ঐকমত্যের বাইরে সংস্কারের প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, রাজনৈতিক ঐকমত্যের বাইরে কোনো ধরনের সংস্কার সম্ভব নয় এবং এ ধরনের সংস্কারের প্রয়োজনে নির্বাচন ব্যবস্থার মাধ্যমে এগিয়ে যেতে হবে।
রোববার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে দলের চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে বিএনপির মিত্রদল বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব বলেন।
আমীর খসরু বলেন, বাংলাদেশে আমরা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছি না। সবাইকে একমত হতে হবে, এই ধরনের চিন্তা বাকশালী চিন্তা। বিভিন্ন দলের ভিন্ন দর্শন এবং মতামত থাকবে, সেটি মাথায় রেখেই চলতে হবে।
তিনি আরও বলেন, যেখানে ঐকমত্য হয়েছে, সেখানেই সংস্কার সম্ভব। তবে ঐকমত্যের বাইরে গেলে তা অবশ্যই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আসতে হবে। নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়েই এগোতে হবে।
বিএনপির এ জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য সৃষ্টি হলেও এ বিষয়ে কেন জনগণের কাছে বিস্তারিত তুলে ধরা হচ্ছে না, এটাই প্রশ্ন। সব রাজনৈতিক দল এরই মধ্যে তাদের মতামত জমা দিয়েছে, সময় পেরিয়ে গেছে, আলোচনা শেষ হয়েছে। এখন জাতিকে জানানো প্রয়োজন, কোথায় ঐকমত্য হয়েছে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, নির্বাচনের রোডম্যাপ না দেওয়ার কারণে জনগণের মধ্যে সংশয় এবং উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, যা আগামী নির্বাচনের জন্য ভালো কোনো ফল বয়ে আনবে না। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রোডম্যাপ প্রকাশ করে জনগণকে আশ্বস্ত করতে হবে যে, গণতন্ত্রের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
বিএনপির এ নেতা বলেন, এখন দেশের ভেতরে এবং বাইরে প্রস্তুতি রয়েছে এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও প্রশ্ন করছেন, নির্বাচন কবে হবে?
এদিন বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে বিজেপি চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ তার দলের মতামত তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ভিন্ন মতামত থাকতে পারে, তবে যেগুলোতে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো নিয়ে নির্বাচনের পথে এগিয়ে যাওয়া উচিত। নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া বা ঘোলাটে পরিবেশ তৈরি করা উচিত নয়।
তিনি বলেন, ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন সম্ভব। আর এজন্য নির্বাচনী রোডম্যাপ এখন জনগণের একদম দাবিতে পরিণত হয়েছে। তাই এ সরকারের উচিত দ্রুত রোডম্যাপ ঘোষণা করা।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলুসহ বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির অন্য সদস্যরা। বিজেপি নেতাদের মধ্যে আন্দালিব রহমান পার্থসহ ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদল বৈঠকে অংশ নেন।
গত ১৭ এপ্রিল থেকে বিএনপি তার শরিক এবং মিত্রদের সঙ্গে পরবর্তী কার্যক্রম ঠিক করতে ধারাবাহিক বৈঠক করছে।