দেশের ১৮ কোটি মানুষ আওয়ামী লীগকে দেখতে চায় না

মির্জা ফখরুল
ডেস্ক রিপোর্ট
  ১০ মে ২০২৫, ২৩:২৬

দেশের ১৮ কোটি মানুষ আওয়ামী লীগকে দেখতে চায় না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার (১০ মে) বিকেলে চট্টগ্রাম মহানগরীর পলোগ্রাউন্ড ময়দানে আয়োজিত তারুণ্যের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।যৌথভাবে এ সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপির তিন অঙ্গসংগঠন— যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল চট্টগ্রাম এবং কুমিল্লা বিভাগ।
জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এস এম জিলানীর সভাপতিত্বে সমাবেশে সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর ফ্যাসিস্ট হাসিনা আমাদের গোটা জাতির ওপর নির্যাতন চালিয়েছিল। হাজার হাজার তরুণ প্রাণ দিয়েছে। ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। ২০ হাজারের মতো মানুষকে হত্যা করেছে। ১৭০০ ওপর মানুষকে গুম করেছে। আমাদের দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে ৬ বছর কারাগারে অন্তরীণ করে রেখেছিল। আমাদের তরুণ নেতা, যার দিকে আজ সারাদেশ তাকিয়ে আছে, সেই নেতা তারেক রহমান সাহেব এখনো দেশে ফিরতে পারেননি। এ অবস্থার অবসান হয়েছে শুধু আমাদের তরুণ ভাইদের জন্য।
তিনি বলেন, আমরা একটি কঠিন সময় পার করছি, আমরা একটা অস্বাভাবিক সময় অতিক্রম করছি। কারণ হাসিনা পালিয়েছে, তার প্রেতাত্মারা এখনো আছে। তারা এখনো ষড়যন্ত্র করছে, বাংলাদেশে আবার তাদের রাজস্ব প্রতিষ্ঠিত করবার। আমাদের তরুণদের সামনে তাদের এ চক্রান্ত সফল হবে না। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের। আমরা যাদের দায়িত্ব দিয়েছি, আমাদের এ দেশকে একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যেতে, তারা সঠিকভাবে সেই কাজ করতে পারছেন না। ফলে মাঝে মধ্যে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ সমাবেশ যখন হচ্ছে, তখন আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি নিয়ে সমাবেশ হচ্ছে। দেশের ১৮ কোটি মানুষ আওয়ামী লীগকে দেখতে চায় না। কারণ, এ আওয়ামী লীগ দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই মানুষের প্রতি নির্যাতন চালিয়েছে। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছে। শুধু চারটি পত্রিকা খোলা রেখে সব গণমাধ্যম বন্ধ করে দিয়েছিল। অর্থনীতি বন্ধ করে দিয়েছিল। সেই অর্থনীতিতে জিয়াউর রহমান এসে খুলে দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান সবচেয়ে বড় সংস্কার করেছিলেন বাংলাদেশে। একদলীয় শাসনব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র নিয়ে এসেছিলেন। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা দিয়ে দিয়েছেন, বিচার বিভাগকে স্বাধীনতা দিয়েছেন, অর্থনীতিকে মুক্ত করেছেন, আজকের অর্থনীতির যে ভিত্তি, আমাদের পোশাক শিল্প, আমাদের মানুষকে বিদেশে পাঠানো শুরু করেছিলেন জিয়াউর রহমান।
জিয়াউর রহমানের শাহাদাতের পরে পথে ঘাটে ঘুরে ঘুরে এরশাদকে পরাজিত করে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছিলেন খালেদা জিয়া। তিনি (খালেদা জিয়া) আমাদের পার্লামেন্ট ডেমোক্রেসি দিয়েছিলেন। একই সঙ্গে গণতন্ত্র যাতে ভালোভাবে যায়, সেজন্য কেয়ারটেকার ব্যবস্থা দিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। কিন্তু কিছু কিছু মানুষ সব ভুলে যায়। দেশের মানুষ গণতন্ত্র চায়। তারা অধিকারকে প্রয়োগ করতে চায়।
ঐকমত্যের মধ্যদিয়ে আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই। সব ষড়যন্ত্রকে ব্যর্থ করে দিতে হবে। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিক্রি করে আমরা কোনো কিছু করতে দেবো না। সবার আগে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ মাথা উঁচু থাকবে, পৎ পৎ করে পতাকা উড়বে।