ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসীদের পাঠানো প্রত্যেকটি ডলার বাংলাদেশের সব ব্যাংকে নিরাপদ। ড. ইউনুস এর নেতৃত্বাধীন সরকার এ লক্ষ্যে রাতদিন কাজ করে যাচ্ছে। গত শনিবার নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশ ইনষ্টিটিউট ডেভেলপমেন্ট এন্ড সিকিউরিটি ষ্টাডিজ আয়োজিত সেমিনারে এসব কথা বলেন ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংক এর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল এসব কথা বলেন। সেমিনারে অংশ নেয়া বক্তারা জানান, ব্যাংক আস্থার পরিবেশ তৈরী করতে পারলে প্রবাসীরা বিদেশে টাকা না রেখে বাংলাদেশে রাখবে। এসময় তারা অবিলম্বে অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ ইনষ্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট এন্ড সিকিউরিটি ষ্টাডিজ (বিডস) ও ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংক এর যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রবাসীদের ভূমিকা শীর্ষক আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ফাষ্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংক-এর চেয়ারম্যান, ইসলামি ব্যাংক কন্সালটেটিভ ফোরাম এর চেয়াম্যান মুহাম্মদ আবদুল মান্নান। প্যানেলিস্ট হিসেবে বক্তব্য রাখনে লং আইল্যান্ড ইউনিভার্সিটির অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. শওকত আলী, যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়ার্ড ইউনিভর্সিটির সহকারী অধ্যাপক ড. মির্জা গালিব্, এটর্নি মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা ও বিডস এর নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মাদ ইমরান হোসাইন আনসারী।
এসময় স্বাগত বক্তব্যে বিডস এর নির্বাহী পরিচালক ইমরান আনসারী বলেন, ১৫ বছরে আওয়ামী সরকার ঋণ করেছে সাড়ে ১৫ লাখ কোটি টাকা। আর ১৫ বছরে পাঁচার করেছে ১৮ লাখ কোটি টাকা। আর এগুলো করা হয়েছে ব্যাংক গুলো দখল ও ডাকাতির মাধ্যমে এবং রাষ্ট্রীয় মদদে। তিনি আরো বলেন , শুধু ব্যাংকগুলোকে লুটপাট করেই বিগত স্বৈরাচারি সরকার থামেনি, বিগত সরকার ইসলামি ব্যাংকগুলোর মৌলিক ফিলোসোফিকে ধ্বংস করেছে। দেশে বড় বড় মেঘা প্রজেক্ট এর নাম লুটপাটের নামে এক অলিগার্ক সোসাইটি গড়ে তোলেছে।
এসময় তিনি বিডস এর পক্ষ থেকে দাবিী জানান, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে ১৫ বছরে যেসব টাকা পাচার হয়েছে তা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিতে হবে সরকারকে । যেসব সকল ঝণ খেলাপি রয়েছে তাদের বিচার আওতায় আনতে হবে । পাশাপাশি তাদের স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে ব্যাংকের জিম্মাদারিতে আনতে হবে । প্রবাসীদের সকল ইনভেস্টমেন্ট নিরাপদ করতে এবং উতসাহি করতে সরকারকে কার্যকর উদ্যোগ নেবার দাবী জানান তিনি।
মূল প্রবন্ধে মোহাম্মদ আবদুল মান্নান বলেন, প্রবাসীরা শুধু নিজেদের সমৃদ্ধ করছেন না তারা বাংলাদেশের আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে বিরাট ভূমিকা রাখছেন। বাংলাদেশ তিন আর এর উপর নির্ভরশীল । রেডিমেট গার্মেন্টস, রেমিটেন্স, রুরাল ডেভেলপমেন্ট। তিনি প্রবাসীদের আশ্বস্ত করে বলেন, ব্যাংকিং চ্যানেলে যেসব রেমিটেন্স পাঠানো হবে তার নিরাপত্তা বিধানে বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর। প্রবাসী বিনিয়োগ বান্ধব ব্যাকিং কার্যক্রম গড়ে তুলতে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো শিগগরই কার্যকর উদ্যোগ নেবে। তিনি আরো বলেন, পাচার হওয়া টাকা ফিরিয়ে আনতে ব্যাংকগুলো কাজ করছে। ভঙ্গুর ব্যাংকিং সেক্টরকে শিগগিরই তাঁর স্বকীয়তায় ফিরিয়ে আনতে হবে।
এজন্য সবাইকে ধৈর্য্য ধরার আহ্বান জানান। অধ্যাপক ড. শওকত আলী বলেন, রেমিটেন্স পাঠানো নয় বলুন প্রবাসীরা বিনিয়োগ পাঠাবে। কিভাবে পাঠাবে এবং বিনিয়োগের নিরাপত্তা বিধানে ব্যাংক গুলোকে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। ড. মীর্যা গালিব বলেন, বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টর রাজনীতি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। সুতরাং আগে প্রয়োজন রাজনৈতিক সংস্কার । এজন্য সরকারকে সহযোগিতা ও সময় দিতে বাংলাদেশি সকলের প্রতি আহ্বান জানান। এটর্নি গোলাম মোস্তফা বলেন, প্রবাসীরা বিনিয়োগে আগ্রহী । কিন্তু প্রবাসীদের বিনিয়োগ নানা কারণে ঝুঁকির মূখে পড়ে।
এজন্য সরকার ও ব্যাংকগুলোকে উদ্যোগ নিতে হবে। এছাড়া সেমিনারে সাধারণ আলোচনায় অংশ নেন সেমিনারটির ষ্পন্সর প্রতিষ্ঠান গুড হোম ব্যাবারেজ ইন্টারন্যাশনাল এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ উল্লাহ, সাপ্তাহিক বাংলাদেশ পত্রিকার সম্পাদক ডা. ওয়াজেদ এ খান, প্লাসিড এর কর্ণধার ড. কামাল, ব্যাংক এশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের সিইও আতাউর রহমান প্রমূখ।