বোয়িং নয় এয়ারবাসই কিনছে বিমান, জানিয়ে গেলেন বিদায়ী এমডি

ডেস্ক রিপোর্ট
  ৩০ মে ২০২৪, ১৩:৫১

রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্সবিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জন্য এ যাত্রায় এয়ারবাস থেকেই উড়োজাহাজ কেনা হচ্ছে বলে স্পষ্ট ধারণা দিলেন রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এ বিমান সেবা সংস্থার বিদায়ী ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. শফিউল আজিম।
এয়ারবাস কেনার কারণ হিসেবে তিনি একক কোম্পানির ওপর নির্ভরতা কমানো, যাত্রীদের পছন্দের সুযোগ তৈরি এবং বিমানের ‘ফেইসভ্যালু’ বৃদ্ধির কথা বলছেন।
সচিব হিসেবে পদোন্নতি দিয়ে শফিউল আজিমকে সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনে পাঠিয়েছে সরকার। অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদায় বিমানের এমডি হিসেবে নিজের শেষ কর্মদিবস বুধবার বলাকা ভবনে তিনি এভিয়েশন সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
প্রায় দেড় ঘণ্টার আলোচনার বড় অংশ জুড়ে ছিল উড়োজাহাজ কেনা বিষয়ক প্রশ্নোত্তর। এয়ারবাস কেনার সিদ্ধান্ত গত বছরই হয়েছে বলে এক প্রশ্নের উত্তরে জানান বিদায়ী এমডি।
বিমানের কাছে উড়োজাহাজ বেচতে মার্কিন জায়ান্ট বোয়িং এবং ইউরোপীয় উড়োজাহাজ নির্মাতা এয়ারবাসের মধ্যে যে প্রতিযোগিতা চলছিল, সেটি দৃশ্যমান হয় গত বছরের শুরুতেই। কেউ কেউ এটাকে ‘বাংলাদেশের আকাশ দখলে ইউরোপ-আমেরিকার দ্বৈরথ’ হিসেবেও দেখছিলেন।
বিমানের বহরে বর্তমানের ২১ টি উড়োজাহাজের ১৬টিই বোয়িংয়ের তৈরি। বিমানের এমডি বহরে ভিন্নতা আনার পক্ষে নানা যুক্তি দিলেও মিশ্র বহরে খরচ বেড়ে যাওয়ার বিষয়টিও আলোচনায় রয়েছে।
বিমান এয়ারবাস না বোয়িং কিনছে জানতে চাইলে এমডি বলেন, “আমরা আস্তে আস্তে যেহেতু ফ্লিট বড় করছি, আমাদের যদি ডাইভারসিটি না থাকে, শুধু সিঙ্গেল সোর্সের ওপর থাকি তাহলে এটি…। একটা বিষয় হল, দুই ধরনের এয়ারক্রাফট থাকলে যাত্রীদের পছন্দ করার সুযোগ থাকে। অনেক যাত্রীর চয়েস থাকে যে তিনি এয়ারবাস এ৩৫০ তে চড়বেন। তখন যাত্রীদের পছন্দগুলো যেমন আমরা যোগান দিতে পারব।
“আরেকটা দিক হচ্ছে যে কোনো সময় যে কোনো কোম্পানি খারাপ করতে পারে। তখন যেন আমরা কোন বড় বিপদে না পড়ি, আমার অল্টারনেটিভ যেন থাকে, আমাদের যেন সেই স্ট্রেংথ থাকে যাতে আমরা আনস্টেবল না হই। এরকম পরিস্থিতিতে আমরা যেন কোনো ঝুঁকিতে না পড়ি সেটার জন্য দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে কিন্তু এখন এয়ারবাসের সঙ্গে আমাদের এই নেগোসিয়েশনটা চলছে।”
শফিউল আজিম বলেন, “আপনারা দেখতে পাবেন, বোয়িং ও এয়ারবাসের মধ্যে আমরা যদি সুন্দর একটা সমন্বয় করতে পারি, তাহলে বিমান এশিয়াতে বা পৃথিবীর অন্যতম এয়ারলাইন্স হিসেবে দাঁড়াতে পারবে। আমাদেরও ব্র্যান্ডিং বাড়বে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের যে ফেইসভ্যালু, তা বাড়বে। এই যে ডাইভারসিটি, এটা কিন্তু আমাদের অন্যরকম উচ্চতায় পৌঁছে দেবে।
