ট্রাম্পের জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলের আইনি লড়াই এখনো চলমান

ডেস্ক রিপোর্ট
  ২০ জুলাই ২০২৫, ১৩:৫৭

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ জানুয়ারি দেওয়া জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলের নির্দেশনা নিয়ে দীর্ঘদিনের আইনি যুদ্ধ এখনও অবসান ঘটে নি। আদেশটি যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের চতুর্দশ সংশোধনী সংক্রান্ত বিতর্কিত ব্যাখ্যার ওপর ভিত্তি করে জারি করা হয়েছিল। এতে জন্মকালে অনৈতিক বা সাময়িক অবৈধ অভিবাসী থাকলে তাদের সন্তানদের স্বয়ংক্রিয় নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
নির্দেশনার বিরুদ্ধে অভিবাসী অধিকারকর্মী, বিভিন্ন রাজ্য সরকার, শহর প্রশাসন এবং নাগরিকরা কয়েক ধাপে ফেডারেল আদালতে মামলা দায়ের করেন। প্রথমদিকে নিম্ন আদালতগুলো নির্দেশনাটিকে সারাদেশে নিষিদ্ধ করে স্থগিতাদেশ জারি করে। তবে এই ধরনের সারাদেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চতম আদালত ২০২৫ সালের জুনে একটি গুরুত্বপূর্ণ রায় দেয়।
উচ্চতম আদালতের রায়ে বলা হয়, নিম্ন আদালতগুলো সাধারণত সারাদেশে স্থগিতাদেশ জারি করার ক্ষমতা রাখে না, তবে শ্রেণি ভিত্তিক মামলায় জাতীয় পর্যায়ে স্থগিতাদেশ দেয়া যেতে পারে। অর্থাৎ, যারা আদেশের ফলে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তাদের শ্রেণি তৈরি করে তাদের পক্ষে আদেশ নিষিদ্ধ করা সম্ভব।
এই রায়ের পরেই ১০ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের একটি জেলা আদালত শ্রেণি ভিত্তিক মামলায় শিশুরা এবং তাদের অভিভাবকদের পক্ষে আদেশের বিরুদ্ধে একটি নতুন সারাদেশ স্থগিতাদেশ  জারি করেন। এতে করে ২০২৫ সালের ২৭ জুলাই আদেশ কার্যকর হওয়া স্থগিত থাকে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে ট্রাম্প প্রশাসনের ওই নির্দেশনাটি দেশব্যাপী কার্যকর হয়নি। বিচার বিভাগীয় এই বাধার কারণে আদেশের বাস্তবায়ন এখন স্থগিত এবং পুনরায় আপিল ও মামলার শুনানি চলবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলের নির্দেশনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সামাজিক ও আইনি দ্বন্দ্ব দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে। এর সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান এবং অভিবাসন নীতির মধ্যে সম্পর্কের জটিলতা রয়েছে। উচ্চতম আদালত যখন আদেশটির সংবিধানগত বৈধতা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিবে তখন পরিস্থিতি আরও স্পষ্ট হবে।
বর্তমানে এই নির্দেশনার বিরুদ্ধে চলমান মামলাগুলো নিম্ন আদালতে বিভিন্ন পর্যায়ে বিচারাধীন রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আদেশটি দেশের নাগরিকত্ব নীতি এবং অভিবাসন সংক্রান্ত অধিকারে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে।
এমন পরিস্থিতিতে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বিষয়ে ট্রাম্পের নির্দেশনার আইনি লড়াই এখনো সম্পূর্ণ শেষ হয়নি। দেশজুড়ে তা নিয়ে চলমান বিচারবিভাগীয় কার্যক্রম এবং রাজনৈতিক বিতর্ক আগামী মাসগুলোতে আরও তীব্র হয়ে উঠতে পারে।