নিউইয়র্ক সিটির ১১০তম মেয়র হিসেবে ২০২১ সালে অভাবনীয় জনপ্রিয়তা নিয়ে দায়িত্ব নেন এরিক অ্যাডামস। সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা ও ব্রুকলিন বরো প্রেসিডেন্ট হিসেবে অভিজ্ঞতা এবং অভিবাসনবান্ধব, জননিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক ভারসাম্যের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি জনগণের হৃদয়ে জায়গা করে নেন। বিশেষ করে ব্ল্যাক, ল্যাটিনো ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির কাছে ‘শান্তির প্রতিশ্রুতি’ হয়ে ওঠেন অ্যাডামস।
তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই আস্থার ভিত্তি নড়বড়ে হয়ে উঠেছে। ২০২৫ সালের জুলাইয়ে এসে নানা বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন তিনি। ঘুষ ও দুর্নীতির অভিযোগ, আশ্রয়প্রার্থী ইস্যুতে নীতির ইউটার্ন, সিটি কাউন্সিলকে পাশ কাটিয়ে একক সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং বিভিন্ন জনসেবামূলক খাতে বাজেট ছাঁটাই তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছে।
সবচেয়ে সমালোচিত হচ্ছে রিপাবলিকানদের, বিশেষ করে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি তার নরম অবস্থান। ডেমোক্র্যাটিক রাজনীতির ঘাঁটিতে দাঁড়িয়ে ট্রাম্পের সান্নিধ্য তাকে নিজের দলের মধ্যেও প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
জনগণের কণ্ঠস্বর হয়ে ওঠার যে প্রতিশ্রুতি নিয়ে অ্যাডামস মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন, আজ তা নিয়ে তৈরি হয়েছে গভীর সংশয়। নিউইয়র্কবাসীর অনেকেই এখন ভাবছেন—তাদের ‘নীলপোশাক মেয়র’ কি সত্যিই তাদের পক্ষে আছেন?
যে অভিযোগে অ্যাডামসের মাথাকাটা!
এরিক অ্যাডামসের বিরুদ্ধে ওঠা ঘুষ ও দুর্নীতির অভিযোগ তাকে ব্যক্তিগতভাবে এবং রাজনৈতিকভাবে ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে এমনটাই মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। ২০২৪ সালের শেষ দিকে অভিযোগ ওঠে, অ্যাডামস তার নির্বাচনী প্রচারণায় তুরস্কভিত্তিক কিছু প্রতিষ্ঠান থেকে অবৈধ অনুদান গ্রহণ করেছেন। অভিযোগ অনুযায়ী, এসব অনুদানের বিনিময়ে অ্যাডামস প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিছু প্রতিষ্ঠানকে সরকারি চুক্তি ও উন্নয়ন প্রকল্পে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়।
এই অভিযোগের পরপরই ডিসেম্বরে এফবিআই তদন্তে নামে। তারা অ্যাডামসের নির্বাচনী দপ্তর ও সংশ্লিষ্ট কিছু বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে তল্লাশি চালায় এবং তার ঘনিষ্ঠ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তদন্তে উঠে আসে, নগর প্রশাসনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বরাদ্দ এবং প্রকল্প অনুমোদনের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত ও প্রভাবশালী গোষ্ঠীর সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে।
অভিযোগে আরও বলা হয়, অ্যাডামস সরকারি নিয়োগ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণেও তার ঘনিষ্ঠদের প্রাধান্য দিয়েছেন এবং মুসলিম মালিকানাধীন কিছু নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে পক্ষপাতিত্ব করেছেন।
ট্রাম্পের সাথে যেভাবে সখ্যতা গড়ে ওঠে
নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামস এবং প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে রাজনৈতিক সখ্যতা গত কয়েক বছর ধরে ধীরে ধীরে গড়ে উঠেছে। যা নিউইয়র্কের রাজনীতিতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে।
