যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টে সোমবার (২১ এপ্রিল) গুরুত্বপূর্ণ এক মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে ওবামাকেয়ারের অধীনে পাওয়া নিঃশুল্ক প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যসেবার বৈধতা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। ২০১০ সাল থেকে (অ্যাফোর্ডেবল কেয়ার অ্যাক্ট) এসিএ-অনুযায়ী লক্ষ লক্ষ আমেরিকান নাগরিক হৃদরোগ, ক্যানসার এবং এইচআইভি প্রতিরোধে বিভিন্ন চিকিৎসা সেবা বিনামূল্যে পেয়ে আসছিলেন। তবে এবার সেই সুবিধা ঝুঁকির মুখে পড়েছে।
বিতর্কের কেন্দ্র বিন্দুতে রয়েছে (ইউএস প্রিভেন্টিভ সার্ভিসেস টাস্ক ফোর্স) নামের একটি সরকারি বিশেষজ্ঞ দল। এই ১৬ সদস্যের টাস্কফোর্সের সুপারিশ অনুযায়ী, যেসব প্রতিরোধমূলক সেবাকে বীমা সংস্থাগুলো বিনামূল্যে কভার করে থাকে, তার মধ্যে রয়েছে- কোলেস্টেরল কমানোর জন্য স্ট্যাটিন (স্ট্যাটিন), ৪৫-৪৯ বছর বয়সীদের জন্য কোলোনোস্কোপি, এইচআইভি প্রতিরোধে (প্রেপ) ওষুধ, স্তন ক্যানসার প্রতিরোধে ওষুধ, ধূমপায়ীদের জন্য ফুসফুসের ক্যানসার স্ক্রিনিং (লাং ক্যানসার স্ক্রিনিং)।
তবে কিছু নিয়োগকর্তা ও ব্যক্তিগত গ্রুপ এই টাস্কফোর্সের গঠন ও ক্ষমতা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন। তারা বলছেন, ‘এই সংস্থা সাংবিধানিকভাবে বৈধ নয়, কারণ তাদের সদস্যরা সিনেট (সিনেট) কর্তৃক অনুমোদিত নন এবং তাদের সুপারিশগুলো পর্যালোচনা বা বাতিল করার কোনো সুযোগ নেই।
মামলার নাম (কেনেডি ভার্সাস ব্রেইডউড ম্যানেজমেন্ট), যেখানে বাদী পক্ষের দাবি- এই টাস্কফোর্সের কার্যক্রম (অ্যাপয়েন্টমেন্টস ক্লজ) লঙ্ঘন করে। যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চম সার্কিট কোর্ট (ফিফথ সার্কিট কোর্ট) ইতিমধ্যে টাস্কফোর্সকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছে।
এই মামলার প্রভাব ব্যাপক হতে পারে। প্রায় ১৫ কোটি মার্কিন নাগরিক এই নিঃশুল্ক চিকিৎসা সুবিধার উপর নির্ভর করে থাকেন। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, টাস্কফোর্সের সুপারিশ বাতিল হলে বহু মানুষ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হবেন এবং এটি দেশের জনস্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বীমা বাজারে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে।
সুপ্রিম কোর্টে সোমবার মামলার মৌখিক শুনানি শুরু হয়েছে। রায় ঘোষণা করা হবে আগামী জুনের মধ্যে। এই রায়ের মধ্য দিয়ে নির্ধারিত হবে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যসেবার ভবিষ্যৎ কোন পথে এগোবে।