আজ থেকে সারা দেশের শুরু হয়েছে তিন দিনের সাধারণ ছুটি। গতকাল সন্ধ্যায় ৬টা থেকে কোনোরকম শিথিলতা ছাড়াই আবারো ঢাকাসহ সারাদেশে চলছে অনির্দিষ্টকালের কারফিউ। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ কারফিউ চলবে।
সোমবার সকাল থেকেই রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও স্থাপনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জোরদার করা হয়েছে। এসব পয়েন্টে রয়েছে সেনাবাহিনী। সতর্ক অবস্থায় রয়েছে পুলিশ।
আজ সোমবার সকালে রাজধানী ঢাকার সড়কগুলো ফাঁকা দেখা গেছে। সকাল থেকে রাস্তায় গণপরিবহন একেবারেই দেখা যায়নি। রিকশা, মোটরযুক্ত রিকশা আর ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় করে লোকজন গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন।
কারফিউ চলাকালে বিনা প্রয়োজনে রাজধানী ঢাকার কাউকে ঘর থেকে বের না হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান। যারা কারফিউয়ের আইন ভঙ্গ করবেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
কারফিউর বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রোববার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ঢাকা মহানগরসহ সব বিভাগীয় শহর, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, শিল্পাঞ্চল, জেলা সদর ও উপজেলা সদরে সান্ধ্য আইন বলবৎ করা হলো।
চলমান পরিস্তিতির মধ্যেই নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ। এক বিবৃতিতে গতকাল তিনি ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন, যা আজ পালন করা হবে। এর আগে আগামীকাল ‘মার্চ টু ঢাকা’ রেখে দুইদিনের কর্মসূচি দিয়েছিলেন সংগঠনটির অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম।
‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি একদিন এগিয়ে আনার বিষয়ে বিবৃতিতে আসিফ মাহমুদ উল্লেখ করেন, ‘পরিস্থিতি পর্যালোচনায় এক জরুরি সিদ্ধান্তে আমাদের “মার্চ টু ঢাকা” কর্মসূচি ৬ আগস্ট থেকে পরিবর্তন করে ৫ আগস্ট করা হলো। আগামীকাল (আজ) সারা দেশে ছাত্র-জনতাকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করার আহ্বান জানাচ্ছি। অর্ধশতাধিক ছাত্র জনতাকে খুন করেছে পুলিশ। এর চূড়ান্ত জবাব দেয়ার সময় এসে গেছে। আশপাশের জেলাগুলো থেকে সবাই ঢাকায় আসবেন। ছাত্র ও নাগরিক যারা পারবেন আজকে (রোববার) ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়ে যান। ঢাকায় এসে মুক্তিকামী ছাত্র-জনতা রাজপথগুলোয় অবস্থান নিন। চূড়ান্ত লড়াইয়ে এ ছাত্র-নাগরিক অভ্যুত্থানের চূড়ান্ত স্বাক্ষর রাখার সময় এসে গেছে। ইতিহাসের অংশ হতে ঢাকায় চলে আসুন সকালে। যে যেভাবে পারেন ঢাকায় চলে আসুন। ছাত্র-জনতা এক নতুন বাংলাদেশের অভ্যুত্থান ঘটাবে।’
এর আগে ফেসবুকে নিজের আইডিতে এক পোস্টে সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম জানিয়েছিলেন, সোমবার সারা দেশে শহীদ স্মরণে তাদের নিহত হওয়ার স্থানগুলোয় ‘শহীদ স্মৃতিফলক’ উন্মোচন। একই দিন বেলা ১১টায় ঢাকার শাহবাগে শ্রমিক সমাবেশ এবং বিকাল ৫টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নারী সমাবেশের ডাক দেয়া হয়েছিল। পাশাপাশি সারা দেশে বিক্ষোভ-আন্দোলন এবং গণঅবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রাখারও ঘোষণা দিয়েছিলেন নাহিদ ইসলাম।