২০২১ সালের নভেম্বরে এরিক অ্যাডামস নিউইয়র্ক সিটির মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হন। তিনি ডেমোক্র্যাটিক পার্টির শরণার্থী নিরাপত্তা নীতির প্রবক্তা হিসেবে পরিচিত ছিলেন এবং ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর ইমিগ্রেশন নীতির বিরোধিতা করতেন।
২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ে শহরে অপরাধের ঊর্ধ্বগতি ও নিরাপত্তার প্রশ্ন ওঠার পর, অ্যাডামস তার নিরাপত্তা নীতিতে পরিবর্তন আনেন। তিনি ফেডারেল ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়ানোর দিকনির্দেশ দেন এবং শরণার্থী শহর নীতিতে কিছু নমনীয়তা দেখান।
২০২৩ সালের মার্চে রাইকার্স আইল্যান্ড কারাগারে ফেডারেল ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের কার্যক্রমের অনুমোদন দেন অ্যাডামস। এই পদক্ষেপ ছিল ট্রাম্প প্রশাসনের ইমিগ্রেশন নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং এতে অপরাধ দমনে জোর দেওয়া হয়।
২০২৩ সালের শেষ ভাগে ট্রাম্প ও অ্যাডামসের মধ্যে ব্যক্তিগত যোগাযোগ শুরু হয়। ট্রাম্প প্রকাশ্যে অ্যাডামসের নিরাপত্তা নীতির প্রশংসা করেন এবং দুজনের মধ্যে রাজনৈতিক সমর্থনের সম্পর্ক দৃঢ় হয়।
২০২৪ সালের শুরুতে অ্যাডামস ট্রাম্পের ইমিগ্রেশন নীতির প্রতি স্পষ্ট সমর্থন জানান। তিনি স্থানীয় ও ফেডারেল আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় বাড়িয়ে অপরাধ মোকাবেলা ও নিরাপত্তা জোরদার করেন।
২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে অ্যাডামসের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে ফেডারেল মামলা ওঠে। যা পরে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আখ্যায়িত হয়ে বাতিল হয়। এই সময় ট্রাম্প অ্যাডামসের বিরুদ্ধে কোন সমালোচনা করেননি বরং তার কিছু নীতির প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছেন।
অ্যাডামসের বিরুদ্ধে বিদেশি অনুদান গ্রহণ এবং ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে মামলা দায়ের হয়। সেই মামলায় তদন্ত চলাকালীন সময়ে অ্যাডামসের রাজনীতি ও অবস্থান ব্যাপক পরিবর্তিত হতে থাকে। তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং এমনকি ট্রাম্পের ফ্লোরিডার রিসোর্টেও যান। নিউইয়র্কের নিজ শহরের বরাবরের মর্যাদাপূর্ণ মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ না নিয়ে ট্রাম্পের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্যও সমালোচনার মুখে পড়েন।
এই কূটনৈতিক সর্ম্পক ও রাজনৈতিক পালাবদলের পেছনে যে কারণে কাজ করেছে তা স্পষ্ট নয়। তবে অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন অ্যাডামস ট্রাম্পের কাছ থেকে ক্ষমা পাওয়ার জন্য নিজেকে প্রাসঙ্গিক রাখতে চেয়েছেন। ট্রাম্পও বারবার জানিয়েছেন, তিনি অ্যাডামসকে ক্ষমা দিতে পারেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ হঠাৎ করেই অ্যাডামসের বিরুদ্ধে মামলাটি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়। যা নিয়ে নিউইয়র্কের রাজনৈতিক এবং আইনি মহলে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়।
মামলায় জিতেও হেরে গেছেন আডামস
