ফাঁস হওয়া এক ফোনালাপ নিয়ে তদন্তের মুখে থাকা থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পায়েতংতার্ন শিনাওয়াত্রাকে পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে দেশটির সাংবিধানিক আদালত। মঙ্গলবার (১ জুলাই) আদালতের বিচারকরা সর্বসম্মতিক্রমে অভিযোগ গ্রহণ করেন এবং ৭-২ ভোটে তাকে দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেন।
পায়েতংতার্নের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দু একটি ফোনালাপ, যা তিনি কম্বোডিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমান সিনেট প্রেসিডেন্ট হুন সেনের সঙ্গে করেছিলেন। গত ২৮ মে থাই-কম্বোডিয়া সীমান্তে সশস্ত্র সংঘর্ষে এক কম্বোডিয়ান সেনা নিহত হওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে কূটনৈতিক তৎপরতার সময় এই ফোনালাপ হয়। কিন্তু আলাপের ভাষা ও অবস্থান নিয়ে দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়।
পায়েতংতার্নের প্রতি জনমনে ক্ষোভ বাড়তে থাকে। তার পদত্যাগ দাবিতে রাজধানী ব্যাংককের রাস্তায় বিক্ষোভ করেন হাজার হাজার মানুষ। গত শনিবার ব্যাংককের কেন্দ্রীয় বিজয় স্তম্ভ এলাকায় আয়োজিত এক বড় সমাবেশে জাতীয়তাবাদী ও রক্ষণশীল বিক্ষোভকারীরা তাকে ‘দুর্বল ও আপসকারী’ নেতা বলে আখ্যা দেন।
সোমবার পায়েতংতার্ন সাংবাদিকদের বলেন, আমি আদালতের প্রক্রিয়া মেনে নেবো, যদিও কাজ থেমে যাক, এটা চাই না। আপনি যদি জিজ্ঞেস করছেন আমি উদ্বিগ্ন কি না। আমি অবশ্যই উদ্বিগ্ন।
একইসঙ্গে তিনি জানান, পরিস্থিতি যেভাবে গড়াচ্ছে, তা রাজনৈতিক অস্থিরতার ইঙ্গিত বহন করে।
এর আগে, তার জোট সরকার থেকে গুরুত্বপূর্ণ দল ভুমজাইথাই পার্টি বের হয়ে যাওয়ায় মঙ্গলবার নতুন করে মন্ত্রিসভা পুনর্গঠন করেন রাজা মহা ভাজিরালংকর্ণ।
দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্ত
থাইল্যান্ডের জাতীয় দুর্নীতি দমন কমিশন প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে নৈতিকতা লঙ্ঘনের তদন্ত শুরু করেছে। এই তদন্তের ফলাফল নেতিবাচক হলে তা পায়েতংতার্নের স্থায়ী অপসারণের পথ খুলে দিতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন শিনাওয়াত্রার কন্যা পায়েতংতার্নের ওপর যে রাজনৈতিক ও আইনি চাপ তৈরি হয়েছে, তা আগামী নির্বাচনের আগেই থাইল্যান্ডে একটি নতুন নেতৃত্বের পথ খুলে দিতে পারে।
সূত্র: এপি, ইউএনবি