কলকাতায় বাংলাদেশের বিজয় দিবস উদযাপন

বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধুর কারণেই স্বপ্ন দেখি: পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  ১৭ ডিসেম্বর ২০২২, ১২:০৫
আপডেট  : ১৭ ডিসেম্বর ২০২২, ১২:০৯

যে ভাষায় স্বপ্ন দেখি, লিখি, যে ভাষায় দুঃখ-আনন্দ সবকিছু প্রকাশ করি, তার একটাই কারণ- বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কলকাতার বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনে অনুষ্ঠিত মহান বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেছেন পশ্চিমবঙ্গের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।
তিনি বলেন, আমার সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ অন্তরের। আমার সৌভাগ্য যে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ছেলে শেখ কামালের সঙ্গে ১৯৭৩ সালে বিশ্ব যুব দিবসে আলাপ হয়েছিল। আমরা দুজনই খুব ভালো বন্ধু হয়ে গিয়েছিলাম। আজ তিনি নেই। কিন্তু বাংলাদেশ আছে। আমার খুব গর্ব হয় যে, আমরা বাঙ্গালি। গোটা পৃথিবী, জাতিসংঘে বাংলা একটি স্বীকৃত ভাষা। যে ভাষায় আমরা বাংলায় কথা বলি, যে ভাষায় আমরা ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখি, যে ভাষায় আমি লিখি, যে ভাষায় দুঃখ-আনন্দ সবকিছু প্রকাশ করিও তার একটাই কারণ- বাংলাদেশ এবং মুজিবর রহমান।
শোভনদেব বলেন, আজ বাংলাদেশ প্রতিটা ক্ষেত্রে ভারতীয় উপমহাদেশের প্রতিটি দেশকে অতিক্রম করে চলেছে। বাংলাদেশ উন্নতির শিখরে উঠেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বা তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে যে মানসিকতায় দেশকে গড়ে তুলেছেন, সব মানুষের অংশগ্রহণের ফলেই দেশটিতে উন্নয়নের অগ্রগতি চলছে।


তিনি আরও বলেন, ভাষার জন্য আন্দোলন ও এরপর দেশ স্বাধীন হয়েছে, এমনটি আর জানা নেই। মুজিবুর রহমানের আত্মত্যাগ, লড়াই, সংগ্রাম গোটা বিশ্বে মহান বিপ্লবীদের নামের পাশে থাকবে।
পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে সামনে রেখে তার কন্যা শেখ হাসিনা যেভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন... আমরা উভয় দেশই উন্নয়নশীল। যেদিন আমরা যখন উন্নত দেশের মর্যাদা পাবো, সেদিন আরও গর্ব করে বলতে পারবো যে, আমার ভাষা নিয়ে যে দেশ একদিন জন্মেছিল, সেই দেশ আজ উন্নত।
পরে গণমাধ্যমের কর্মীদের প্রশ্নের জবাবে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, বাঙালি মানে আবেগপ্রবণ। বাঙালির এই আবেগটা একটা লাইন দিয়ে ভাগ করা বা বিচ্ছিন্ন করা যায় না। একটা বাংলাদেশ হলো, একটা ভারতবর্ষ- এভাবে বাঙালিকে ভাগ করা যায় না। কিছু মানুষ সব জায়গায় থাকে। আসলে অন্ধকার আছে বলেই আলোকে ভালোবাসে মানুষ। যারা আমাদের মধ্যে ভাগাভাগি করতে চায়, সম্পর্ককে খারাপ করতে চায়, বিচ্ছিন্ন করতে চায়, তারাই বারবার পরাস্ত হবে। ফলে বিজয়ের ৫১ বছরেও আমাদের মধ্যে সম্পর্কের কোনো দূরত্ব তৈরি হয়নি।
যথাযোগ্য মর্যাদায় কলকাতার বাংলাদেশ উপহাইকমিশনে উদযাপিত হচ্ছে মহান বিজয় দিবস। এ উপলক্ষে দিনভর নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরু হয় সকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে। পতাকা উত্তোলন করেন উপ-হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস। পরে উপ-হাইকমিশন প্রাঙ্গণের ‘মুজিব চিরঞ্জীব' মঞ্চে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হয়।
সন্ধ্যায় মিশন প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধু মঞ্চে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। এরপর ছিল আলোচনা সভা এবং সবশেষে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সে তার পরিবেশন করেন পার্থ বোস এবং বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সদস্যরা।