চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন না মঞ্জুর 

চট্টগ্রাম আদালতে হামলা-সংঘর্ষ, আইনজীবী নিহত

চট্টগ্রাম সংবাদদাতা
  ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৮:৪৮

চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর অনুসারীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় এক আইনজীবী নিহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার বিকেলের দিকে এই ঘটনা ঘটে।
চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দিন চৌধুরী  বলেন, বিক্ষোভকারীরা এক আইনজীবীকে চেম্বারের নিচ থেকে ধরে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছেন।
নিহত আইনজীবীর নাম সাইফুল ইসলাম ওরফে আলিফ (৩৫)। তিনি সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি)। সাইফুল লোহাগাড়ার চুনতি এলাকার জামাল উদ্দিনের ছেলে। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
সংঘর্ষের ঘটনায় আহত অবস্থায় আরও আটজন চমেক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাঁরা হলেন শ্রীবাস দাশ, শারকু দাশ, ছোটন, সুজিত ঘোষ, উৎপল ও এনামুল হক। গুরুতর আহত হওয়া আরেকজনের নাম এখনো জানা যায়নি। অন্যদিকে জেনারেল হাসপাতালে আরও ১৯ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।


আজ বেলা সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন না মঞ্জুর করা হয়। পরে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়। তখন চিন্ময়ের অনুসারীরা প্রিজন ভ্যান আটকে দেয়। তারা এ সময় বিক্ষোভ শুরু করে।
তখন পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনী চেষ্টা করেও প্রিজন ভ্যান আদালত প্রাঙ্গণ থেকে বের করে কারাগারে নিতে পারেনি। পরে পৌনে বেলা তিনটার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাউন্ড গ্রেনেড, ক্যাঁদানে গ্যাসের (টিয়ার) শেল নিক্ষেপ এবং লাঠিচার্জ শুরু করলে বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। এর পর ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলতে থাকে। পরে চিন্ময় কৃষ্ণকে বহনকারী প্রিজন ভ্যান কারাগারের উদ্দেশে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ ও আইনজীবীদের সঙ্গে চিন্ময় অনুসারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়।
মো. হাসান নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী আইনজীবী বলেন, পুলিশ ও আইনজীবীদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের মধ্যে আইনজীবী আলিফকে বিক্ষোভকারীরা কোপায়। পরে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক নিবেদিতা ঘোষ জানান, আহত অবস্থায় সাত আটজনকে নিয়ে আসা হয়েছে। তাঁদের একজনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে।
জানতে চাইলে নগর পুলিশের উপকমিশনার লিয়াকত আলী বলেন, একজন মারা গেছে। তবে কীভাবে মারা গেছে এখনো জানি না।
সন্ধ্যা ৬টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আদালত এলাকায় আইনজীবীরা হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করছিলেন। আগামীকাল বুধবার কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন তাঁরা।