পূর্ব লন্ডনের পপলার এলাকায় বাংলাদেশি স্ত্রীকে হত্যা করে মরদেহ স্যুটকেসের ভেতরে লুকিয়ে টেমস নদীতে ফেলে দেওয়ার ঘটনায় স্বামী আমিনান রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) লন্ডনের ওল্ড বেইলি আদালতে বিচারক বেনাথন তাকে এই কারাদণ্ড দেন।
গত বছর ২৯ এপ্রিল সোমা বেগমকে তার টিকটকার প্রেমিকের সঙ্গে ফোনকলে থাকা অবস্থায় হত্যা করে আমিনান। হত্যাকাণ্ডের সময় পূর্ব লন্ডনের বাড়িতে তাদের দুই সন্তান উপস্থিত ছিলেন। ঘটনার দশ দিন পরে নদীর তলদেশ থেকে তার মরদেহের অংশ উদ্ধার হলে পুলিশ নিখোঁজ সোমা বেগমের মৃত্যুর বিষয়টি জানতে পারে।
হত্যা করার আগে চব্বিশ বছর বয়সী সোমা বেগমকে কীভাবে ৪৬ বছর বয়সী আমিনান রহমান প্রতারণা, আর্থিকভাবে নিয়ন্ত্রণ এবং নির্যাতন করেছে তা উঠে এসেছে আদালতের শুনানিতে।
সোমা বেগমের অনলাইনে পাওয়া প্রেমিক সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ভিডিও কলের মাধ্যমে সোমার মৃত্যুর দৃশ্য দেখেছিলেন বলে আদালতে উল্লেখ করা হয়। সোমার মরদেহ স্যুটকেসে ঢোকানোর দৃশ্য একটি সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ে। সেই সূত্র ধরে ঘটনার বিস্তারিত জানতে পারে পুলিশ।
সোমা বেগম দুই বছরের এক ছেলে ও দুই মাস বয়সী এক মেয়ের মা ছিলেন। তার সন্তানরা এখন ব্রিটিশ সরকারের সোশ্যাল সার্ভিসের হেফাজতে রয়েছে। সোমা বেগম সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার মামুনপুর গ্রামের মৃত ঠাকুর মিয়ার মেয়ে।
সোমা বেগমের পারিবারিক সূত্র বাংলা ট্রিবিউনকে জানায়, ঘাতক স্বামী চার বছর আগে চুক্তি করে সোমা বেগমকে ব্রিটেনে নিয়ে আসে। তার তালতো বোন ছিলেন সোমা। আমিনানের ব্রিটেনে বসবাসের বৈধ কাগজপত্র না থাকায় অন্য ব্যক্তির স্ত্রী বানিয়ে সোমাকে ব্রিটেনে নিয়ে আসে। কিন্তু তার বয়স ৪৫ হওয়ায় বিভিন্ন কারণে তাদের মধ্যে গত কয়েক বছর ধরে পারিবারিক দ্বন্দ্ব চলছিল। সোমা বেগম অন্য ব্যক্তির স্ত্রী হিসেবে ব্রিটেনে আসায় আমিনের সঙ্গে তার বিয়ে স্থানীয় আইনসিদ্ধ ছিল না। নিবন্ধনের সুযোগ না থাকায় সোমা বেগমকে মসজিদে নিয়ে বিয়ে করে সে।
নিহত সোমা বেগমের এক স্বজন সাবেরিন বেগম বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, সোমা খুব ভালো একজন মেয়ে ও মা ছিলেন।