সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে অবিলম্বে গ্রেফতার ও বিচারের মুখোমুখি করা এবং ফ্যাসিবাদের দোসর বিচারকদের অপসারণ দাবিতে আগামী ২৯ এপ্রিল সারাদেশে বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম।
রোববার (২৭ এপ্রিল) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দক্ষিণ হলে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব ও বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল এই ঘোষণা দেন।
ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, দাবির সপক্ষে সারাদেশের আইনজীবীদের ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। প্রাথমিক কর্মসূচি হিসেবে আগামী মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সারাদেশের সব জেলা বারে আইনজীবীদের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি পালিত হবে। দাবি পূরণ না হলে পরে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বাংলাদেশের বিচার বিভাগ ও গণতন্ত্র ধ্বংসের মূল কারিগর, সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক। অজ্ঞাত কারণে অদ্যাবধি তাকে গ্রেফতার বা বিচারের মুখোমুখি করা হয়নি। অথচ তার বিচার বাংলাদেশের জনগণের গণদাবি। এক্ষেত্রে আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনো উদ্যোগই এখন পর্যন্ত নেয়নি।
এ সময় জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ বিএনপির সিনিয়র নেতাদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণাকারী বিচারপতিও বহাল তবিয়তে রয়েছেন। অথচ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করাটা ছিল তাদের প্রত্যেকের সাংবিধানিক অধিকার। আওয়ামী লীগকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচনী বৈতরণী পার করানোই ছিল এসব বিচারপতির মূল উদ্দেশ্য।
তিনি বলেন, পৃথিবীর সব সভ্য দেশে কোনো নাগরিকেরই বাকস্বাধীনতা হরণ করা হয় না। অথচ এই সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের একাধিক বিচারপতি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের যে কোনো ধরনের বক্তব্য মিডিয়ায় প্রচারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন।
জয়নুল আবেদীন আরও বলেন, একজন বিচারপতি কতটা নির্লজ্জ না হলে আদালতের এজলাসে নিজে একটি দলের প্রধানের প্রতিকৃতি স্থাপন করে তা সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ করেছিলেন। অতীতে সুপ্রিম কোর্টের এজলাস ভাঙচুর, প্রধান বিচারপতির দরজায় লাথি মেরেছে- এমন নির্লজ্জ দলীয় ক্যাডাররাও বিচারপতি হিসেবে বহাল রয়েছেন।
তিনি বলেন, আমাদের ভাবতে অবাক লাগে, দেশের জনপ্রিয় রাষ্ট্রপ্রধান এবং স্বাধীনতার মহান ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে ‘ডাকাত দলের প্রধান’ হিসেবে আখ্যাদানকারী বিচারপতিও বিচারকর্মে এখনো নিযুক্ত রয়েছেন।
বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, আইনের শাসন ও মানবাধিকার রক্ষায় অবিলম্বে উচ্চ আদালত এবং নিম্ন আদালতে ফ্যাসিবাদের দোসর ও চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ ও দলবাজ বিচারকদের অপসারণের দাবি জানান জয়নুল আবেদীন।
ব্যারিস্টার কায়সার কামালের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও গাজী কামরুল ইসলাম সজলসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।