যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের প্রতি আবারও তীব্র সমালোচনা ছুঁড়ে দিয়েছেন। এ নিয়ে সোমবার (২১ এপ্রিল) শেয়ারবাজারে ব্যাপক পতন দেখা গেছে। ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে ফেডকে অবিলম্বে সুদের হার কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন এবং চেয়ারম্যান পাওয়েলের নীতিমালাকে ‘অতিরিক্ত সতর্ক’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
‘ডাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ’ ১ হাজার ৫০ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৬ শতাংশ, এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ২ দশমিক ৭ শতাংশ এবং প্রযুক্তিনির্ভর ন্যাসডাক ৩ শতাংশ হারে পতিত হয়েছে।
গত সপ্তাহেই জেরোম পাওয়েল ট্রাম্পের শুল্ক নীতিকে ঘিরে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘এটি মূল্যস্ফীতি বাড়িয়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে মন্থর করে দিতে পারে।’
তিনি ইঙ্গিত দেন, ফেড ভবিষ্যতে সুদের হারে সংযমী অবস্থান নেবে।
সোমবারের পোস্টে ট্রাম্প ফেড চেয়ারম্যানকে ব্যঙ্গ করে (মিস্টার টু লেট) বলে অভিহিত করেন এবং বলেন, ‘অর্থনীতি মন্দার দিকে যাচ্ছে যদি না (মিস্টার টু লেট) একজন বড় ধরনের ব্যর্থ ব্যক্তি অবিলম্বে সুদের হার কমান।’
তিনি আরও দাবি করেন, গত বছর ফেডের সুদের হার কমানোর পদক্ষেপ ছিল ‘স্লিপি জো বাইডেন, পরে কামালাকে জেতাতে সাহায্য করার জন্য,’ যদিও তার এই দাবির পক্ষে কোন প্রমাণ দেননি।
প্রসঙ্গত, ‘ফেডারেল রিজার্ভ’ একটি স্বাধীন সরকারি সংস্থা, যেটি ‘কংগ্রেসের’ মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত। ২০১৮ সালে চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকেই ‘জেরোম পাওয়েল’ ফেডের রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা বজায় রাখার অঙ্গীকার করে আসছেন।
গত নভেম্বরে ট্রাম্প পুনর্নির্বাচিত হওয়ার পর এক প্রশ্নের জবাবে পাওয়েল সাফ জানান, প্রেসিডেন্ট চাইলে তিনি পদত্যাগ করবেন না। সাংবাদিক সম্মেলনে এক শব্দে তিনি বলেন, ‘না।’
যখন জানতে চাওয়া হয়, প্রেসিডেন্ট কি তাঁকে বরখাস্ত বা পদাবনতি দিতে পারেন, তিনি বলেন, ‘আইন অনুযায়ী সেটি অনুমোদিত নয়।’
জেরোম পাওয়েল সম্প্রতি ‘স্ট্যাগফ্লেশন’-এর আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন- যা এমন এক অবস্থা যেখানে মূল্যস্ফীতি বাড়ে এবং অর্থনৈতিক গতি মন্থর হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিস্থিতিতে ফেড যদি সুদের হার বাড়ায়, তাহলে ঋণ গ্রহণ ব্যয়বহুল হয়ে পড়ে এবং অর্থনৈতিক গতি আরও কমে যেতে পারে। আবার, যদি সুদের হার কমানো হয়, তবে তা অতিরিক্ত ব্যয় ও মূল্যস্ফীতিকে উসকে দিতে পারে।
প্রেসিডেন্ট ও ফেডের মধ্যে চলমান টানাপোড়েন মার্কিন অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা বাড়াচ্ছে। রাজনীতির প্রভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতা ও বাজারের স্থিতিশীলতা-উভয়ই বর্তমানে চ্যালেঞ্জের মুখে।