এক ভারতীয় নাগরিকের বিরুদ্ধে পণ্য চুরির অভিযোগ তদন্ত করছে মার্কিন পুলিশ। মে মাসের ১ তারিখে ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের একটি দোকান থেকে এক হাজার ৩০০ ডলার মূল্যের পণ্য চুরির চেষ্টার দায়ে তাকে আটক করে পুলিশ। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ খবর জানিয়েছে।
সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত পুলিশের বডি ক্যাম ফুটেজে ওই দোকানের এক কর্মীর বয়ান এবং পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ জানা যায়। সংশ্লিষ্ট দোকানের কর্মী বলেন, সাত ঘণ্টা ধরে ওই নারী (অভিযুক্ত) দোকানে ঘুরঘুর করছিলেন। তিনি বিভিন্ন পণ্য হাতিয়ে দেখছিলেন, আইলের মাঝে হাঁটাচলা করছিলেন। এক পর্যায়ে কার্ট ভর্তি করে মূল্য পরিশোধ না করেই পশ্চিম দিকের দরজা দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
অভিযুক্তের সন্দেহজনক হাবভাবের কারণে আগেই পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে দোকানের দায়িত্বরত কর্মীরা। বেরিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশের হাতে ধরা পড়লে সাফাই গাইবার চেষ্টা করেন তিনি। মূল্য পরিশোধের সুযোগ দেওয়ার অনুরোধ করে তিনি বলেন, আমি এই দেশের নই, এখানে থাকবও না।
তার বক্তব্য শুনে প্রশ্নকারী নারী মার্কিন পুলিশ সদস্য বলেন, আপনার দেশে চুরি করার অনুমতি আছে বলে তো মনে হয় না।
ঘটনাস্থলে সব আলামত যাচাই করার পর ওই নারীকে হাতকড়া পরিয়ে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। তার বিরুদ্ধে ফেলোনি চার্জ (গুরুতর অপরাধের অভিযোগ) দায়ের হতে পারে বলে ভিডিওতে উল্লেখ করা হয়। তবে ওই ভিডিওতে, তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেফতার দেখানো বা অভিযোগ গঠনের তথ্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে, ঘটনাটির ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন নেটিজেনরা। সে সব মন্তব্যে উঠে এসেছে শপলিফটিং (দোকান থেকে পণ্য চুরি), ভিসা মর্যাদা, এসব অবৈধ কাজের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসীদের ওপর প্রভাব ইত্যাদি উঠে এসেছে।
এক ব্যক্তি লিখেছেন, আমি নিজেও একজন অভিবাসী। অন্য দেশে অতিথি হয়ে এসে আইন ভাঙার ধৃষ্টতা আমি কোনও ভাবেই মেনে নিতে পারছি না।
আরেক ব্যক্তি লিখেছেন, আমি সাত বছর যুক্তরাজ্যে অভিবাসী হিসেবে থেকেছি। সবসময় চেষ্টা করেছি নিয়ম না ভাঙতে। একজন অভিবাসী হিসেবে আপনি আপনার দেশের প্রতিনিধি। এই নারী চোর। সে সহানুভূতির আশায় ভান করছে, যা হয়ত ভারতে কাজ করতো। এখানে সেটা চলবে না।
আরেক ব্যক্তি ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন, দেশের বাইরে ভারতের অপমানের কারণ হয়েছেন ওই অভিবাসী। তিনি শিরোনাম হয়েছেন সম্পূর্ণ ভুল কারণে। তার যথাযথ সাজা হওয়া প্রয়োজন।
কিছুদিন আগে, টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে চুরির দায়ে এক ভারতীয় শিক্ষার্থীর জড়িত থাকার ঘটনা সবার নজরে পড়ে।
উল্লেখ্য, শপলিফটিং এর কারণে ভিসা মর্যাদা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। অভিবাসীদের এইচ ওয়ান বি ক্যাটাগরির ভিসা নবায়ন ও গ্রিন কার্ড আবেদন যেমন প্রভাবিত হতে পারে, গুরুতর ক্ষেত্রে অভিযুক্তকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।