সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলাসহ বিভিন্ন চরে অস্থায়ী শুঁটকি পল্লীতে চলতি মৌসুমে ৬ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন শুঁটকি উৎপাদনে রেকর্ড হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত শুঁটকি মৌসুমে জেলে ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সুন্দরবন বিভাগ ৪ কোটি ১৮ লাখ ৬৯ হাজার টাকা রেকর্ড পরিমান রাজস্ব আয় করেছে। যা গত মৌসুমের চেয়ে প্রায় ১ কোটি টাকা বেশি।
গত বছর ২০২০-২১ সালে এই রাজস্বের পরিমাণ ছিল ৩ কোটি ২০ লাখ টাকা। তবে মৌসুমের শুরুতে কয়েক দফা ঝড় বৃষ্টিতে মাছ নষ্ট না হলে রাজস্বের পরিমাণ পাঁচ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেত বলে দাবি বন বিভাগের।
সুন্দরবন বিভাগ জানায়, প্রতি বছর নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত সুন্দরবন সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর পাড়ের দুবলা, আলোরকোল, মেহেরআলী চরসহ কয়েকটি চরে পলিথিন, কাঠ ও খড় দিয়ে অস্থায়ী তাবু করে বসবাস করেন জেলেরা। এই পাঁচ মাস প্রায় ১৫ হাজার জেলে বহদ্দর মাছ আহরণ করেন। বিভিন্ন প্রজাতির মাছ প্রক্রিয়া করে কোনো প্রকার কেমিক্যাল ছাড়া শুধুমাত্র রোদে শুকিয়ে শুঁটকি তৈরি করেন জেলেরা। রাসায়নিক মুক্ত শুঁটকি হওয়ায় দুবলার চরের শুঁটকির খ্যাতি রয়েছে দেশে বিদেশে।
বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (পিএফও) মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, টানা পাঁচ মাস মাছ আহরণের পরে বন বিভাগের বেঁধে দেওয়া সময় অনুযায়ী ৩১ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে শুঁটকি আহরণ মৌসুম শেষ করেছেন জেলেরা। বেশিরভাগ জেলেই জনমানব শূন্য সুন্দরবন ছেড়ে পরিবার পরিজনের কাছে চলে গেছেন। এখনও কিছু জেলে ও ব্যবসায়ীরা সুন্দরবনে রয়েছেন। যারা নিজেদের মালামাল গুছিয়ে বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছেন। গত মৌসুম থেকে এবার রেকর্ড পরিমান ৬ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন শুঁটকির উৎপাদন ও রাজস্ব আদায়েও রেকর্ড হয়েছে। ৩১ মার্চ পর্যন্ত আমরা ৪ কোটি ১৮ লাখ ৬৯ হাজারা টাকা রাজস্ব আদায় করেছি। যা গত মৌসুমের তুলনায় প্রায় ১ কোটি টাকা বেশি। আশাকরি আগামীতেও রাজস্বের পরিমাণ বাড়বে। যদি বড় ধরনের কোনো ঝড়-জলোচ্ছ্বাস বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে না পড়েন জেলেরা। এবার মৌসুমের শুরু ও মাঝে বড় ধরনের দুটি প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রায় ৫ কোটি টাকার শুঁটকি নষ্ট হয়েছে জেলেদের। তারপরেও মাছ ভাল পাওয়ায় জেলেরা তাদের লোকসান কিছুটা পুষিয়ে নিতে পারবে।