প্রথম দেখাতেই প্রেম। জায়গাটা ছিল ইস্ট নিউইয়র্কের একটি আশ্রয়কেন্দ্র। আকিলা লুসিয়াস চুল ঠিক করছিলেন। পাশে বসে থাকা এক অপরিচিত যুবক হঠাৎ বলে ওঠে, তুমি কীভাবে করছো এটা? আমাকেও দেখাবে? সেখান থেকেই শুরু।
সেই রাশিয়ান যুবক ম্যাক্সিম রেভিয়াকা আজ আকিলার স্বামী। তারা বিয়ে করেছেন ২২ জুন। একটি ছোট ও আবেগঘন অনুষ্ঠানে ম্যানহাটনের সেকেন্ড প্রেসবিটারিয়ান চার্চে সম্পন্ন হয়েছে আয়োজন। তবে এই দম্পতির সামনে অপেক্ষা করছে বিরাট এক শঙ্কা। বিয়ের ঠিক ৯ দিনের মাথায় ১ জুলাই, রেভিয়াকার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগের শুনানি হবে। সেদিনই ভ্যাগ্য নির্ধারণ হবে এই প্রেমের!
ম্যাক্সিম একজন অভিবাসী। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন একটি নিরাপদ ভবিষ্যতের আশায়। আকিলা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক থাকেন ব্রুকলিনের সাইপ্রেস হিলসে। দুজনের এই প্রেম, বন্ধুত্ব এবং পরবর্তীতে বিয়ে—সবকিছুই ঘটেছে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের (আইস) ক্রমবর্ধমান অভিযান ও ধরপাকড়ের মধ্যে।
তাদের উদ্দেশ্য ছিল কোর্ট ম্যারেজ করা। কিন্তু একটি ধর্মভিত্তিক সংগঠন খবর পেয়ে এগিয়ে এসে চার্চে বিয়ের আয়োজন করে। পাস্টর থিয়া রেজিও নিজ হাতে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। বিয়ের পর ছোট্ট একটি কেক কাটলেন তারা। অতিথিদের সামনে এক চুমুতে শেষ করলেন অনুষ্ঠান। তবে তাদের জন্য এই বিয়ে ছিল শুধু আবেগ নয়। এটা ছিল প্রতিরোধ, প্রত্যয় ও মানবিক আবেদন।
রেভিয়াকা বলেন, আমরা শুধু একটু স্থিরতা চাই। শান্তি চাই। ভালোবাসা দিয়ে জীবন গড়ে তুলতে চাই। আমি কখনো পালিয়ে থাকার চেষ্টা করিনি। সব আইন মেনে চলেছি। শুধু চাই, আমার কথা শুনুক আদালত।
তিনি আরও বলেন, অনেকেই এই দেশে এসেছে যন্ত্রণার স্মৃতি নিয়ে। কিন্তু অনেক অফিসার সেটা বুঝতে চান না। আইসের আদালতের ভেতরে-বাইরে হঠাৎ করে অভিবাসী ধরার অভিযোগ বেড়েছে। হয়তো শুনানিতে আমি ধরাও পড়তে পারি।
আকিলা লুসিয়াস জানিয়েছেন, ও থাক বা না থাক, আমি ওর পাশেই থাকবো। ভালোবাসা থাকলে আমরা একসঙ্গে সবকিছু পার হবো।