২০২৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ অ্যাডামসের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে দুর্নীতি ও ঘুষ গ্রহণের মামলা দায়ের করে। তবে মাত্র ১৫ দিনের মধ্যেই, ২০ ফেব্রুয়ারি মামলাটি বাতিলের নির্দেশ দেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমিল বোভে। তিনি যুক্তি দেন, এই মামলা অ্যাডামসের অপরাধ দমন ও অভিবাসন সংক্রান্ত কাজের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। মামলার হঠাৎ বাতিলের সিদ্ধান্তে হইচই পড়ে যায়।
মামলার নেতৃত্বে থাকা ড্যানিয়েল সাসুনসহ বিচার বিভাগের সাতজন কর্মকর্তা পদত্যাগ করেন। সাসুন অভিযোগ করেন, এটি একটি রাজনৈতিক সুবিধা বিনিময়। যার মাধ্যমে অ্যাডামস ট্রাম্প প্রশাসনের ইমিগ্রেশন নীতিতে সহযোগিতা করার বিনিময়ে মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন।
এই ঘটনার পর এপ্রিল মাসে ফেডারেল বিচারক ডেল হো মামলাটি স্থায়ীভাবে বাতিল করেন। তার রায়ে বলা হয়, মামলার পিছনে কোনো অপরাধমূলক উদ্দেশ্য পাওয়া যায়নি, কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাব ছিল স্পষ্ট। রায়টি নিউইয়র্ক ও জাতীয় রাজনীতিতে নতুন বিতর্কের জন্ম দেয়।
মেয়র অ্যাডামস মামলাটি বাতিল হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করলেও, তার বিরুদ্ধে জনমত বিভক্ত থেকে যায়। ডেমোক্র্যাটিক নেতা রেভারেন্ড আল শার্পটন বলেন, এই সিদ্ধান্ত অ্যাডামসকে রাজনৈতিক ব্ল্যাকমেইলের শিকার করেছে। সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো দাবি করেন, এই ঘটনায় অ্যাডামসের রাজনৈতিক অবস্থান দুর্বল হয়েছে।
অভিবাসীদের নিয়ে যেভাবে ভোল পাল্টালেন অ্যাডামস
মেয়র এরিক অ্যাডামস এক সময় নিজেকে অভিবাসীবান্ধব নীতির প্রবক্তা হিসেবে তুলে ধরেছিলেন। 'শরণার্থী শহর' ধারণার প্রবল সমর্থক হিসেবে তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন, নিউইয়র্ক হবে সকল অভিবাসীর জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায়, বিশেষ করে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তার রাজনৈতিক ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠার পর, অ্যাডামসের অভিবাসন-সংক্রান্ত অবস্থানে এক নাটকীয় পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
২০২১ সালে নির্বাচনী প্রচারণা চলাকালে অ্যাডামস বলেছিলেন, নিউইয়র্ক সবসময়ই অভিবাসীদের শহর। আমরা শরণার্থী ও অভিবাসী সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিন্তু ২০২৩ সালে শহরের অপরাধ বৃদ্ধির অজুহাতে তিনি রাইকার্স কারাগারে ফেডারেল ইমিগ্রেশন সংস্থা আইস'র কর্মকাণ্ড অনুমোদন করেন।
তার ভাষ্য ছিল, আমরা নিরাপদ আশ্রয় চাই, কিন্তু অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে। সেই থেকে তার অভিবাসন নীতি ধীরে ধীরে ট্রাম্প প্রশাসনের কৌশলের সঙ্গে মিল খুঁজে পেতে থাকে।
২০২৩ সালের শেষদিকে অ্যাডামস আইস কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে অভিবাসী সন্দেহে অনেককেই আটক করার প্রক্রিয়া শুরু করেন। এমনকি ২০২৫ সালের মে মাসে একটি ঘটনার পর ব্যাপক সমালোচনার মুখেও পড়েন। যেখানে এক তরুণ ভেনেজুয়েলান শিক্ষার্থীকে রাইকার্স থেকে গ্রেপ্তার করে আইস।
বিশ্লেষকদের মতে, অভিবাসন প্রশ্নে অ্যাডামসের ভোলবদল তাকে তার নিজ দলের অভ্যন্তর ও সাধারণ নাগরিকদের এক বড় অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে। নিউইয়র্কের মতো উদারপন্থী ও অভিবাসীবান্ধব শহরে এই অবস্থান তাকে রাজনৈতিকভাবে চরম মূল্য দিতে বাধ্য করতে পারে।
