জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপ নিয়ে সালাহউদ্দিন

স্প্রেডশিটের মাধ্যমে বিভ্রান্ত করা হয়েছে 

ডেস্ক রিপোর্ট
  ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৪:০৪

বিএনপি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দফাওয়ারি আলোচনা করছে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দীন আহমেদ। তিনি বলেন, 'স্প্রেডশিটে সংক্ষিপ্ত হ্যাঁ/না জবাব দেওয়ার জন্য যে কাগজগুলো দিল তাতে করে অনেকটা বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।' বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপের বিরতিতে এ দাবি করেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, স্প্রেডশিট দিয়ে আমাদের ওনারা বিভ্রান্ত করেছেন।এটা দেওয়া উচিত হয়নি।
বিএনপি সংবিধান, বিচার বিভাগ, প্রশাসন, নির্বাচন নিয়ে বিস্তারিত মতামত জমা দিয়েছে বলে জানান সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, 'আজকে হার্ড কপি জমা দিয়েছি। এগুলোর ওপরে বিস্তারিত আলোচনা চলছে।
সংবিধান সংস্কার দিয়ে শুরু করেছি। তারপরে বিচার বিভাগ, নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হবে। তারপরে আলোচনা চলমান রাখতে চাই, আজকে শেষ না হলে পরেও আলোচনা হবে। আমরা বুঝাতে চাই বিএনপি সংস্কারের বিষয়ে কতটা সিরিয়াস।
সংবিধান সংস্কার কমিশনের বিস্তারিত প্রতিবেদনে ১৩১ টি প্রস্তাব থাকলেও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের স্প্রেডশিটে ৭০টি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে মন্তব্য করে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, 'আমাদের দফাওয়ারি আলোচনা চলছে। সংবিধানের প্রস্তাবনা হতে শুরু করে প্রজাতন্ত্র, রাষ্ট্রের মূলনীতিসহ সব বিষয়ে দফায় দফায় আলোচনা করব। বিস্তারিত অগ্রগতি পরে জানতে পারবেন। সংবিধান সংশোধন সংক্রান্ত মৌলিক প্রস্তাবের বিষয়ে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে চেষ্টা করব এক জায়গায় ঐকমত্যে আসার জন্য। বিএনপি সংবিধান সংস্কার কমিশনের ২৫ টি প্রস্তাবে একমত, ২৫ টির মতো বিষয়ে আংশিকভাবে একমত।
বাকী বিষয়গুলোতে একমত হতে পারিনি।
তিনি বলেন, 'আমরা যে সমস্ত বিষয়ে বিস্তারিত মতামত দিয়েছি, সে বিষয়ে কমিশনকে যৌক্তিকভাবে বুঝাব এবং তাদের প্রস্তাবের বিষয়েও আমরা যৌক্তিকভাবে জানতে চাচ্ছি। যেটা যৌক্তিক, সেটা জাতির কল্যাণের দিকে লক্ষ্য রেখে আমরা অবশ্যই বিবেচনা করব।'
বিচারবিভাগের মতামত নিয়ে প্রতিবেদনে মিস লিড করা হয়েছে দাবি করে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, 'বিস্তারিত প্রতিবেদনের ১৫০টি মতামতের মধ্যে ৮৯টির বিষয়ে মতামত দিয়েছি, বাকীগুলোর অধিকাংশক্ষেত্রে একমত হওয়া বা মন্তব্যসহ একমত হওয়ার কথা জানিয়েছি।'
হ্যাঁ/ না তে মতামত চাওয়া বিষয়ের বিস্তারিত প্রতিবেদনের বিস্তর ফারাক আছে জানিয়ে তিনি দাবি করেন, 'সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদের সংশোধনী ব্যতিরেখে বিচারক নিয়োগের অধ্যাদেশ জারি করা ততক্ষণ পর্যন্ত অসাংবিধানিক হবে যতক্ষণ পর্যন্ত তা সংবিধানে গৃহীত হচ্ছে। ১১৬ অনুচ্ছেদ সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠা করা সংবিধান সম্মত হবে তা নিয়ে প্রশ্ন রইবে। বিচার বিভাগ কর্তৃক সংবিধান লঙ্ঘণ সমুচিত হবে না।' 
বিএনপি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা চায় জানিয়ে তিনি বলেন, 'প্রক্রিয়া যাতে আইনানুগ ও সাংবিধানিক পদ্ধতিতে হয়, সেই জন্য মতামত বিস্তারিত দেব। লিখিতও দিয়েছি।'
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের অধিকাংশ সংবিধান সংশোধন সংক্রান্ত দাবি করে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, 'কিছু কিছু বিষয়ে তারা এমন প্রস্তাব দিয়েছে, যা বাস্তবায়ন করলে নির্বাচন কমিশনের স্বাধীন সত্তা বজায় থাকবে না।
বিএনপির সঙ্গে কমিশনের আলোচনা দ্বিতীয় পর্যায়ের জানিয়ে তিনি বলেন, প্রয়োজনে আরো আলোচনা হবে। কারণ আমরা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আগাচ্ছি।'
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় সংলাপে আরো উপস্থিত আছেন, কমিশনের সদস্য জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান।
বিএনপির প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। এ ছাড়া আরো আছেন, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাঈল জবিউল্লাহ, রুহুল কুদ্দুস কাজল ও মনিরুজ্জামান খান।