যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য, দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলজুড়ে ভয়াবহ তাপপ্রবাহে  ঝুঁকিতে ২২ কোটি মানুষ

ডেস্ক রিপোর্ট
  ২৫ জুন ২০২৫, ১২:০৪

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য, দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলজুড়ে ভয়াবহ তাপপ্রবাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। চলমান ‘হিট ডোম’ নামক আবহাওয়াজনিত ঘটনার কারণে তাপমাত্রা বিভিন্ন স্থানে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ১১০ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে গেছে। যা গত শতকের মধ্যে অন্যতম রেকর্ড গরম হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রায় ২২ কোটি মানুষ এই তাপপ্রবাহের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। নিউইয়র্ক, ফিলাডেলফিয়া, বোস্টন, শিকাগো, টেক্সাস, ক্যালিফোর্নিয়া ও অ্যারিজোনা সহ বিভিন্ন শহরে গরমের তীব্রতা অতীতের সব রেকর্ড ছাপিয়ে গেছে। নিউইয়র্কে ১২৩ বছরের পুরনো তাপমাত্রার রেকর্ড ভেঙে ১০১–১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইটে পৌঁছেছে। এই তীব্র গরমে ‘অনুভূত তাপমাত্রা’ (হিট ইনডেক্স) ১১৫ ডিগ্রি পর্যন্ত উঠে গেছে। যা মানুষের শরীরের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
জাতীয় আবহাওয়া পরিষেবা জানিয়েছে, এই গ্রীষ্মে যুক্তরাষ্ট্রের এক বিশাল অংশ ‘চরম তাপমাত্রা সতর্কতা’ (এক্সট্রিম হিট অ্যাডভাইসরি) বা ‘তাপদাহ সতর্কতা’ (হিট ওয়ার্নিং)-এর আওতায় এসেছে। বিভিন্ন রাজ্যে ইতোমধ্যে শীতল কেন্দ্র (কুলিং সেন্টার) চালু করা হয়েছে। যাতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে সাধারণ মানুষ আশ্রয় নিতে পারেন। অনেক এলাকায় বিদ্যুৎচাপ বেড়ে যাওয়ায় লোডশেডিংয়ের আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে শিশু, বৃদ্ধ এবং দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতায় ভোগা মানুষ। হাসপাতালগুলোতে হিট স্ট্রোক, পানিশূন্যতা ও অন্যান্য গরম-জনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। কিছু রাজ্যে রাস্তাঘাট ফেটে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে, ট্রেন চলাচলে আরোপ করা হয়েছে গতি সীমা।

আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, এই তীব্র গরম আগামী ২৫ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। নাগরিকদের বারবার সতর্ক করা হচ্ছে পর্যাপ্ত পানি পান, দুপুরের রোদ এড়িয়ে চলা এবং প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না যেতে।
এই তাপপ্রবাহের পেছনে রয়েছে ‘হিট ডোম’ নামক জলবায়ুগত প্রক্রিয়া। যেখানে উচ্চচাপ বলয়ের কারণে উষ্ণ বায়ু নিচে চাপা পড়ে এবং উত্তাপ আটকে রেখে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করে।