আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ড

রিমান্ড শুনানিতে কি বললেন আওয়ামী লীগ নেতা মিন্টু

নিজস্ব সংবাদদাতা
  ১৪ জুন ২০২৪, ০০:৩০

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডের মামলার রিমান্ড শুনানিতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের আদালতে এই রিমান্ড শুনানি হয়। শুনানি শেষে তাকে ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
এর আগে তাকে আদালতে হাজির করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, ডিবির ওয়ারী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মাহফুজুর রহমান।
রাষ্ট্রপক্ষে রিমান্ড চেয়ে শুনানি করেন মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু। অপরদিকে আসামিপক্ষে রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে শুনানি করেন আইনজীবীরা।
শুনানির সময় বিচারক সাইদুল করিম মিন্টুর কিছু বলার আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, ‘আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। ৪৬ বছরের রাজনীতিতে আমার খুন-খারাবির ইতিহাস নেই। ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে আজ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হয়েছি। এখন সংসদ সদস্য পদে মনোনয়ন চাওয়ায় আমার অপরাধ হয়েছে।’
সাইদুল করিম মিন্টু বলেন, ‘আমি ওয়ান ইলেভেনে গ্রেপ্তার হয়েছি। এরশাদবিরোধী আন্দোলনে ১৩ বার গ্রেপ্তার হয়েছি। মানুষের জন্য রাজনীতি করেছি, কিন্তু আমাকে রাজনৈতিক কারণে ফাঁসানো হচ্ছে ‘
রিমান্ড আবেদনের পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবু বলেন, ‘মামলার তদন্তে অনেক কিছু বেরিয়ে আসছে। ডিবি পুলিশ ঘটনার সঙ্গে এ আসামির সম্পৃক্ততা পেয়েছে। পরিকল্পনাকারী কে কে আছে, বের হওয়া দরকার। স্টেটমেন্টে অনেকের নাম আসছে। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে অপহরণ করে হত্যা করা হয়েছে। তার রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করছি।’
আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। তিনি বলেন, ‘ডিবি পুলিশ সাইদুল করিম মিন্টুকে ১২ জুন গ্রেপ্তার দেখিয়েছে, কিন্তু জানলাম ১১ জুন ৩টায় তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে আদালতে হাজির করা হয়নি। এখানে ডিবি পুলিশ আইনের যথাযথ প্রয়োগ করেনি। তিনি (মিন্টু) ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনবারের নির্বাচিত মেয়র। কারো সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক বিরোধ ছিল না। ১৬৪-তে কে নাম বলেছে তার বক্তব্যের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুধুমাত্র রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ধ্বংস করতে তাকে এ মামলায় সম্পৃক্ত করে হয়রানি করা হচ্ছে।’
গত ১১ জুন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে সাইদুল করিম মিন্টুকে আটক করে ডিবি। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ রিমান্ড চাওয়া হয়।
এর আগে গত ১৩ মে কলকাতার সঞ্জিভা গার্ডেনের একটি ফ্ল্যাটে এমপি আনার খুন হন বলে জানায় পুলিশ। তবে এখনো তার মরদেহ খুঁজে পাওয়া যায়নি। ওই ফ্ল্যাট থেকে মাংসের টুকরো উদ্ধার করা হয়েছে। ফরেনসিক পরীক্ষায় তা মানুষের মাংস বলে জানা গেছে। তবে সেই মাংসের টুকরো আনারের মরদেহের অংশ কি না, তা ডিএনএ পরীক্ষার পর জানা যাবে। দক্ষিণ ২৪ পরগণার বাগজোলা খাল থেকে হাড় উদ্ধার করা হয়েছে। এ খালে আনারের মরদেহের অংশ ফেলা হয় বলে দাবি পুলিশের।