ঢাকার কেরানীগঞ্জে রূপালী ব্যাংকের জিনজিরা শাখায় দিনে দুপুরে ঢুকে ডাকাতদল। এসময় তারা গ্রাহক ও কর্মকর্তাদের জিম্মি করে রাখে। এরপর খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দ্রুত সেখানে এসে ব্যাংকটি ঘিরে রাখে এবং আত্মসমর্পণের আহ্বান জানান। যৌথ বাহিনীর তৎপরতায় ৩ ডাকাত আত্মসমর্পণে বাধ্য হয়।
ব্যাংকে ঢুকে আটকা পড়ে টাকা ও সেফ এক্সিট দাবি করে ডাকাতরা
ব্যাংকের ম্যানেজার শেখর মন্ডল জানান, ঘটনার সময় তিনি ব্যাংকের বাইরে ছিলেন। ডাকাতদের সঙ্গে নেগোসিয়েট করার চেষ্টার কথা জানান তিনি।
ব্যাংকের জিএম ইসমাইল হোসেন শেখ বলেন, ‘ব্যাংকের ভেতরে ৩ জন ডাকাত অস্ত্রসহ ঢুকেছে। তারা আটকা পড়ার পর নিরাপদ প্রস্থান ও ১৫ লাখ টাকা দাবি করেছিল।
উদ্ধার হওয়া ৪ অস্ত্র আসল নয়, খেলনা পিস্তল
আটক তিন ডাকাত গ্রাহক সেজে ব্যাংকে প্রবেশ করেন। এরপর খেলনা পিস্তল ঠেকিয়ে ম্যানেজারকে জিম্মি করে টাকা আদায়ের চেষ্টা করেন তারা।
বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) রাত ৭টা ২০ মিনিটের দিকে ব্যাংক পরিদর্শন শেষে রূপালী ব্যাংকের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের জিএম মো. ইসমাইল হোসেন শেখ এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ব্যাংকের টাকা-পয়সা খোয়া যায়নি, জনগণের কোনো আমানতও খোয়া যায়নি। আগামী রোববার থেকে ব্যাংকের এই শাখায় আবার আগের মতো লেনদেন হবে।
মৃত্যুপথযাত্রী রোগীকে বাঁচাতে ব্যাংকে ডাকাতির চেষ্টা: এসপি
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে রূপালী ব্যাংকের জিনজিরা শাখায় যে তিনজন ডাকাতি করতে আসেন তাদের দুজন কিশোর ও একজন তরুণ বয়সী। ওই তিনজনের একজনের বয়স ২২, অন্য দুজনের বয়স ১৬। এরই মধ্যে তিনজনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
আটকরা বলছেন, মৃত্যুপথযাত্রী একজন রোগীকে (কিডনি সমস্যায় অসুস্থ) বাঁচাতে ব্যাংকে ডাকাতি করতে আসেন তারা।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) আহম্মদ মুঈদ।
তিনি বলেন, ‘ডাকাতরা মুভি দেখে এমন একটি অ্যাডভেঞ্চার হিসেবে ডাকাতি করতে আসেন বলে আমাদের কাছে মনে হয়েছে। যদিও তারা আমাদের কাছে বলেছেন, মৃত্যুপথযাত্রী একজন কিডনি রোগীকে বাঁচাতে ব্যাংকে ডাকাতি করতে আসেন তারা।’
‘তবে তারা যে রোগীর ঠিকানা দিয়েছেন সেটি যাচাই-বাছাই চলছে। আদৌ সত্য কি না তা পুলিশ খতিয়ে দেখছে।’
ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘তাদের অপরাধী বলা যায় না। তারা হয়তো মিস গাউডেড। তারা অ্যাডভেঞ্চার হিসেবে হয়তো এই ডাকাতি করতে আসেন। মুভি দেখে এমন একটি অ্যাডভেঞ্চার হিসেবে ডাকাতি করতে এসেছিলেন বলে আমাদের কাছে মনে হয়েছে।’
অভিযানের বিষয়ে এসপি আহম্মদ মুঈদ বলেন, ‘ঘটনার শুরু থেকেই আইজিপি স্যার লাইভে এসে আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি আমাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন কোনো হতাহতের ঘটনা ছাড়া যেন অভিযান শেষ হয়। এ জন্য ডাকাতদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ ধরে কথা বলেছি। ডাকাতদের আইজিপি স্যারের সঙ্গেও কথা বলিয়ে দেওয়া হয়েছিল।’
আটক তিন ডাকাত ছাড়া বাইরে তাদের কোনো সদস্য ছিল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তাদের তিনজন ছাড়া বাইরে কেউ ছিল না। তবে তারা প্রাথমিকভাবে আমাদের বলেছিলেন বাইরে তাদের লোক আছে। তারা পুলিশকে ভয় দেখানোর জন্য বলেছিলেন তাদের আরও লোক আছে।’
এর আগে, দুপুর ২টার দিকে ডাকাতরা ব্যাংকে ঢোকেন। এ সময় পাশের মসজিদের মাইক থেকে ডাকাত পড়ার কথা জানানো হলে আশপাশের কয়েকশ লোক ব্যাংকের ওই শাখাটি ঘেরাও করেন।