“আর আমাদের এয়ারবাস কেনার যে প্রক্রিয়া চলছে, সেটা একেবারে আমাদের পলিসি অনুসরণ করে হচ্ছে। সুতরাং এখানে ব্যত্যয়ের কোনো সুযোগ নেই। আমরা টেকনিক্যালি বেটার পাচ্ছি কী না, আমরা ফাইনান্সিয়ালি লাভজনক অবস্থায় আছি কি না, আমরা সব সুবিধাগুলো পাচ্ছি কি না– এসব বিবেচনা করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।”
বিদায়ী এমডি বলেন, “আমাদের মধ্যে একটা সুযোগ তৈরি হয়েছে। বোয়িং ও এয়ারবাসের মধ্যে যদি একটা সুস্থ ও সুন্দর কম্পিটিশন তৈরি হয়, তাহলে লাভবান হব আমরা। তাহলে কেন এই সুযোগটা আমি নেব না? পাশাপাশি আমাদের যে বোয়িংয়ের অফারটা এসেছে, ওই কমিটি এ নিয়মেই সেটা মূল্যায়নের কাজ শুরু করবে।
“আমরা এখন বলব যে ক্রেতা হিসেবে আমরা সুবিধাজনক অবস্থানে আছি। আমরা দেখব কোনটা বেশি লাভজনক বিমানের জন্য। আমাদের চয়েসটা বেড়ে গেল।”
এয়ারবাস কেনার প্রক্রিয়া এখন কোন পর্যায়ে আছে জানতে চাইলে শফিউল আজিম বলেন, “মূল্যায়ন কমিটি এখন নেগোসিয়েশন কমিটিকে রেফার করেছে। বিমান বোর্ডের অনুমোদন নিয়ে যে নেগোসিয়েশন কমিটিটা হয়েছে, তারা এখন দরকষাকষি করবে এয়ারবাসের সঙ্গে। দাম, টেকনিক্যাল বিষয়, অর্থায়ন, ট্রেনিং সবকিছু থাকবে এর মধ্যে। উড়োজাহাজ কেনার কিছু সেট নিয়ম আছে, তারা সেটা অনসুরণ করবে।”
এয়ারবাসের প্রস্তাব মূল্যায়নের জন্য গঠিত কমিটি প্রথমে প্রস্তাবটি নাকচ করে দেয়, এরপর কমিটি পাল্টে দ্বিতীয় দফায় তিন দিনের মধ্যে একই কমিটি সেই প্রস্তাবে ইতিবাচক মূল্যায়ন দেয় বলে ঢাকার একটি দৈনিকে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিমানের এমডি বলেন, “এই টেকনিক্যাল-ফাইনান্সিয়াল কমিটিতে আসলে কোনো পরিবর্তন হয়নি। এই কমিটিতে বিমানের যে পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং) প্রধান হিসেবে ছিলেন, তিনি অবসরে যাওয়ায় পরিবর্তন আনতে হয়েছে।
“আর প্রথমে তারা দুটি ফ্রেইটারের প্রস্তাব দিয়েছিল। আমাদের মনে হয়েছে ওটাতে যাওয়া ঠিক হবে না। এয়ারবাসের প্রথম দফার প্রস্তাবটি নাকচ হওয়ার পর তারা একটি রিভাইজড প্রপোজাল দেয়। সেই প্রপোজালে কিন্তু অনেক বেটার কিছু এসেছে। তারাও (এয়ারবাস) মনে করেছে যে কম্পিটিশনে টিকতে গেলে তাদের ভালো অফার দিতে হবে।”
বিমানের এমডি বলেন, “সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে আমাদের বারবার নিশ্চিত করেছে যে বিমানের জন্য যেটা ভালো হবে, আমরা সেটাই যেন করি। এখানে কোনো ধরনের চাপ নেই। কোনো ধরনের ইন্টারভেনশন আমরা পাইনি। এটা একেবারে স্বচ্ছভাবে সব নিয়ম মেনেই হচ্ছে।”
