কয়েক মাসেই পারমাণবিক বোমার জন্য ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারে ইরান

আইএইএ-এর প্রধান
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  ২৯ জুন ২০২৫, ২৩:১৫

জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষক সংস্থা আইএইএ-এর প্রধান রাফায়েল গ্রোসি সতর্ক করেছেন যে, ইরান কয়েক মাসের মধ্যেই পারমাণবিক বোমা তৈরির জন্য ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারে।
গ্রোসি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি ইরানের তিনটি পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালালেও তা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়নি।
সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, খোলাখুলি বললে বলা যাবে না যে সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে।
ইসরায়েল ১৩ জুন ইরানের পরমাণু ও সামরিক স্থাপনায় হামলা চালায়। এরপর যুক্তরাষ্ট্র ফোর্দো, নাতানজ ও ইসফাহানে বোমা ফেলে হামলায় যোগ দেয়।
গ্রোসি বলেন, ইরানের প্রযুক্তিগত ও শিল্প সক্ষমতা এখনো রয়েছে। চাইলে তারা আবার কয়েকটি সেন্ট্রিফিউজ চালু করে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শুরু করতে পারবে।
পেন্টাগনের এক ফাঁস হওয়া প্রাথমিক মূল্যায়নেও বলা হয়েছে, এই হামলা ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে সর্বোচ্চ কয়েক মাস পিছিয়ে দিতে পেরেছে।
যদিও ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, হামলায় ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলো পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে।
অন্যদিকে, ইরানের পক্ষ থেকেও এসেছে ভিন্ন ভিন্ন বার্তা। সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনেই দাবি করেছেন, হামলায় কোনো বড় ক্ষতি হয়নি। অথচ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেছেন, ক্ষয়ক্ষতি ছিল অত্যন্ত গুরুতর।
হামলার পরপরই ইরানের সংসদ একটি প্রস্তাব পাস করে, যাতে বলা হয় আইএইএ এখন থেকে ইরানে পরিদর্শন করতে পারবে শুধু জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদনে এবং নির্দিষ্ট নিরাপত্তা নিশ্চয়তার ভিত্তিতে।
গ্রোসি বলেন, তিনি এখনো কূটনৈতিক সমাধানের মাধ্যমে আলোচনার আশা রাখেন।
তিনি বলেন, সামরিক হামলার পরে এই বিষয়টির দীর্ঘস্থায়ী সমাধান কেবল কূটনৈতিক পথেই সম্ভব।
২০১৫ সালের ঐতিহাসিক পরমাণু চুক্তি অনুযায়ী, ইরান ইউরেনিয়াম সর্বোচ্চ ৩.৬৭ শতাংশ মাত্রায় সমৃদ্ধ করতে পারতো এবং ফোর্দো প্ল্যান্টে কোনো সমৃদ্ধকরণ চলতো না।
কিন্তু ট্রাম্প ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রকে ওই চুক্তি থেকে সরিয়ে নেন, বলেন এটি বোমা তৈরি ঠেকাতে যথেষ্ট নয়।
২০২১ সালে ইরান আবারও ফোর্দোতে সমৃদ্ধকরণ শুরু করে এবং আইএইএ-এর হিসাব অনুযায়ী, এখন তাদের কাছে ৬০ শতাংশ মাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম রয়েছে যা দিয়ে ৯টি পারমাণবিক বোমা তৈরি সম্ভব।

সূত্র: আল-জাজিরা