গণবিবাহ নিয়ে ‘তোলপাড়’, আয়োজকরা কি সিরিয়াস?

ডেস্ক রিপোর্ট
  ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২১:১৯

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে ‘গণবিয়ের’ আয়োজন করা হচ্ছে- এরকম তথ্যে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০ সেপ্টেম্বর শুক্রবার হলের শিক্ষার্থীরা সম্মিলিতভাবে গরুভোজের আয়োজন করেছেন। সেখানে গণবিয়ের ঘোষণা দিলে মূলত ফেসবুকের মাধ্যমে বিষয়টি সামনে আসে। প্রকৃত ঘটনা কী তা জানতে ঘোষণাকারীদের কাছে এরপর থেকেই আসতে থাকে একটার পর একটা কল। কিন্তু অনেকেই সন্দিহান, বিষয়টি আসলে কতটুকু সত্য, এই আয়োজন নিয়ে কতটা সিরিয়াস আয়োজকরা?
বুধবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে হলের শিক্ষার্থী আলামিন সরকার তার নিজস্ব ফেসবুক প্রোফাইলে একটি পোস্ট দেন। সেখানে তিনি হলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে গণবিয়ে আয়োজনের ঘোষণা দেন। জানতে চাইলে বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ২০ সেপ্টেম্বর আমাদের গরু ভোজের আয়োজন সামনে। আমার মাথায় একটি চিন্তা আসলো, যাদের প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে তাদের নিয়ে আমরা গণবিয়ের আয়োজন করতে পারি! আমি এমনিতেই ব্যক্তিগতভাবে এই পোস্ট দিয়েছিলাম। পরে সেখানে কোনও নেগেটিভ মন্তব্য না পাওয়ায়, অনেকে পজিটিভলি দেখায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের গ্রুপ ‘শিক্ষার্থী সংসদে’ এটা নিয়ে পোস্ট করি।
তিনি আর বলেন, বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা বলছে এই বিয়েতে তাদেরও অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হোক। পরে আমরা ভাবছি সবাই যদি অংশগ্রহণ করে তাহলে এত বড় আয়োজন আমরা করতে পারবো কিনা। সেজন্য আমরা গতকাল প্রক্টরের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন আমাদের বিষয়টি পরে রাতে জানাবেন। আমরা তার কাছে শুধু আমাদের নিরাপত্তা চেয়েছি। নিরাপত্তা দিলে আমরা আয়োজন করব।
এখন পর্যন্ত কেউ বিয়ের জন্য কনফার্ম করেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বেশ কয়েকজন জানিয়েছে তারা বিয়ে করবে। তবে শতভাগ নিশ্চিত হয়ে কিছুই বলা যাচ্ছে না। আমরা আশা করছি অন্তত দুই থেকে তিনটি বিয়ে হবে। আমরা মূলত যে বিষয়টা ভেবেছি, আজকাল বিয়েটাকে অনেক বেশি কঠিন করে ফেলা হচ্ছে। দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে যাচ্ছে, অনেকে ডিপ্রেশনে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে। তাদের সম্পর্কে পূর্ণতা দিতেই আমরা এই চিন্তা করছি৷ আমরা প্রয়োজনে পাত্র-পাত্রীর অভিভাবকদের কনভিন্স করার চেষ্টা করবো তাদের বিয়েতে রাজি হওয়ার জন্য।
বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেউ কেউ পজিটিভলি নিলেও অধিকাংশই বিষয়টি নিয়ে মজা করতে দেখা গেছে, জানতে চাইলে আলামিন সরকার বলেন, আমরা কিন্তু আশাব্যঞ্জক সাড়া পেয়েছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ বিরক্তি প্রকাশ করে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, কীভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটা প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের আয়োজন হতে পারে? এখন এটা একটা ভার্চুয়াল জগত। ভার্চুয়াল জগতে শিক্ষার্থীরা মজা নিচ্ছে। এগুলোয় আসলে গুরুত্ব দেওয়ার কিছুই নাই।
একাধিক শিক্ষার্থী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বিষয়টি হয়তো ভালো, যারা প্রেমের সম্পর্কে পূর্ণতা চান তাদের জন্য। কিন্তু আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুধু মজাই করেছি। কেউই বিষয়টি নিয়ে সিরিয়াস না।