অভ্যস্ততার বাইরে নতুন কিছু করতে গেলে বাধা আসে মন্তব্য করে এমডি বলেন, “নতুন একটা জিনিস ইন্ট্রোডিউস করতে গেলে এক ধরনের বাধা আসে। এটা স্বাভাবিক। যেটাতে আপনি অভ্যস্ত হয়ে গেছেন, সেটা থেকে আরেকটাতে শিফট করতে… পরিবর্তনকে মানুষ একটু ভয় পায়। কিন্তু এই পরিবর্তনটা আমাদের জন্য লং রানে লাভ নিয়ে আসবে।
“কারণ আমি মনে করি বিভিন্ন ঘটনা ঘটছে কোনো একটা কোম্পানিতে। ভবিষ্যতে যদি এরকম কিছু হয়, তাহলে আমাদের অল্টারনেটিভ থাকল। কয়দিন আগেই বলা হচ্ছিল বোয়িং ৭৭৭ সব বসায়ে দিতে হবে। এখন যদি এরকম কিছু সামনে আসে, তাহলে তো আমার পুরো ফ্লিটই বসে যাবে। শুধু এয়ারবাস না, সামনে যদি আরও কোনো কোম্পানি আসে, তাহলে সামর্থ্য অনুযায়ী সেটাকে অ্যাডাপ্ট করা দরকার। ভবিষ্যতের নিরাপত্তার জন্য এটার প্রয়োজন আছে।”
এয়ারবাস থেকে উড়োজাহাজ কিনলে বিমানের অনেক দিনের বিশ্বস্ত অংশীদার বোয়িংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হবে কি না, সে প্রশ্নও আসে আলোচনায়।
শফিউল আজিম বলেন, “প্রথম দিকে বোয়িংয়ের প্রস্তাব ছিল ৭৩৭ উড়োজাহাজ বিক্রির। আপনি জানেন যে, ৭৩৭ ম্যাক্সের অনেকগুলো ঘটনা ঘটেছে। সুতরাং আমরা তো হুট করে যেতে পারি না। এয়ারবাসের মূল্যায়নটা শেষ হলে ওটা শুরু হবে। বোয়িং আমাদের খুব ট্রাস্টেড পার্টনার। তারা যেহেতু আমাদের টেকনিক্যাল সাপোর্ট দিচ্ছে। তাদেরকে আমরা এয়ারক্রাফটের কিস্তি নিয়মিত দিচ্ছি। তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক খারাপ হওয়ার কোনো কারণ নেই।”
বোয়িংয়ের ‘সাপ্লাই চেইন ও টেকনিক্যাল সাপোর্ট খুবই ভালো’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “অন্যান্য বিষয়ে বোয়িংয়ের সঙ্গে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমরা যে চারটা বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজ কিনেছিলোম তার দুটোর টাকা আমরা সুদে আসলে শোধ করে ফেলেছি। বাকি দুটোর টাকা হয়ত এ বছর নাগাদ শোধ করা যাবে।
“বিমানের নিজস্ব আয় থেকে এই টাকা পরিশোধ করা হচ্ছে। তাদের যে ঋণের সুবিধা ছিল, সেটাও চমৎকার ছিল। সব মিলিয়ে বোয়িংয়ের সঙ্গে আমাদের শুধু এয়ারক্রাফট কেনা বেচার সম্পর্ক না। আমাদের মেইনটেন্যান্স, অর্থায়ন, পাইলটদের প্রশিক্ষণ, আমাদের ভবিষ্যত যে অন্যান্য পরিকল্পনা আছে সেগুলোর জন্যও আমরা বোয়িংয়ের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি।”
উড়োজাহাজ বিক্রিসহ বেশ কিছু প্রস্তাব নিয়ে ২০২৩ সালের মার্চে বাংলাদেশে আসে ফ্রান্সের উড়োজাহাজ নির্মাতা কোম্পানি‘এয়ারবাস’। এরপর ওই বছর মে মাসে লন্ডনে এ বিষয়ে একটি যৌথ ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং যুক্তরাজ্যের বিনিয়োগমন্ত্রী লর্ড ডমিনিক জনসন।
