শিল্পাঙ্গনের উদ্যোগে ২৮ এপ্রিল রোববার নিউ ইয়র্কের হিক্সভিল লাইব্রেরির পেশাদার মিলনায়তনে বাংলা নববর্ষ ১৪৩১ উদযাপিত হয়। এ বছর লং আইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত সর্ববৃহৎ বাংলা নববর্ষ উৎসবে দু'শর অধিক দর্শকের সমাগম হয়।
দূপুর ২টায় সীমিত পরিসরে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। নববর্ষের গানের তালে তালে শিল্পী ও দর্শক অংশ নেন ঢাকার আদলে সাজানো এ মঙ্গল শোভাযাত্রায়।
বরেণ্য প্রকৌশলী, সমাজসেবক ও সাংস্কৃতিক পৃষ্ঠপোষক সৈয়দ জাকি হোসেন মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে শিল্পাঙ্গনের বর্ষবরণ উৎসবের শুভ উদ্বোধন করেন। তিনি শিল্পাঙ্গনের বাংলা সংস্কৃতিকে সমুন্নত রাখার প্রয়াসকে অভিনন্দন জানান। শিল্পাঙ্গনের সহ-সভাপতি আকতার কামাল সকল অতিথি, শিল্পী ও দর্শকদের স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই সমবেত কণ্ঠে পরিবেশিত হয় সংগীতালেখ্য "বর্ষ আবাহন"। সংগীতে কণ্ঠ দেন মাহনাজ হাসান, শাহপার ইসলাম, ইশরাত লিপি, সোনিয়া পান্না, সোনিয়া হক, আফরিন হক, ফাহমিদা ইয়াসমিন, মৌসুমী বড়ুয়া, মাহমুদ চৌধুরী, দীপ্তি বড়ুয়া এবং তরুণ চন্দ। সঞ্চালনায় ছিলেন নারগিস আফরিন। তবলায় ছিলেন চামেলী গোমেজ এবং গীটারে মোহাম্মদ শানু। সংগীত পরিচালনা করেছেন বরেণ্য শিল্পী ও প্রশিক্ষক অনুপ বড়ুয়া।
শিল্পাঙ্গনের নববর্ষ উদযাপনে আগামী প্রজন্মও যোগ দিয়েছিল। নতুন বছরের আগমনে আনন্দে মেতে উঠেছিল সুরে সুরে ছোট্ট বন্ধু আয়ানা মাহিবা এবং আনিশা মির্জা। “বোশেখের স্বরলিপি” শিরোনামে সংগীতের দ্বিতীয় পর্বে অংশ নেন তরুণ চন্দ, দীপ্তি বড়ুয়া, মৌসুমী বড়ুয়া, মাহমুদ চৌধুরী, শাহপার ইসলাম, ফাহমিদা ইয়াসমিন। সঞ্চালনা করেন মাহনাজ হাসান।
শিল্পাঙ্গনের নববর্ষ উদযাপনের উল্লেখযোগ্য পরিবেশনা ছিল কাব্যালেখ্য “বৈশাখের পদ্য”। বেবি আজিজ আহমেদের সঞ্চালনায় বৈশাখের কবিতা আবৃত্তি করেন শফিউল আলম, রাফিয়া খান নিশি, সোনিয়া পান্না, জান্নাত সুলতানা, সুলতানা খান এবং মোহাম্মদ শানু।
শিল্পাঙ্গনের বর্ষবরণ উৎসব মুখরিত হয়েছিল নৃত্যের ছন্দে। প্রথমে RTV তারকা ক্ষুদে শিল্পী লিয়ানা মানহা বৈশাখের আগমনে নূপুরের ঝংকার তুলেছিল মঞ্চে। এরপর প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী প্রিয়া ডায়েসের পরিচালনায় এক ঝাঁক শিক্ষার্থী বৈশাখের বিভিন্ন রূপ উপস্থাপন করে নৃত্যালেখ্য দিয়ে। এতে অংশ নেয় অর্নুষা, অনন্যা, ইয়াশনা, মায়েরা, জিয়ানা, এলেনা, আজমিনা, আনিতা, মার্ভি এবং মাহী।
শিল্পাঙ্গনের অন্যতম সমদ্ধ মাধ্যম হচ্ছে নাটক। নববর্ষ উদযাপনে পরিবেশিত হয় দু'টি নাটক। সুভাষ বসুর রচনায় কমেডি নাটক “কর্তা-গিন্নী সমাচার” পরিবেশন করেন অশোক চৌধুরী এবং মধুমিতা চৌধুরী। সবশেষ পরিবেশনা ছিল নাটক “বর্ষবরণ ও একজনা”। মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের রচনা ও নির্দেশনায় এ নাটকে অভিনয় করেছেন রাফিয়া খান নিশি, আহসান উল্লাহ এবং মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম। নেপথ্যে কণ্ঠ দিয়েছেন শাহপার ইসলাম।
বর্ষবরণ উৎসবের উপস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন ইশরাত আহামেদ ও সোনিয়া হক। শব্দ নিয়ন্ত্রণ করেন অনুপ কুমার। নেপথ্যে সহযোগিতায় ছিলেন শফিউল আলম, আহসান উল্লাহ, স্বপন কবীর, বাবু এবং হাসিব হোসেন। গ্রন্থনা, পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় ছিলেন মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম।