কক্সবাজারের টেকনাফে একটি বাড়ি থেকে কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর যৌথ অভিযানে জব্দ করা ৩০ লাখ টাকা ও ১৭ ভরি স্বর্ণালংকার মামলার এজাহারে উল্লেখ না করায় মামলার বাদী কোস্টগার্ড সদস্য কায়সার আহমেদকে তলব করেছে আদালত।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বিকেলে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আখতার জাবেদ এ আদেশ দেন। আদেশে বলা হয়, মামলার বাদী কোস্টগার্ড সদস্য কায়সার আহমেদকে আগামী ১৩ এপ্রিল সকাল ১১টায় আদালতে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে হবে। অন্যথায় তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে সতর্ক করা হয়েছে।
কক্সবাজার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আশেক ইলাহী শাহজাহান নুরী জানান, আদালতের আদেশের কপি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার আগে টেকনাফ কোস্টগার্ড স্টেশনে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত গত ৩ এপ্রিল। ওই দিন টেকনাফ উপজেলার হ্নীলার আলীখালী এলাকায় কুখ্যাত ডাকাত মো. হারুনের বাড়িতে কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর যৌথ অভিযান চালায়। অভিযানে একটি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, ছয়টি তাজা গুলি, পাঁচটি দেশীয় ধারালো অস্ত্র, ১৭ ভরি স্বর্ণালংকার, ৩০ লাখ ৩৮ হাজার ৪০০ টাকা, দুটি ব্যাংকের চেক বই, ১০টি সিম কার্ড এবং মিয়ানমারের ১৯টি রোহিঙ্গা পরিচয়পত্র উদ্ধার করা হয়।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন জানান, ওই ঘটনায় কোস্টগার্ড সদস্য কায়সার আহমেদ বাদী হয়ে হারুন ডাকাতের বিরুদ্ধে অবৈধ অস্ত্র ও গুলি রাখার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। তবে মামলার এজাহার এবং সংযুক্ত জব্দ তালিকায় জব্দকৃত অর্থ ও স্বর্ণালংকারের কোনো উল্লেখ নেই।
বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে আদালত তা আমলে নিয়ে পর্যালোচনা করে বলেন, মামলার ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আলামতের ছবি থাকা সত্ত্বেও জব্দকৃত টাকা ও স্বর্ণালংকারের তথ্য গোপন রাখা হয়েছে। এতে আদালতের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে, বাদী কোস্টগার্ড সদস্য কায়সার আহমেদ অসৎ উদ্দেশ্যে এসব মালামাল নিজের আয়ত্তে রেখেছেন।
এ বিষয়ে কোস্টগার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লে. কমান্ডার সিয়াম-উল-হক বলেন, অনিবার্য কারণে জব্দকৃত টাকা ও স্বর্ণালংকার শুল্ক গুদামে জমা দিতে দেরি হয়েছে। তবে ৭ এপ্রিল বিকেলে তা টেকনাফ শুল্ক গুদামে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আদালতের আদেশ ও এই ঘটনার তথ্য ফাঁস হওয়ার পর কক্সবাজার, টেকনাফ ও উখিয়া এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা এ ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত ও দায়ীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।