বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ উপলক্ষে বাংলাদেশ সোসাইটির পক্ষ থেকে একটি প্রেসবিফিং দেয়া হয়েছে। ৭ সেপ্টেম্বর শনিবার দেয়া এক প্রেস ব্রিফিং এ সোসাইটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, 'আমরা মনে করি দেশ গড়ার যেকোনও আহ্বানে প্রবাসীরা সমানভাবে এগিয়ে আসার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছেন। প্রধান উপদেষ্টার নিউইয়র্ক সফরের সময়টিতে আমরা দাবীনামা নিয়ে দলবলে উপস্থিত হয়ে বিব্রত করতে চাই না। এ নিয়ে একটা ফটোসেশন হোক আর আমরা কয়েকজন মিলে প্রধান উপদেষ্টার সাথে একটা ছবি প্রদর্শন করে বলতে চাই না, প্রবাসীদের দাবী পেশ করা হয়ে গেছে। সোসাইটির নেতৃবৃন্দ বলেছেন, 'আমরা প্রবাসীদের পক্ষ থেকে, আপনাদের নিয়ে উপস্থিত হয়ে বলতে চাই দেশ সংস্কারে আমাদের সমর্থনের কথা। এ মুহূর্ত দাবী জানানোর নয়, এ মুহূর্তটি অভাব অভিযোগ জানানোর নয়। আমরা শুধু বলতে চাই, প্রবাসীদের নিয়ে আমরা পাশে আছি। প্রবাসীদের সমস্যা, অভাব, অভিযোগ এবং প্রত্যাশাগুলো সঠিকভাবে শুনা ও ব্যবস্থা গ্রহনের একটা ব্যবস্থা করার জন্য আমরা অনুরোধ জানাবো। এ নিয়ে আমরা সংবাদ মাধ্যম এবং অগ্রসর প্রবাসী সমাজের মতামত সংগ্রহ করতে চাই এবং সম্মিলিতভাবে এগিয়ে যেতে চাই। সোসাইটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অন্যান্য বছরগুলোতে রাজনৈতিক সরকার থাকায় সরকার প্রধানের যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে সংশ্লিষ্ট দলের মাধ্যমেই তাদের সফর সংক্রান্ত সব আয়োজন করা হয়। এমনকি সংবর্ধনার আয়োজনও করা হয় দলীয়ভাবে। এতে বিপুল সংখ্যক সাধারণ প্রবাসী তাদের দাবি দাওয়া ও মনের কথা সরকার প্রধানের সামনে বলার সুযোগ কখনোই পান না। রাজনৈতিক দলের প্রবাসী নেতা-কর্মীরা তাদের রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে ব্যস্ত থাকায় প্রবাসীদের সাধারণ সমস্যা ও সম্ভাবনার কথাগুলো সরকার প্রধান জানতেই পারেন না, ফলে সেগুলোর সমাধানও বছরের পর বছর হয়নি।
তারা বলেন, বর্তমানে পরিবর্তিত একটি পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। এই সরকার ছাত্র-জনতার দাবি অনুযায়ী- রাষ্ট্র সংস্কারের কাজে হাত দিয়েছে। সেই সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা, বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিত্ব নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ২২ থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্র সফর করবেন। তাঁর এই সফর অন্যান্য সরকার প্রধানের সফরের চেয়ে একেবারেই ভিন্ন। আমরা আশা করছি-নিরপেক্ষ, নির্দলীয় এই সরকারের প্রধানের কাছে সমস্ত প্রবাসী বাংলাদেশি তাদের দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত মনের কথাগুলো সহজে বলার সুযোগ পাবেন। বাংলাদেশ সোসাইটিও সমস্ত প্রবাসী বাংলাদেশিদের পক্ষ থেকে সেই সুযোগটি গ্রহণ করতে চায়।
সোসাইটি তাদের বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, 'আমরা সমস্ত প্রবাসীদের আমব্রেলা সংগঠন হিসেবে বাংলাদেশ সোসাইটির পক্ষ থেকে এবারের নাগরিক গণ-সংবর্ধনার আয়োজন করতে আগ্রহী। যেহেতু এখন রাজনৈতিক সরকার নেই, তাই প্রবাসী রাজনৈতিক দলের শাখা কর্তৃক আয়োজনের ব্যাপারও নেই। আর এর মাধ্যমে আমরা প্রবাসীদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া ও সমস্যা সম্ভাবনা এবং রাষ্ট্র সংস্কারে প্রবাসীদের বিভিন্ন বিষয় আমরা সরাসরি সরকার প্রধানের সামনে তুলে ধরতে চাই। আপনারা জানেন, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য বাংলাদেশ সোসাইটি প্রাথমিকভাবে ৩০ লক্ষ টাকার একটি তহবিল প্রদান করেছে। আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে সেই স্মারকও মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার হাতে হস্তান্তর করতে চাই। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের রাষ্ট্র সংস্কারের যে উদ্যোগ মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁর সরকার নিয়েছেন তার সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে প্রবাসীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কিছু বিষয়ে সংস্কার প্রস্তাব সংক্রান্ত একটি স্মারকলিপিও আমরা তাঁর হাতে হস্তান্তর করতে চাই।' তারা বলেছেন, ' আমরা বাংলাদেশ সোসাইটির পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন, নিউইয়র্ক কনস্যুলেট এবং মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে যোগাযোগ শুরু করেছি। এ বিষয়ে আপনাদের এবং গণমাধ্যমের আন্তরিক সহযোগিতাও একান্ত কাম্য। আপনারাও নিশ্চই আমাদের সমস্ত প্রবাসীদের পক্ষে জনমত গঠন করে নাগরিক সংবর্ধনাটি বাংলাদেশ সোসাইটির মাধ্যমে আয়োজনে ভূমিকা রাখবেন।