ভেনেজুয়েলা থেকে আসা মাদকবাহী নৌকায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ১১

ডোনাল্ড ট্রাম্প
ডেস্ক রিপোর্ট
  ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০০:০৭

যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) ক্যারিবিয়ান সাগরে ভেনেজুয়েলা থেকে আসা একটি মাদকবাহী নৌকায় হামলা চালিয়ে ১১ জনকে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার প্রশাসন সম্প্রতি দক্ষিণ ক্যারিবিয়ানে যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করার পর এটিই প্রথম হামলা।
হোয়াইট হাউজে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা কিছুক্ষণ আগে একটি মাদকবাহী নৌকা ধ্বংস করেছি। এতে অনেক পরিমাণে মাদক ছিল। এবং এ রকম আরও অনেক আসছে। এগুলো ভেনেজুয়েলা থেকে এসেছে।’
ট্রাম্প পরে তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে একটি ভিডিও শেয়ার করেন, যাতে ড্রোন থেকে তোলা ফুটেজে একটি দ্রুতগামী নৌকা বিস্ফোরিত হয়ে আগুনে পুড়ে যেতে দেখা যায়।
তিনি আরও বলেন, ‘হামলায় ১১ সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। কোনো মার্কিন সেনা হতাহত হয়নি।’ ট্রাম্প জানান, নিহতরা ভেনেজুয়েলার কুখ্যাত গ্যাং ‘ট্রেন দে আরাগুয়া’-র সদস্য ছিল, যাদের যুক্তরাষ্ট্র ফেব্রুয়ারিতে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। তিনি দাবি করেন, এ গ্যাংটির পেছনে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো রয়েছেন—যা কারাকাস সরকার অস্বীকার করে আসছে।
ভেনেজুয়েলার যোগাযোগ মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।
এ ধরনের নৌকা সাধারণত আটক করা হয় ও ক্রুদের গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু এবার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো নৌকাটি ধ্বংস করা হয়েছে—যা সন্ত্রাসবাদ বিরোধী অভিযানের ধরণকে মনে করিয়ে দেয়, যেমনটি আল-কায়েদার বিরুদ্ধে দেখা গিয়েছিল।
পেন্টাগন এখনো হামলার বিস্তারিত তথ্য দেয়নি—নৌকাটিতে কী ধরনের মাদক ছিল বা পরিমাণ কত ছিল, তাও প্রকাশ করা হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি দক্ষিণ ক্যারিবিয়ানে ৭টি যুদ্ধজাহাজ এবং একটি পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েন করেছে। এতে রয়েছেন ৪,৫০০ জনের বেশি নৌসেনা ও মেরিন। জাহাজগুলোতে হেলিকপ্টার ও টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের সুবিধা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পি-এইট গোয়েন্দা বিমান এলাকায় টহল দিচ্ছে ও আন্তর্জাতিক জলসীমায় নজরদারি চালাচ্ছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানান, ‘এই মাদকসম্ভার সম্ভবত ত্রিনিদাদ বা আশপাশের কোনো ক্যারিবিয়ান দেশের উদ্দেশ্যে ছিল। প্রেসিডেন্ট মাদকচক্রের বিরুদ্ধে সরাসরি আক্রমণে যেতে বদ্ধপরিকর।’
ট্রাম্পের বক্তব্যে বারবার মাদুরোকে উল্লেখ করা হয়েছে, যা ভেনেজুয়েলায় আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে—তাদের মতে, আসল লক্ষ্য হতে পারে দেশটির সরকার।
গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র মাদুরোর তথ্য দিলে পুরস্কার দ্বিগুণ করে ৫০ মিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র দাবি করছে, তিনি মাদক ও অপরাধ চক্রের সঙ্গে জড়িত।
ভেনেজুয়েলার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘ট্রেন দে আরাগুয়া’ গ্যাং ২০২৩ সালে একটি কারাগারে অভিযান চালিয়ে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে।

সূত্র: রয়টার্স