অ্যাডামস ক্রমাগত এমন সব সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন যা তাকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে উপস্থাপন করছে এবং শহরের জনসাধারণের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে।
মানবাধিকার লঙ্ঘন, ক্ষমতার অপব্যবহার, সামাজিক সেবায় বাজেট কাটছাঁট এবং 'শরণার্থী শহর' নীতির বিপরীত অবস্থান তাকে ক্রমাগত বিচ্ছিন্ন করে ফেলছে তার নিজ দলের সমর্থকদের থেকেই।
২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি রাইকার্স আইল্যান্ড কারাগারে ফেডারেল ইমিগ্রেশন সংস্থা আইস'র অফিস চালু করার অনুমোদন দেন। এই সিদ্ধান্ত নিউইয়র্ক সিটির দীর্ঘদিনের ‘সাংবিধানিক শরণার্থী নিরাপদ শহর’ নীতির পরিপন্থী। নাগরিক অধিকার সংগঠনগুলো একে অভিবাসনবিরোধী অবস্থান হিসেবে দেখছে এবং বলছে, এটি ট্রাম্পের ‘মাইগ্র্যান্ট ক্র্যাকডাউন’ অভিযানের সরাসরি প্রতিফলন।
এর আগে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে, সিটি কাউন্সিলের গৃহীত “সলিটারি কনফিনেন্ট নিষিদ্ধকরণের আইনকে নিজের নির্বাহী ক্ষমতা বলে বাতিল করে দেন অ্যাডামস, যদিও তা ২/৩ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় পাস হয়েছিল। ২০২৫ সালের জুনে, ম্যানহাটনের সুপ্রিম কোর্টের বিচারক জেফারী পারলম্যান রায় দেন , অ্যাডামস এই আইন ভঙ্গ করেছেন এবং সিটি কাউন্সিলের সাংবিধানিক ক্ষমতার প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করেছেন। আদালত আইনটিকে পুনরায় সক্রিয় করে এবং মেয়রের হস্তক্ষেপকে বেআইনি বলে ঘোষণা করে।
অন্যদিকে, ২০২৩ সালের শেষ থেকে ২০২৪ সালজুড়ে অ্যাডামস প্রশাসন শহরের বাজেট থেকে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ খাতে ব্যাপক পরিমাণ অর্থ ছাঁটাই করে। এর মধ্যে রয়েছে লাইব্রেরি, পাবলিক স্কুল, শিশু সহায়তা কর্মসূচি, গৃহহীনদের আশ্রয়কেন্দ্র এবং মানসিক স্বাস্থ্যসেবা। এই বাজেট কাটছাঁটের কারণে নিউইয়র্কের দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির পরিবারগুলো বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। ইউনিয়ন ও সামাজিক সংগঠনগুলো এই পদক্ষেপকে 'জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ' বলে আখ্যা দিয়েছে।
নাগরিক সমাজ আরও উদ্বেগ প্রকাশ করে যখন মে ২০২৫-এ, একটি ঘটনায় আইস কর্তৃক এক ২০ বছর বয়সী ভেনেজুয়েলিয়ান শিক্ষার্থী ডিলান লোপেজ কন্ট্রেরাসকে রাইকার্স থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। অ্যাডামস প্রথমে কোনো বক্তব্য না দিলেও, ব্যাপক সমালোচনার মুখে পরে নিজ অবস্থান সংশোধন করেন। এই দ্বৈত অবস্থানও তার রাজনৈতিক অবস্থানকে আরও অস্পষ্ট করে তোলে।
অ্যাডামসের বিরুদ্ধে একের পর এক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত, নির্বাহী ক্ষমতার অপব্যবহার এবং জনসেবায় অবহেলা এখন স্পষ্টতই তার জনপ্রিয়তা ও নেতৃত্বের গ্রহণযোগ্যতাকে টলিয়ে দিয়েছে।
ডেমোক্র্যাটিক পার্টির অভ্যন্তরে তিনি ক্রমাগত সমর্থন হারাচ্ছেন, আর প্রগতিশীল ও অভিবাসীবান্ধব জনগোষ্ঠীর কাছে তার বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। তিনি এখন ২০২৫ সালের নভেম্বরে আসন্ন মেয়র নির্বাচনে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প ঘেঁষা নীতি ও বিতর্কিত কার্যক্রমের কারণে অ্যাডামস নিজেই নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছেন নিউইয়র্কের মূল জনসম্পৃক্ততা থেকে। জনসাধারণের এই আস্থা হারানোই তার রাজনৈতিক ভবিষ্যতের সবচেয়ে বড় সংকেত হয়ে দাঁড়িয়েছে।