সিলেটে টানা বৃষ্টিতে আবারও বন্যার শঙ্কা

নিজস্ব সংবাদদাতা
  ১৪ জুন ২০২৪, ১৫:৫৩

টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন নগর। দুই সপ্তাহের মাথায় সিলেটে ফের বন্যা আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। ভারি বৃষ্টি ও হঠাৎ উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটে গত মাসের শেষের দিকে বন্যা দেখা দেয়। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় বসতবাড়ি-রাস্তা ঘাট, পানিবন্দি হয়ে পড়েন লাখো মানুষ। অতিবৃষ্টির ফলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়া উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল নামার আশঙ্কাও করা হচ্ছে। এমনটি হলে সিলেটে আবারও বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। নগরীতে ছয় ঘণ্টার অতিবৃষ্টিতে আবারও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ১৩ জুন (বৃহস্পতিবার) সকাল থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টিতে নগরের বেশ কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন সিলেটের বাসিন্দারা।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে ৫৫১টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সিলেটে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। বন্যা মোকাবেলায় সিলেটের সব উপজেলা ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সতর্ক থাকতে বলেছেন জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান। দেখা যায়- নগরের অভিজাত উপশহর, মেজরটিলা, জালালাবাদ, সোবহানীঘাট, তেরোরতন, মোকামবাড়ি, বেতেবাজার, ঘাসিটুলা, লামাপাড়া, যতরপুর, উপশহর, লালাদিঘির পার, বাগবাড়ি, দক্ষিণ সুরমার বঙ্গবীর রোড, স্টেশন রোড, মাছিমপুরসহ শহরের নিম্নাঞ্চলের এলাকায় বৃষ্টির পানি জমেছে। আরও বেশ কয়েকটি এলাকায় নতুন করে পানি উঠেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) তথ্য মতে, সুরমা নদীর কানাইঘাট ও সিলেট পয়েন্টে বুধবার সন্ধ্যায় ১১ দশমিক ৬০ মিটার ও ৯ দশমিক ৫৮ মিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হলেও বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় ১২ দশমিক ৩৭ মিটার ও ১০ দশমিক ১১ মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সিলেটের আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন বলেন, সিলেটে গত ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল ভোর ৬টা থেকে আজ ভোর ৬টা) বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৪ দশমিক ৬ মিলিমিটার। আর বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১৮৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। সিলেটের আকাশে বজ্রমেঘের অবস্থান রয়েছে। যেটা কেটে যেতে সময় লাগবে। তাই সবাইকে বজ্রপাত থেকে সাবধান থাকতে হবে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর জানান, গতকাল থেকে সিলেটে অবিরাম বর্ষণ হচ্ছে। এতে নদীর পানি বাড়ে। সেই প্রভাব সিটি করপোরেশন এলাকায় পড়ে। নগরে আমাদের একাধিক টিম দুর্যোগ মোকাবিলায় কাজ করছে। আমাদের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী মহোদয় ইতোমধ্যে সবকটি বিভাগকে যথাসাধ্য কাজ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে তিনি নাগরিকদের সচেতন থাকার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। যে কোনো পরিস্থিতিতে নগর কর্তৃপক্ষ নাগরিকদের পাশে আছে। সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান কালবেলাকে বলেন, দুর্যোগ পরিস্থিতি বিবেচনা করে ছুটির সময়ে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য সব কর্মকর্তাগণকে প্রস্তুতি থাকার জন্য অনুরোধ জানিয়েছি। আমরা জেলায় ৫৫১টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রেখেছি।
তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত চেরাপুঞ্জি ও সিলেট মিলিয়ে মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ তথ্য মতে ৫৩৫ মিমি। আরও বেশিও হতে পারে এবং আরও বৃষ্টি হওয়ার পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে। গত ২৯ মে পানি আসার পূর্ব ০২ দিন মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ৮০০+ মিমি। উপজেলা প্রশাসনসহ জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাগণকে সতর্ক অবস্থায় থাকার জন্য অনুরোধ জানাই।