কোটা সংস্কার আন্দোলনের আড়ালে ভয়াবহ নাশকতা

এখনও আঁতকে ওঠেন যাত্রাবাড়ী, কাজলা ও শনিরআখড়ার বাসিন্দারা

ডেস্ক রিপোর্ট
  ২৫ জুলাই ২০২৪, ১২:৪৫

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাজলা ও শনির আখড়া এলাকায় গত ১৭ জুলাই (বুধবার) রাত থেকে শুরু করে ১৮ জুলাই দিনব্যাপী পুলিশের সঙ্গে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল ছোড়ে। আন্দোলনকারীরাও পাল্টা মুহুর্মুহু ইটপাটকেল ছোড়ে। এতে পুলিশ, সাংবাদিক আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষসহ অন্তত অর্ধশত আহত হয়েছে। এমনকি গুলিবিদ্ধ হয়ে সাংবাদিক নিহতের ঘটনাও ঘটেছে।
দিনব্যাপী দফায় দফায় সংঘর্ষের পর বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ শনির আখড়া ও কাজলা পাড় এলাকা ঘুরে দেখা যায়, তখনও সেখানে উত্তাপ ও উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সড়কের বিভিন্ন জায়গায় জ্বলছিল আগুন। কাজলা সড়কসহ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কোনও যানবাহন চলছিল না। আন্দোলনকারীরা কাউকেই যেতে দিচ্ছিলেন না। এমনকি রিকশা পর্যন্ত চলাচল করতে পারছিল না। তবে নির্বিঘ্নেই অ্যাম্বুলেন্স চলতে দেখা যায়।
সন্ধ্যার পর ওই এলাকাগুলো একেবারে অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার পর থেমে থেমে ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছিল। সড়কের বিভিন্ন স্থানে টায়ার ও কাঠে আগুন ধরিয়ে আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকে। শনির আখড়ার কাজলায় হানিফ ফ্লাইওভারের টোল প্লাজায় বৃহস্পতিবারও আগুন দেয় আন্দোলনকারীরা।


এ সময় আশপাশে থাকা বেশ কয়েকজনকে টোল প্লাজার বিভিন্ন জিনিসপত্র খুলে নিয়ে যেতে দেখা যায়। রাত ১১টার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত আন্দোলনকারীরা আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করে।
শুক্রবার (১৯ জুলাই) সকালে ওই তিন এলাকার অবস্থা কিছুটা স্বাভাবিক হলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ফের উত্তাপ বিরাজ করতে থাকে। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দুপুরে পর বেশ কয়েক দফায় পুলিশের সংঘর্ষ হয়। পরে এতে ঘটনাস্থলে অন্তত তিন জন নিহত হয়েছে এবং ১০ থেকে ১২ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। যাদের রিকশা করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মধ্যে দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন, কিন্তু তাদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।
এ সময় আশপাশে থাকা বেশ কয়েকজনকে টোল প্লাজার বিভিন্ন জিনিসপত্র খুলে নিয়ে যেতে দেখা যায়। রাত ১১টার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত আন্দোলনকারীরা আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করে।
শুক্রবার (১৯ জুলাই) সকালে ওই তিন এলাকার অবস্থা কিছুটা স্বাভাবিক হলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ফের উত্তাপ বিরাজ করতে থাকে। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দুপুরে পর বেশ কয়েক দফায় পুলিশের সংঘর্ষ হয়। পরে এতে ঘটনাস্থলে অন্তত তিন জন নিহত হয়েছে এবং ১০ থেকে ১২ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। যাদের রিকশা করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মধ্যে দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন, কিন্তু তাদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।
শুক্রবার বিকাল ও রাত ১টা পর্যন্ত গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। কারফিউ চলাকালীনও ওই তিন এলাকায় ব্যাপক গোলাগুলি ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।


স্থানীয়রা বলছেন, আন্দোলনের শুরুতে সেখানে শিক্ষার্থীরাই ছিলেন। তারাও তাদের সমর্থন ও সহযোগিতাও করেছেন। কিন্তু পরে এই আন্দোলনে যুক্ত হয় দুর্বৃত্তরা। তারা আন্দোলনটিকে ভিন্ন খাতে নিয়ে যায়। ধ্বংসযজ্ঞ চালায় মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের টোল প্লাজায়।
জানতে চাইলে যাত্রাবাড়ীর বাসিন্দা ও একটি বেসরকারি হাইস্কুলের শিক্ষক মো. আবুল কালাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গত এক সপ্তাহে যাত্রাবাড়ীর অবস্থা কেমন ছিল, তা কোনোভাবেই বর্ণনা করা যাবে না। নিজ চোখে এত বেশি নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা দেখেছি যে রীতিমতো নাওয়া-খাওয়া-ঘুম সব উধাও হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবারের পর থেকে অবশ্য এই এলাকার ঘটনা অন্যদিকে চলে গেছে। এখানে অনেক রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরাও ছিল। এখানে যেমন বিএনপির নেতাকর্মী ছিল, তেমনি আওয়ামী লীগের পদবঞ্চিত ও বিদ্রোহীরাও ছিল। আবার কাউন্সিলরের প্রতিপক্ষও ছিল।’