রংপুর নগরীর সিও বাজারে একটি এলপিজি ফিলিং স্টেশনে বিস্ফোরণ হয়েছে। এতে একজন নিহত এবং অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। এসময় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আশেপাশে থাকা অ্যাম্বুলেন্সসহ বেশ কয়েকটি গাড়ি ও বাড়িঘর। দেখে মনে হচ্ছে এ যেন যুদ্ধবিধ্বস্ত কোনো এলাকা। আবাসিক এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর সাধারণত যেমন দৃশ্য চোখে পড়ে ঠিক তেমন।
ফিলিং স্টেশনের পাশে থাকা বাড়ির মালিক মনিরুল ইসলাম বলেন, গত সাতদিন আগে ওই ফিলিং স্টেশনের ট্যাংক থেকে পাইপ লিকেজ হয়ে গ্যাস বের হয়েছিল। এসময় আমাদের আশপাশের কাউকে কোনো রকম সতর্কতামূলক বার্তা দেওয়া হয়নি। আজ ওই পাইপ ঠিক করতে গিয়ে বিস্ফোরণ হয়েছে। আজও আমাদের কাউকে কিছু বলা হয়নি। বাড়িতে কেউ ছিল না। পাশের ভাড়াটিয়াসহ তার তিনতলা ভবনের জানালা, দরজা ও আসবাবপত্র ভেঙে তছনছ হয়েছে। দেখে মনে হচ্ছে যুদ্ধবিধ্বস্ত কোনো এলাকা এটি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সিও বাজারের ওই ফিলিং স্টেশনের গ্যাস সেন্টারে মেরামতের কাজ চলছিল। হঠাৎ করে গ্যাস মজুতের ট্যাংকে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। এতে ট্যাংক ও যন্ত্রাংশ ছিটকে পড়ে এবং আশপাশে রাখা অন্তত ২০টি অ্যাম্বুলেন্স, মাইক্রোবাস ও দুটি দূরপাল্লার বাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিস্ফোরণের তীব্রতায় আশপাশের বাড়ির জানালার কাঁচ ভেঙে পড়ে। ঘটনার পর এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং কিছু সময়ের জন্য রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কে যান চলাচল ব্যাহত হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, ওই এলাকার হাজি মোজাফফর হোসেনের ছয়তলা ভবন, আবদুল্লাহ আল মামুন, রাজু মিয়া, মৃত ডাক্তার মতিয়ার রহমান ও ছালেক মিয়ারসহ বেশ কয়েকটি বাড়ির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির মালিক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এমন একটি ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করার আগে আমাদের সতর্কতা অবলম্বনের জন্য বলা উচিত ছিল। আবাসিক এলাকার বাসিন্দাদের প্রাণহানি না ঘটলেও বাড়িঘরের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানায়, বিস্ফোরণের পর আহতদের হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক একজনকে মৃত ঘোষণা করেন।নিহত ব্যক্তির নাম সেলিম মিয়া। তিনি একজন প্রকৌশলী বলে জানা গেছে। আহতদের মধ্যে আরও দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
রংপুরের সেই ফিলিং স্টেশনের আশপাশ যেন যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকা
রংপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক বাদশা মাসউদ আলম জানান, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। স্টেশনটি মেরামতের জন্য বন্ধ ছিল। ট্যাংকে গ্যাসের অতিরিক্ত চাপের সৃষ্টি হওয়ায় বিস্ফোরণ হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আহতদের উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।