বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে একটা বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার ব্যাপারে আমরা কাজ করছি। দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের পরিপ্রেক্ষিতে যুগপৎ আন্দোলনের রূপরেখা চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নেওয়া হয়েছে। সরকার হটানোর সেই যুগপৎ আন্দোলনের রূপরেখা শিগগিরই প্রকাশ করা হবে। অতিদ্রুত এই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা আপনাদের সামনে, জাতির সামনে আসব। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে
advertisement 3
গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। আগের রাতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে দলের স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভার সিদ্ধান্তগুলোও তুলে ধরেন তিনি।
রূপরেখায় কী থাকবে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা বলেছি যে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে; এই সংসদ বাতিল করতে হবে এবং একটা নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে, যাদের নেতৃত্বে নতুন একটা নির্বাচন কমিশন গঠন হবে। এটাই আমাদের প্রধান বিষয়। তা ছাড়া আমাদের নেতা তারেক রহমান বলেছেন যে, নির্বাচনের পরে আন্দোলনকারী যেসব দল থাকবে, তাদের সমন্বয়ে একটা জাতীয় সরকার গঠন করা হবে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে, এখানে এই যে ক্ষতগুলো সৃষ্টি করছে আওয়ামী লীগ, এই রাষ্ট্র ব্যবস্থায় সেগুলো এককভাবে করাটা যুক্তিসঙ্গত হবে না। সে কারণে অন্যান্য দলকে যুক্ত করতে চাই।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, আমরা যুগপৎ আন্দোলন করব এবং সব রাজনৈতিক দলের কাছে আমাদের আহ্বানও তাই। আমরা সব রাজনৈতিক দলকে যুগপৎ আন্দোলনের আহ্বান জানাচ্ছি।’
জাতীয় পার্টির (এরশাদ) সঙ্গে আন্দোলনের বিষয়ে সংলাপ করবেন কিনা প্রশ্ন করা হলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘জাতীয় পার্টির সঙ্গে এখনো আমরা ফরমালি কোনো আলাপ-আলোচনা করিনি।’
জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা এবং তাদের ২০ দলে থাকা না থাকা নিয়ে দেওয়া বক্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, ‘এ নিয়ে আমি আপনাদের সঙ্গে আগেও কথা বলেছি। ওরাও (জামায়াত) একটু বক্তব্য দিয়েছে। আমরা যুগপৎ আন্দোলনের কথা বলছি এখন। এটা সুস্পষ্টভাবে বুঝতে হবে। সব দল নিজ নিজ অবস্থান থেকে আন্দোলন করবে, এটাই হচ্ছে আমাদের কথা।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পুলিশ হচ্ছে আমাদের রাষ্ট্রীয় সংগঠন। আমরা কখনই পুলিশকে প্রতিপক্ষ মনে করি না। পুলিশ জনগণের বন্ধু হওয়া উচিত, বন্ধু বলে মনে করি আমরা এবং সেটাও আমরা মনে করি যে, তাদের সংবিধানিক যে দায়িত্ব আছে, সেই দায়িত্ব তারা পালন করবে। কিন্তু সরকার অবৈধভাবে টিকে থাকার জন্য সংবিধান লঙ্ঘন করে, মানুষের মানবাধিকার লঙ্ঘন করে যখন পুলিশকে ব্যবহার করে, তখন নিঃসন্দেহে সেই বিষয়গুলো জনগণের সামনে, মানুষের সামনে এসে দাঁড়ায়।’ তিনি বলেন, ‘আপনারা ভালো করে লক্ষ করে দেখবেন, সব জায়গায় এই ঘটনাগুলো ঘটছে না বা সব পুলিশই এই ঘটনাগুলো ঘটাচ্ছে না। কয়েক জায়গাতে অতি উৎসাহী কিছু অফিসার এই ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে। আমি যেটা জানতে চেয়েছিলাম যে, নারায়ণগঞ্জে চাইনিজ রাইফেল দিয়ে গুলি হলো, সেটা কীভাবে হলো, কোন কর্তৃত্ব থেকে সে (গোয়েন্দা পুলিশ) এটা ব্যবহার করতে পারল। সেই উত্তর কিন্তু এখনো বাংলাদেশের মানুষ পায়নি।’