ঐক্যের প্রতীক হিসেবে মাঠে রয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

হাসনাত আবদুল্লাহ
ডেস্ক রিপোর্ট
  ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩:১৫

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কোনো ক্রিয়াশীল সংগঠন নয়। ফ্যাসিবাদবিরোধী যে শক্তিগুলো ছিল- ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ছাত্র অধিকার পরিষদসহ সবাইকে একত্রিত করার জন্য জাতীয় ঐক্যের প্রতীক হিসেবে মাঠে রয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
বুধবার (১১ নভেম্বর) ঢাকা কলেজের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ‌‘ঢাকা কলেজের অবদান’ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমাদের আওয়ামী লীগের জাহেলিয়াতের যুগ পার করতে হয়েছে। এখন আমরা স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারছি। কিন্তু কখনো ভাবতে হয়নি আমাদের বাসায় পুলিশ যাবে। আমরা অধিকাংশ সময় দেখি দেশের কিছু টকশোজীবীরা আহাজারি করে বলেন, ‘চারপাশে আমরা কি পেলাম? দেশ রসাতলে গিয়েছে! ক্ষোভ-কষ্ট তারা বর্ণনা করতে থাকে। কিন্তু গত ১৬ বছরে এ আহাজারি অন্যায়, গুম, খুন, নির্যাতনের বিরুদ্ধে টকশোতে প্রকাশ করতে দেখিনি। তরণ প্রজন্মের ক্রোধ রয়েছে যারা ফ্যাসিবাদের হয়ে লিখে গেছে। ক্ষোভ রয়েছে সেসব বিচারপতির বিরুদ্ধে যারা কলম দিয়ে ইনসাফের পরিবর্তে জুলুম লিখেছে।
আমাদের ক্রোধ রয়েছে সেসব শিক্ষকদের প্রতি যারা শান্তি সমাবেশে গিয়ে ফ্যাসিবাদের পক্ষে কথা বলেছে, যেসব আমলারা ফ্যাসিবাদ টিকিয়ে রাখতে ভ্যানগার্ড হিসেবে কাজ করেছে, যেসব ব্যবসায়ীরা ‘মাদার অব টেরর’ শেখ হাসিনার কাছে গিয়ে উন্নয়নের বাণী শুনিয়েছে, যে সব পুলিশ জনগণের টাকায় কেনা অস্ত্র তাক করেছে নিরস্ত্র জনগণের প্রতি- এসব দোসরদের প্রতি ক্রোধ রয়েছে তরুণ প্রজন্মের।
নিহত ও আহতদের পরিবারের প্রতি দায়বদ্ধতা নিয়ে হাসনাত বলেন, যেসব মায়েরা সন্তান হারিয়েছেন, যারা এতিম হয়েছে, ভাই-বোন হারিয়েছে, যারা বিধবা হয়েছে তাদের রক্ত শোকানের আগে স্বামীদের রাস্তার মধ্যে রক্ত দিতে হয়েছে, তাদের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। আমাদের ১৬ বছরের আঘাত কিছু বুদ্ধিজীবী-টকশোজীবী যাদের ভারত থেকে ফাইনান্স করা হয় তাদের কথা শুনে ভুলে গেলে চলবে না।
জুলাই আন্দোলনে ঢাকা কলেজের অবদান নিয়ে সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, জুলাই আন্দোলনে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা ছিলেন আমার সহযোদ্ধা। দেশের বিভিন্ন জায়গায় তাদের পাশে পেয়েছি। আন্দোলনের মধ্যেও ঢাকা কলেজের রাকিব ভাইয়ের সঙ্গে আমার যোগাযোগ ছিল। দেশের প্রত্যেক ক্লান্তিকালে ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের অনেক অবদান ছিল। আমাদের দেশে যখন সংকট এসেছে তখনই ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা রাজপথে নেমেছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সমন্বয়ক রুপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, ঢাকা কলেজ বাংলাদেশের ইতিহাসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এ গণঅভ্যুত্থানে ঢাকা কলেজের অবদান অনস্বীকার্য। ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানেও ঢাকা কলেজের ইতিহাস স্বর্ণাক্ষরে লেখা আছে। ২৪ শের গণঅভ্যুত্থানেও আমরা তা প্রত্যক্ষ করেছি। ঢাকা কলেজ ছাড়া আন্দোলন সফল করা সম্ভব হতো না। এ আন্দোলনে নারী-পুরুষ সবাই ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিল। যখন আমাদের ঢাবির হলগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়, তখন আমরা যে কয়েকটা প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরশীল হই তার মধ্যে ঢাকা কলেজ অন্যতম। আমাদের আন্দোলন চালানোর জন্য প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনেক বেশি বড় ভূমিকা পালন করে। তেমনি ঢাকা কলেজও প্রথম সারিতে থেকে ভূমিকা পালন করেছে। আমরা এমন এক দেশের স্বপ্ন দেখি যেখানে নিজেদের নতুন করে আবিষ্কার করবো, নতুন করে দেশ এবং সমাজের জন্য কাজ করবো।