কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ ও পুলিশের গুলিতে গতকাল সারা দেশে ৬ জন নিহত হন। এরপর বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে আন্দোলনকারীরা। মঙ্গলবার রাতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ওপর চড়াও হয় তারা। মারপিট করা হয়, রুমে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। আজ বুধবার সারা দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ ঢাকার অন্য সব ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের অবস্থান দেখা না গেলেও বিকালে শান্তিপূর্ণভাবে শাহবাগে অবস্থান নেয় তারা।
এ সময় শাহবাগ মোড়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের নেতাকর্মীদের দেখা যায়। এছাড়াও ঢাকার সুপার ইউনিটের নেতাকর্মীরা শাহবাগে উপস্থিত ছিলেন। সেখানে উপস্থিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শিগগিরই হলে ফেরার কথাও জানান। তবে এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়নি।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন শাহবাগে উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, যাদের কারণে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াই আমরা অবশ্যই লড়বো। তারা রুমে রুমে গিয়ে তাণ্ডব চালিয়েছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের এই পুরো ইস্যুটাতেই বাংলাদেশ ছাত্রলীগ দায়িত্বশীলতা এবং সহনশীলতার পরিচয় দিয়েছে।
সাদ্দাম আরও বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ যেন রক্ষা করা যায়, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা যেন বজায় রাখা যায়, সেই প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ওপর যারা হামলা করেছে, নেতাকর্মীদের কক্ষ যারা ভাঙচুর করেছে, আমাদের মেয়েদের সঙ্গে যারা অমানবিক আচরণ করেছে, শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছে, তাদের প্রত্যেকটির জবাব বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রাজনৈতিকভাবে দেবে। একইসঙ্গে আইনি প্রক্রিয়ায় তাদের ফৌজদারি অপরাধের শাস্তি যেন নিশ্চিত করা হয়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সেই লক্ষ্যে কাজ করবে।
ক্যাম্পাসে অবস্থানের বিষয়ে ছাত্রলীগের এই নেতা বলেন, অবশ্যই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের শক্তিশালী অবস্থান রয়েছে। যারা বাংলাদেশে রাজাকারের রাজনীতি পুনর্বাসন করার চেষ্টা করছে তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াই আমরা অব্যাহত রাখবো। সারা বাংলাদেশে রাজাকারদের প্রেতাত্মা তাদের হামলায় ছাত্রলীগের দুই শতাধিক নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়েছে বলে জানান ছাত্রলীগের এই নেতা।
আন্দোলনকারীরা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের কেউ হল থেকে বের করে দেয়নি বলে দাবি করেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান। তিনি বলেন, জামায়াত-শিবিরের বহিরাগত সন্ত্রাসীরা গতকাল রাতে অবস্থান নিয়েছিল। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করায় আমরা নিজেরা হল ছেড়ে এসেছি। কেউ আমাদের বের করেনি।