চীনের পণ্যে ৫৭ থেকে ৪৭% শুল্ক কমালেন ট্রাম্প

ডেস্ক রিপোর্ট
  ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৫৮


মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চীনের পণ্যে শুল্ক কমিয়েছে। চীনের পণ্যে মার্কিন শুল্ক ৫৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪৭ শতাংশ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
দক্ষিণ কোরিয়ার মাটিতে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে আজ বৃহস্পতিবার বৈঠক করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। খবর ইকোনমিক টাইমস।
এদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্স ট্রাম্পকে উদ্ধৃত করে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ও চীনের সঙ্গে এক বছরের বাণিজ্য চুক্তি আছে— এই চুক্তির মেয়াদ নিয়মিতভাবে বাড়ানো হবে। ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমাদের চুক্তি হয়েছে।’
সেই সঙ্গে কিছু শর্তের কথাও বলেছেন ট্রাম্প। সেগুলো হলো— বেইজিং আবার আমেরিকান সয়াবিন কেনা শুরুর সঙ্গে বিরল ধাতু রপ্তানি অব্যাহত রাখবে ও ফেন্টানিলের অবৈধ বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করবে।  
ট্রাম্প আরও বলেছেন, তিনি আগামী এপ্রিল মাসে চীন সফর করবেন; চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং তার পর যুক্তরাষ্ট্র সফর করবেন। সেই সঙ্গে ট্রাম্প বলেছেন, বিরল খনিজ সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান হয়েছে।
চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেছেন, এই শুল্কহার তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে। এ ছাড়া চীনের ফেন্টানিলে যে ২০ শতাংশ শুল্ক ছিল, তাও কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হবে।
মূলত যুক্তরাষ্ট্র চীনের সঙ্গে দ্রুত বাণিজ্য চুক্তি করে ফেলতে চায়। দক্ষিণ কোরিয়ায় দুই নেতার যে বৈঠক হচ্ছে, তাও মূলত যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহে। রয়টার্সের আগের এক সংবাদে এমন তথ্যই দেওয়া হয়।
এমনকি এই বৈঠকের আগে বাণিজ্য চুক্তি সংক্রান্ত কাঠামোগত ঐকমত্যের কথাও জানানো হয় রয়টার্সের এক সংবাদে। বলা হয়, পারস্পরিক বিরোধ আমলে নিয়ে বাণিজ্যচুক্তির কাঠামোর বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি কর্মকর্তারা। এখন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং এই কাঠামোর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। আজ ট্রাম্পের কথায় তার ইঙ্গিত পাওয়া গেল।
এই কাঠামো চূড়ান্ত হলে চীনের পণ্যে যুক্তরাষ্ট্র সাময়িকভাবে শুল্ক বাড়াবে না। অন্যদিকে চীন বিরল খনিজ ধাতু রপ্তানির বিষয়ে যে বিধিনিষেধ জারি করেছিল, তা–ও সাময়িকভাবে স্থগিত করবে। আজকের বৈঠকের পর ট্রাম্প সে কথাও বলেছেন।
এর আগে মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেন, আসিয়ান সম্মেলনের মধ্যে যে আলোচনা হয়েছে, তাতে আগামী ১ নভেম্বর থেকে চীনের পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের যে শতভাগ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করার কথা, তা স্থগিত হয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁর আশা, চীন চৌম্বক পদার্থসহ বিরল খনিজ রপ্তানিতে যে লাইসেন্স নেওয়ার প্রথা চালু করেছে, তা বাস্তবায়নের মেয়াদ অন্তত এক বছর পিছিয়ে দেবে।
এর মধ্যে বাড়তি আগ্রহ দেখিয়ে যুক্তরাষ্ট্র উল্টো চীনের পণ্যে শুল্ক হ্রাস করল। বিশ্লেষকেরা ধারণা করছেন, এবার দুই দেশের পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্য চুক্তির পালে পাওয়া লাগতে পারে।
চলতি বছরের ২ এপ্রিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাহী আদেশে বিশ্বের ৫৭ টি দেশের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেন। এরপর সেইসব দেশের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি করতে তিন মাসের জন্য এই সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন। অনেকে দেশের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। কিন্তু চীন ও ভারতসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দেশের সঙ্গে চুক্তি এখনো হয়নি।
চীনের সঙ্গে ট্রাম্প এখন শুল্ক বিরতির খেলা চালিয়ে যাচ্ছেন। অন্যদিকে রাশিয়ার তেল কিনে ইউক্রেন যুদ্ধে রসদ জোগানোর অভিযোগে ভারতের পণ্যে মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প।