বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ‘টপ টু বটম দুর্নীতির বরপুত্র’ আখ্যায়িত করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির টপ টু বটম সবাই দুর্নীতিবাজ। এখন দুর্নীতিবাজরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলছে।
শুক্রবার (১৪ জুন) ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
‘তারেক রহমানকে ভালো মানুষ সাজানোর জন্য বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিবৃতি’ দেওয়ার অভিযোগ তুলে ওবায়দুল কাদের বলেন, তিনি তাদের নির্বাচিত ছয় জনকে সংসদে পাঠালেন (একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর)। এখন যদি ফখরুল সংসদে যায় তাহলে তারেকের ক্ষমতা সংকুচিত হয়ে যাবে। এরকম একটা সাইকোলজি থেকে ফখরুলকে পার্লামেন্টে যাওয়া থেকে বিরত রেখেছে তারেক রহমান এক ধমকে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের (ছবি: ফোকাস বাংলা)
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের (ছবি: ফোকাস বাংলা)
তিনি বলেন, বিএনপি তাদের গঠনতন্ত্র থেকে ৭ ধারা হঠাৎ করে এক কলমের খোঁচায় বাদ দিয়েছে। কারণ কী? কারণ হলো যে ওই ৭ দফায় আছে দণ্ডপ্রাপ্ত কোনও ব্যক্তি, দুর্নীতিবাজ কোনও ব্যক্তি বিএনপির নেতা হতে পারবে না। ফখরুল তাকে ভালো মানুষ সাজাচ্ছেন, তাহলে ধারা বাদ দিলেন কেন? দুর্নীতিবাজের যে ধারা আর দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির যে ধারা সেটায় তারেক রহমান দোষী হয়ে যাচ্ছে। সেজন্য হঠাৎ করে তারেকের নির্দেশে এক কলমের খোঁচায় বাদ দিয়ে নির্বাচন কমিশনে এনে জমা দিয়েছেন।
ফখরুল নিজেই তো স্বাধীন নন
ওবায়দুল কাদের বলেন, ফখরুল নিজেই তো স্বাধীন নন। তার দলে কোনও পর্যায়ে কোনও সম্মেলন হয় না, অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের চর্চা হয় না। তারেক রহমান বিদেশে থাকলে বিএনপি স্বাধীন সত্তা নিয়ে রাজনৈতিক দল হিসেবে অস্তিত্বের প্রকাশ ঘটাতে পারবে সেটা আমরা বিশ্বাস করি না।
অস্ত্র মামলা, দুর্নীতির মামলায় তারেকের সাজা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারেকের আর কত সাজা হবে? তার তো সাজা হয়েছে। শাস্তি হয়ে গেছে। এখন তার শাস্তি ভোগ করার ব্যবস্থা করতে হবে। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। প্রধানমন্ত্রী সে কথাই বলেছেন। তো তাকে ভালো মানুষ সাজানোর চেষ্টা করার কোনও কারণ নেই।
বিএনপি নির্বাচনে এলে গতবারের মতো ফল হতো না
ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনে বিএনপি আসবে না, নির্বাচনে বিএনপি যদি আসতো গতবারের মতো খারাপ ফলাফল হতো না। এটা আমি মনে করি। সার্বিক পরিস্থিতির কারণে অপজিশনের একটা ভোট ছিল। কিন্তু তারেক রহমান রহমান মনে করে, যদি এই অবস্থায় বিএনপি ভালো করে, এটার সুফল তো আমি পাচ্ছি না, তারেক রহমান তো পাচ্ছে না। এখন তার অনুপস্থিতিতে অন্য কেউ নেতা হবে! ফখরুল সাহেব নিজেও অনুধাবন করতে পারছেন যে তাকে কীভাবে তারেকের ধমকের ওপর চলতে হয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা আজ এসব কথা বলে অন্ধকারে ঢিল ছোড়েন, ১৫ আগে বাংলাদেশ কেমন ছিল? বাংলাদেশের অর্থনীতি কেমন ছিল? আর ১৫ বছর পরে কেমন হয়েছে? আমাদের ভুলত্রুটি আছে এটা আমরা স্বীকার করে নিই। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন অতীতের ভুলত্রুটি থেকে আমরা শিক্ষা নেবো।
বিএনপি আমলে কত সন্ত্রাসী ছিল?
বিএনপি আমলে কত সন্ত্রাসী ছিল প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, দুর্নীতিবাজ বেনজীরের জায়গায় কোহিনূর, আশরাফুল হুদা এসব লোককে আইজিপি বানানো হয়েছিল। এদের দুর্নীতির গল্প শুনলে শিউরে উঠতো। বিচার কি হয়েছে? বিএনপির নেতারা জনে জনে দুর্নীতি করেছিল, লুটপাট করেছিল। তার বিচার কি হয়েছিল? বিএনপি কি তাদের কোনও নেতার বিচার করার সৎ সাহস দেখাতে পেরেছে, যেটা শেখ হাসিনা করে দেখিয়েছেন!
এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন প্রমুখ।