পুরোনো গ্লানি, হতাশা আর মলিনতাকে পেছনে ফেলে নতুন উদ্যমে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশায় এবার রমনার বটমূল রঙিন হয়ে উঠেছে আনন্দ বারতা নিয়ে। মহামারির ভয় ছাপিয়ে, সাম্প্রদায়িকতার চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে আনন্দযজ্ঞে শামিল হয়েছেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।
বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) সূর্য উদয়ের সাথে সাথে যন্ত্রবাদনের মধ্য দিয়ে রমনার বটমূলে সূচনা হয় ছায়ানটের বর্ষবরণ ১৪২৯ এর অনুষ্ঠান। এর পরপরই পরিবেশন করা হয়েছে রবীন্দ্রসংগীত মন, ‘মন, জাগো মঙ্গল লোকে’।
সকালে রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এ আয়োজনে যোগ দিতে ছুটে আসে মানুষ। লাল-সাদা শাড়ি আর পাঞ্জাবি-ফতুয়া পড়ে আসেন বিভিন্ন বয়সের মানুষ। হাতে ছিল ফুল, মাথায় ফুলের টায়রা, গালে বৈশাখী আলপনা।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, রমনা বটমূলের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান আমাদের জাতীয় সংস্কৃতির অন্যতম ও অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ। আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্যের সাথে রমনা বটমূলের এই সাংস্কৃতিক মিশেল আমাদের পরিতৃপ্ত করে। বাঙালি সংস্কৃতিকে ধারণ করেই সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যরিস্টার ফজলে নূর তাপস বলেন, আমরা রমনা বটমূলে সমবেত হয়েছি। বর্ষবরণ অনুষ্ঠান আমাদের জাতীয় সংস্কৃতির অন্যতম ও অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ। দুই বছর বিরতির পর আবারও এই আয়োজন শুরু হয়েছে বলে খুব ভালো লাগছে। এ ধরনের আয়োজনকে আরও উচ্ছ্বসিত করতে হবে। নতুন প্রজন্মের মাঝে বিস্তৃত পরিসরে ছড়িয়ে দিতে হবে। তাহলেই বাঙালি সংস্কৃতির পূর্ণতার পরিসরও বহুমাত্রায় উদ্ভাসিত হবে।
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মফিদুল হক বলেন, হৃদয়ে বাংলা নববর্ষকে ধারণ করে মানবিক সমাজ গঠনে আমাদের প্রাণিত করে বাংলা নববর্ষ। অর্ধশতাধিক বছর ধরে সুর ও বাণীর আবহে রমনার বটমূলে আয়োজিত হচ্ছে বাঙালির মিলন মেলা। করোনা মহামারিতে দুই বছর বন্দি ছিলাম। দুঃসময় কাটিয়ে এ বছর নব আনন্দে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে।
এবার ছায়ানটের বর্ষবরণের এ অনুষ্ঠান সাজানো হয় ৩৭টি সঙ্গীত আয়োজন দিয়ে। এর মধ্যে পঞ্চকবির গান, ব্রতচারীদের বাংলা ভূমির প্রেমে আমার প্রাণ হইল পাগল, লোকগান নাও ছাইড়া দে মাঝি, পাল উড়াইয়া দে সহ বিভিন্ন গান দিয়ে।