যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করলে নেতানিয়াহুর গ্রেফতার হওয়ার শঙ্কা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৪:৫৬

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করলে গ্রেফতার হতে পারেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন  ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিট। নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পর শুক্রবার (২২ নভেম্বর) ডাউনিং স্ট্রিট এমন ইঙ্গিত দিল। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
ডাউনিং স্ট্রিটের এক মুখপাত্র এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।
যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করলে নেতানিয়াহুকে আটক করা হবে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র ‘পরিস্থিতিগত প্রশ্নে’ মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন।
তবে তিনি বলেছেন,  ‘ব্রিটিশ সরকার তার আইনি বাধ্যবাধকতা পূরণ করবে।’
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র নিশ্চিত করেছেন যে দেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক আইনের অধীন থাকা বাধ্যবাধকতাগুলো সব সময়ই মেনে চলে যুক্তরাজ্য সরকার।
গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের  অভিযোগে বৃহস্পতিবার নেতানিয়াহু ও ইসরায়েলের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আইসিসি। চুক্তি অনুযায়ী এ আদালতের সদস্য দেশগুলো এই পরোয়ানা কার্যকর করতে বাধ্য। চুক্তি স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাজ্যও রয়েছে।
নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পরই ডাউনিং স্ট্রিট জানিয়েছিল, যুক্তরাজ্যের সরকার আইসিসির স্বাধীনতাকে সম্মান করে এবং গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ অব্যাহত রাখবে তারা।
যুক্তরাজ্যের ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট অ্যাক্ট ২০০১ অনুযায়ী, সর্বোচ্চ এ আদালত যদি কোনও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন, তাহলে একজন মনোনীত মন্ত্রী অনুরোধটি একজন উপযুক্ত বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তার কাছে পাঠান। ওই বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা পরোয়ানাটি যুক্তরাজ্যে কার্যকর করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন।
এ প্রক্রিয়ায় কোনও মন্ত্রীকে নিযুক্ত করা হবে, সে বিষয় নিশ্চিত করতে পারেননি ওই মুখপাত্র। যুক্তরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল লর্ড হারমারের কাছ থেকে কোনও আইনি পরামর্শ চাওয়া হয়েছে কি না, সে ব্যাপারে মুখ খোলেননি তিনি।

যুক্তরাজ্যে সারা বিশ্ব থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা ও প্রত্যর্পণের যেসব অনুরোধ আসে, সেগুলো কার্যকর করার আগে প্রাথমিক যাচাই–বাছাইয়ের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি বিশেষ দলের কাছে পাঠাতে হয়। তবে যুক্তরাজ্যের আইসিসি–সংক্রান্ত আইন অনুযায়ী, সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে গ্রেফতার ও হস্তান্তর করা উচিত কি না, সে বিষয়ে আদালতই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়।

হামাসের সামরিক কমান্ডার মোহাম্মদ দেইফের বিরুদ্ধেও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আইসিসি। তবে গত জুলাইয়ে তাকে হত্যার দাবি করেছে ইসরায়েল। হামাসের পক্ষ থেকে কিছু বলা না হলেও, তিনি বেঁচে আছেন কি না, তা স্পষ্ট নয়।
নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে জারি হওয়া গ্রেফতারি পরোয়ানার নিন্দা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তার মতে, ইসরায়েল ও হামাস ‘সমতুল্য’ নয়। তবে  কয়েকটি ইউরোপীয় দেশের কর্মকর্তারা আদালতের ওই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। এমনকি সিদ্ধান্ত কার্যকরের ঘোষণাও দিয়েছেন তারা।