বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত বাণিজ্য ও ভিসা বন্ধ রাখলে দুর্ভিক্ষ ঠেকাতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি ৯০ শতাংশ। আমরাতো শুধু ইলিশ পাঠাই, তারা সবকিছুই পাঠায়। সুতরাং ভিসা এবং এলসি এসব যদি বন্ধ থাকে তাহলে ভারতের দুর্ভিক্ষ ঠেকানো সম্ভব না। মোদী এবং সোনিয়া গান্ধী সবাই বসে কপাল ঠোকাঠুকি করতে পারবে কিন্তু দুর্ভিক্ষ ঠেকাতে পারবে না। তারা ভারতের অর্থনীতিকে ঠেকাতে পারবে না।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। আলোচনা সভাটির আয়োজন করে মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম কেন্দ্রীয় কমিটি।
এসময় গয়েশ্বর বলেন, আমাদেরতো একটা ফরেন পলিসি আছে। আমরা বলেছি সব দেশের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব, কিন্তু কোনো প্রভুত্ব না। শুধু ভারতের সঙ্গে নয় পুরো বিশ্বের সঙ্গে আমাদের ফরেন পলিসি থাকতে হবে। ছোট-বড় দেশ বলে কোনো কথা নেই। প্রতিটা দেশই কারও না কারও ওপর নির্ভরশীল। যুক্তরাষ্ট্র এত বড় একটা দেশ তাদের অস্ত্র বানানো ছাড়া কোনো কারখানা নেই। কিন্তু তাদের পোশাকের জন্য বাংলাদেশ-ভিয়েতনামসহ বিভিন্ন দেশের ওপর নির্ভর করতে হয়। সুতরাং তারাও নির্ভরশীল কোনো না কোনো দেশের ওপর। সুতরাং ভারত যা করছে তারা নিজেদের পায়ে নিজেরা কুড়াল মারছে।
তিনি বলেন, ভারত যদি বাংলাদেশের মানুষের মনোভাব না বুঝে তাহলে ভারত বাংলাদেশের সম্পর্ক হবে মুখোমুখি। আজ তারা নেপালের সঙ্গে বন্ধুত্ব হারিয়েছে, মালদ্বীপের সঙ্গেও হারিয়েছে, এমনকি ভুটানের সঙ্গেও বন্ধুত্ব হারিয়েছে। পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক অনেক আগেই হারিয়েছে। এখন বাংলাদেশের সঙ্গে। তাদের ভাবতে হবে দক্ষিণ এশিয়ার ভেতর সবগুলো দেশের সঙ্গে সম্পর্কে হারিয়ে তারা কীভাবে চলবে। কোনো দেশই ভারতের সঙ্গে আপস করছে না। ভারতের অবস্থা বাঘ ও শিয়ালের গল্পের মত হয়ে গেছে।
গয়েশ্বর বলেন, সংস্কারের কোনো শেষ নেই। কিন্তু আসল কথা কেউ বলছে না। অর্থাৎ নির্বাচন নিয়ে সুদৃষ্ট কথা কেউ বলেন না। এখন দুনিয়ার সব পণ্ডিতরা একত্রিত হয়েছে, কিন্তু কেউই রাজনীতিক নয়। সব সময় সব দেশের রাজনৈতিক সমস্যার রাজনীতিকরাই সমাধান করেন।
তিনি বলেন, যারা অন্তর্বর্তী সরকার হয়েছে তারা যদি মনে করে তারাই সব তাহলে কীভাবে হবে। তাহলে জাতীয় এই ঐক্য ধরে রাখতে পারবে কতক্ষণ। জাতীয় ঐক্য তখনই হয় একটা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে তার মতামত প্রকাশের মাধ্যমে। ৬ তারিখের পর থেকে আমি অনেক কথা বলতাম, এখন দেখি আমার দলের লোকজন অনেক কথা বলে তাই আমি আর বলি না। তবে আবার যখন কোনো কিছু দেখবো তখন আবার বলবো। তবে সব কিছুরই শেষ আছে আর যার শেষ ভালো তার সব কিছুই ভালো।
প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সৈয়দ মোজাম্মেল হোসেন শাহিন। সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক মো. জহিরুল ইসলাম কলিম।