গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যেসব স্টেট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছে, ইমিগ্রেশন এন্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইস) এজেন্টরা সরাসরি সেসব স্টেটের কারাগারগুলো থেকে অবৈধ অভিবাসীদের আটক করে ডিপোর্ট করতে পারে। অন্যদিকে ডেমোক্রেট স্টেটগুলো থেকে আইস এজেন্টরা কর্মক্ষেত্র, রাস্তা থেকে এবং বিভিন্ন স্থান ঘেরাও করে অভিবাসীদের যখন তখন গ্রেফতার করছে, যার তীব্র প্রতিবাদ হয়েছে বিভিন্ন স্থানে এবং লস অ্যাঞ্জেলেসে হাঙ্গামা বিরাটাকার ধারণ করেছিল। নাটকীয় বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে বিশেষভাবে ম্যাসাচ্যুসেটটসে, যেখানে আইস ৯৪ শতাংশ অভিবাসীকে গ্রেফতার করেছে, যার মধ্যে ৭৮ শতাংশেরই অপরাধ ঘটানোর কোনো রেকর্ড নেই। তা সত্বেও আইস তাদের আটক করতে কোনো বাছবিচার করেনি।
‘আইস’ এর তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী এ যাবত অভিবাসী গ্রেফতারের ক্ষেত্রে রিপাবলিকান স্টেটগুলোর কারাগার থেকে গ্রেফতার হয়েছে ৫৯ শতাংশ এবং ডেমোকেটিক স্টেটগুলোর সকল ক্ষেত্র থেকে গ্রেফতার হয়েছে ৭০ শতাংশ। ট্রাম্পের ইমিগ্রেশন প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলেছেন যে, অভিবাসীদের আটকের ক্ষেত্রে গৃহীত নীতিমালার অন্যতম হচ্ছে ডেমোক্রেটিক স্টেটগুলোর অভিবাসী স্যাঙ্কচ্যুয়ারি নীতি ভেঙে দেওয়া।
যদিও ওইসব স্টেটে স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো আইসকে অভিবাসী গ্রেফতারে সমর্থন ও সহযোগিতা করছে না, বরং আইস অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেফতারের আগেই স্থানীয় প্রশাসন তাদের মুক্তি দিচ্ছে, যাতে তারা আইসের হাতে ধরা না পড়ে। আমেরিকান আইনপ্রয়োগকারী অফিসার ও রাজনৈতিক ভাষ্যকার টমাস ডগলাস হোম্যান, যিনি আইস এর সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান ছিলেন এবং বর্তমানে ‘বর্ডার জার’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, গতমাসে তিনি বলেছেন, ‘স্যাঙ্কচ্যুয়ারি সিটিগুলো’ যা করতে চায় না, আমরা তাই করতে যাচ্ছি। সেসব সিটিতে অভিবাসী কমিউনিটির ওপর নজর রাখার জন্য আইস এর আরো এজেন্ট নিয়োগ করা হবে, কর্মক্ষেত্রে গ্রেফতার আরো বৃদ্ধি করা হবে। কেন করা হবে? কারণ তারা আমাদের একজন এজেন্টকেও কারাগার থেকে অপরাধীকে ধরার অনুমতি দেয় না।”
অভিবাসী অধিকার প্রবক্তারা দাবি করছেন যে কমিউনিটি থেকে অভিবাসীদের গ্রেফতার আইস কর্তৃক গৃহীত শাস্তিমূলক কৌশল ছাড়া আর কিছু নয়। এর ফলে বড় সিটিগুলোতে অভিবাসী কমিউনিটির মধ্যে দারুণ আতঙ্ক বিরাজ করছে, সাধারণভাবে জনজীবন ব্যাহত হচ্ছে, কাজের গতি মন্থর হয়ে গেছে। বোস্টন ভিত্তিক নন-প্রফিট সংস্থা ল’ইয়ারস ফর সিভিল রাইটস, যারা অভিবাসীদের পক্ষে ইমিগ্রেশন আদালতে প্রতিনিধিত্ব করেন, সেই সংস্থার এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর আইভান এসপিনোজা-মাদ্রিগাল ট্রাম্প প্রশাসনের ঢালাও অভিবাসী গ্রেফতার ও ডিপোর্টেশনকে ‘দায়িত্বহীন ও বেপরোয়া ডিপোর্টেশন মেশিন’ বলে বর্ণনা করেছেন।