‘এভিয়েশন ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট পার্টনারশিপ’ বিষয়ক ওই যৌথ ঘোষণাপত্রের আওতায় উড়োজাহাজ প্রস্তুতকারক কোম্পানি এয়ারবাস থেকে যাত্রী ও কার্গো উড়োজাহাজ কেনার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে বলে তখন জানিয়েছিল রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বাসস।
এরপর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা সফরে এসে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ জানান, বাংলাদেশ এয়ারবাস থেকে ১০টি বড় উড়োজাহাজ কেনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
গত বছরই যে এয়ারবাস কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছিল, সে কথা জানিয়ে শফিউল আজিম বলেন, “আমরা তাদের কাছে কিনব বলেই তো একটা এলওওয়াই করেছি। সেটা গত বছরের মে মাসে। সেটা ছিল লং টার্মের একটা নন বাইন্ডিং কমিটমেন্ট। তো সেটার ওপরেই অফার আসছে। এই অফারটা সিঙ্গেল একটা অফার। সেটা আমরা নেব কি নেব না সেটা ডিউ প্রসেসের মধ্য দিয়ে যাবে।”

‘বেসরকারি কোম্পানিকে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং দেওয়া ঠিক হবে না’

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ফ্লাইট পরিচালনার পাশপাশি দেশের এয়ারপোর্টগুলোতে গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং সেবাও দিয়ে আসছে। গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং বিমানের আয়ের বড় উৎসও। তবে চালু হওয়ার অপেক্ষায় থাকা শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের কাজ জাপানের একটি কোম্পানিকে দেওয়া হচ্ছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করা হয়েছে। থার্ড টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের কাজ বিমানের হাতে পেতে গত দেড় বছর শফিউল আজিমের দৃশ্যমান তৎপরতা ছিল।
তিনি চলে যাওয়ার পর সেই তৎপরতায় ভাটা পড়বে কী না জানতে চাইলে শফিউল আজিম বলছেন, “থার্ড টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং বিমানের পাওয়া উচিৎ। এখানে আমাদের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা, সম্মানসহ অনেক কিছু জড়িত। তাছাড়া বিগত বছরে বিমান প্রায় ১১শ কোটি টাকার গ্রাউন্ড ইকুইপমেন্ট কিনেছে। পাশাপাশি কর্মীদের প্রশিক্ষণ ও তদারকির বিষয়গুলোও ঢেলে সাজানো হয়েছে।
“আমরা কনফিডেন্ট যে এখানে বিমানের ধারেকাছে আসার মত অবস্থানে কেউ নেই। তবে যে কোনো ভালো প্র্যাকটিসকে আমরা ওয়েলকাম করি।”
তিনি বলেন, “এটা শুধু ব্যবসা না। একটা কৌশলগত বিষয়, জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন দেশে এটা রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থাগুলোই করে থাকে। সিঙ্গাপুর, টার্কিশ, এমিরেটসও তাদের দেশে করে থাকে। অন্য কোনো প্রাইভেট কোম্পানির হাতে বিষয়টা তুলে দেওয়া ঠিক হবে না। কারণ এখানে অনেক রকম বিষয় থাকে। আমরা অনেক রকম ফ্লাইট হ্যান্ডেল করি। আমরা দেশি-বিদেশি ভিভিআইপি হ্যান্ডেল করি, যা অত্যন্ত স্পর্শকাতর। এগুলো কোনোভাবে প্রাইভেট অর্গানাইজেশনের হাতে দেওয়ার সুযোগ নেই। কেউ দেয়ও না।”
