয়ে আসা আমিরুলের আবার হতাশাও আছে। দেশে ফুটবল ও ক্রিকেটের পর হকি জনপ্রিয় খেলা হলেও নিয়মিত চর্চা নেই।  লিগ হয় প্রায় চার বছর পর। পারিশ্রমিকও  কম। কর্মকর্তাদের দ্বন্দ্বে হকি পিছিয়ে গেছে।  আমিরুল বললেন,‘আমরা হকি খেলাটাকে ভালোবাসি। ধরেন সাফল্য আসছে, কিন্তু এটাকে তো ধরে রাখতে হবে৷ আমরা জানি না লিগ আদৌ হবে কিনা। সারা দেশে নতুন করে এর চর্চা হবে কিনা। বিশ্বকাপে ভালো পারফরম্যান্স করেও আমরা উপযুক্ত সম্মান পাবো কিনা৷ তাই অনেক সময় খারাপ লাগে। সবারই উচিত হকির দিকে ভালো করে দৃষ্টি দেওয়া।’
আজ অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে জিততে পারলে চ্যালেঞ্জার্স ট্রফিও পাবে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপে ১৬ দলের বাইরে থাকাদের নিয়ে আলাদা ট্রফির প্রবর্তন হয়েছে। 
আমিরুল চাইছেন তা জয় করতে, ‘আজ চেষ্টা করবো সবাই মিলে ভালো খেলতে।  শেষটা ভালো করে দেশে ফিরতে, যেন ট্রফিটা জেতা যায়।’