পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে মঙ্গলবার (১ জুলাই) একাধিক সরকারি অফিসে সন্ত্রাসী হামলায় ১৬ বছর বয়সী এক কিশোর নিহত হয়েছে এবং অন্তত সাতজন আহত হয়েছে। প্রাদেশিক সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, হামলাকারীরা ছিল ‘ভারত-সমর্থিত সন্ত্রাসী’। তাদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বাহিনী পাল্টা অভিযানে অন্তত দুজন নিহত হয়েছেন।
বেলুচিস্তান সরকারের মুখপাত্র শাহিদ রিন্দ বলেন, মাস্তুং জেলায় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে তীব্র গোলাগুলির সময় দুই সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে এবং আরও তিনজন আহত হয়েছে। তিনি জানান, সন্ত্রাসীরা তহশিল অফিস, অন্যান্য সরকারি কার্যালয় এবং একটি ব্যাংকে হামলা চালায়।
সন্ত্রাসীদের গুলিতে ১৬ বছরের এক কিশোর নিহত হয় এবং সাতজন আহত হয়, জানান তিনি।
সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়, ফ্রন্টিয়ার কনস্ট্যাবুলারি, কাউন্টার-টেরোরিজম ডিপার্টমেন্ট (সিটিডি) ও লেভিস বাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থল ঘিরে ফেলে এবং সন্ত্রাসীদের দমন করে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এখনো অভিযান ও ক্লিয়ারেন্স অপারেশন চলছে বলে জানানো হয়।
পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) সম্প্রতি জানিয়েছে, ভারত তাদের ‘সম্পদ’ ব্যবহার করে পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলা বাড়িয়ে তুলছে। এতে ‘ভারতের একজন সামরিক সদস্যের প্রত্যক্ষ সম্পৃক্ততার অকাট্য প্রমাণ’ মিলেছে বলে দাবি করেছেন আইএসপিআর মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী।
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী সম্প্রতি ‘ফিতনা আল হিন্দুস্তান’ নামে একটি পরিভাষা ব্যবহার করছে, যার মাধ্যমে ভারতের ভূমিকাকে পরিকল্পিত অস্থিরতা সৃষ্টির প্রয়াস হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে।
পাকিস্তান ইনস্টিটিউট ফর কনফ্লিক্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের তথ্য অনুযায়ী, গত মে মাসে দেশজুড়ে ৮৫টি সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে, যা এপ্রিলের তুলনায় (৮১টি) কিছুটা বেশি। তবে গত নভেম্বর থেকে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) সরকারের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি শেষ করার পর থেকেই দেশটিতে সন্ত্রাসী হামলার হার বেড়েছে, বিশেষ করে খাইবার পাখতুনখাওয়া ও বেলুচিস্তানে।
২০২৫ সালের গ্লোবাল টেরোরিজম ইনডেক্স অনুযায়ী, পাকিস্তান এখন বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক সন্ত্রাস-আক্রান্ত দেশ। গত এক বছরে দেশটিতে সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির সংখ্যা ৪৫ শতাংশ বেড়ে ১,০৮১ জনে পৌঁছেছে।
সূত্র: ডন