বিমানের লাভ করা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে সাম্প্রতিক কয়েকটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনগুলোতে বলা হচ্ছে ফ্লাইট পরিচালনা করে ক্ষতিতে থাকা বিমান গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের লাভ দেখিয়ে নিজেদের লাভজনক বলে ঘোষণা করছে।
এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বিমানের বিদায়ী এমডি বলেন, “গত ১০ বছরের মধ্যে বিমান আট বছরই লাভে ছিল। কোভিডকালীন এক বছর এবং যখন নতুন উড়োজাহাজগুলো কেনা হয় তখন একেবারে অনেক টাকা পেমেন্ট করতে হয়েছিল- সে কারণে লসে যায় বিমান। গত বছর ডলার ক্রাইসিসের মধ্যেও আমরা লাভ করেছি। আমরা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত অডিট ফার্মকে দিয়ে অডিট করিয়ে এই লাভ করার কথা বলছি, এটা আমাদের মুখের কথা না।”
শফিউল আজিমের দাবি, ‘বৈশ্বিক মানে সেরা ক্রেডিট রেটিং কোম্পানি’ বিমানের রেটিং দিয়েছে ‘ট্রিপল এ’।
“যারা ব্যবসা বোঝেন তারা বুঝবেন ‘ট্রিপল এ’ কোম্পানির মানে কী। বাংলাদেশে আরেকটা কোম্পানি আছে কি না আমাদের দেখান? বিমান লাভে আছে জন্যই তো এয়ারবাস, বোয়িং এরা আমাদের সাথে ব্যবসা করতে চায়। এজন্য কানাডা, জাপান এরা সবাই আমাদের সাথে ব্যবসা করতে চায়। আমি অন্তত ২০টা দেশের কথা বলতে পারি যারা বিমানের সাথে ব্যবসা করতে চায়। কোম্পানি লাভ না করলে তো তারা আসত না। তারা কী বোকা?”
বিমানের টিকেট নিয়ে ‘সিন্ডিকেটের’ অভিযোগ এসেছে বিভিন্ন সময়। এ বিষয়ে এমডি বলছেন, “আসলে অনেক সময় হয় কী, ‘বাঘ এল’ বলে বলে আমরা সিন্ডিকেটকে সুযোগ করে দিই। বিমানের এখনকার টিকিটিং সিস্টেমে ম্যানুয়ালি ইন্টারভেন করার সুযোগই নেই। যে কেউ সাইটে ঢুকে দেখে নিতে পারেন বিমানের টিকিটের কী অবস্থা।
“৩০ মের মধ্যে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় অনেক শ্রমিক পাঠাতে হবে মালয়েশিয়াতে। আমরা ধারণা করে নিয়মিত ফ্লাইটের পাশপাশি আরও চারটি ফ্লাইট দিয়েছি। আমাদের টিকিট কিন্তু সব ওপেন করে দেওয়া আছে। আমরাই সর্বনিম্ন ৭০ হাজার টাকা টিকিট বিক্রি করছি। আর ওই এজেন্সির লোকেরা কিনে নিয়ে মানুষের কাছ থেকে নিচ্ছে বিভিন্ন দাম। প্রাইভেট এয়ারলাইন্সগুলো এক লাখ ২০ হাজারেও বিক্রি করছে।
“এখন এজেন্সিগুলো যদি বাইরে টিকিট নিয়ে এভাবে বিক্রি করে, তাহলে বিমানের কী করার আছে আমাকে বলেন? আমরা চেষ্টা করছি মালয়েশিয়ায় আরও স্লট পেতে। আমরা স্লট পাওয়া মাত্র টিকিট ওপেন করে দিয়েছি। আপনারা যে কোনো এক্সপার্ট নিয়ে আসেন। কেউ যদি প্রমাণ করতে পারে এখানে সিন্ডিকেট আছে তো আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি আমার লোকজনের শাস্তি আমি এনশিওর করব।”