ইসরায়েল ও লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর মধ্যকার যুদ্ধবিরতিকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। ২৬ নভেম্বর (মঙ্গলবার) ইসরায়েলি মন্ত্রিসভায় এ যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদিত হয়। এ চুক্তি সম্পাদনের পর পৃথক বিবৃতিতে একে স্বাগত জানায় ইসরায়েলের ঘনিষ্ট দুই মিত্র দেশ। খবর : আল জাজিরার।
বুধবার, ২৮ নভেম্বর থেকে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যকার এ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। এর মধ্য দিয়ে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান এক রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান ঘটতে চলেছে বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন।
এদিকে এই যুদ্ধবিরতিকে ‘সুসংবাদ’ বলে অভিহিত করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ‘‘এই চুক্তির উদ্দেশ্য ‘শত্রুতা স্থায়ীভাবে বন্ধ’ করা। আগামী ৬০ দিনের মধ্যে লেবানিজ সেনাবাহিনী ‘তাদের নিজস্ব অঞ্চলের’ নিয়ন্ত্রণ নেবে।’’
এই বক্তব্যের পাশাপাশি বাইডেন হুঁশিয়ারি কন্ঠে বলেছেন, ‘‘চুক্তিটি ভঙ্গ হলে ইসরায়েল তার ‘আত্মরক্ষার’ অধিকার চর্চা করবে।’’
অপরদিকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেছেন, ‘‘ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি বেসামরিক জনগণকে কিছুটা স্বস্তি দেবে।’’
এরপর তিনি ‘দীর্ঘ সময় ধরে’ চলা এ শত্রুতা বন্ধের প্রশংসা করেন। সেই সঙ্গে এ যুদ্ধবিরতিকে ‘লেবাননে একটি স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানে পরিণত’করার আহ্বানও জানান তিনি।
গাজায়ও যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার আহ্বান জানান কিয়ার স্টারমার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে তিনি লেখেন, আমাদের অবশ্যই গাজায় একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির দিকে এগোতে হবে। সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে হবে এবং প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তার ওপর থেকে বিধিনিষেধ অপসারণ করতে হবে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, টাটা দুজন মিলে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার লক্ষ্যে একপ্রকার কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু করেন।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে দেওয়া একটি প্রস্তাব গ্রহণ করে হিজবুল্লাহ ও লেবানন সরকার। এদিকে গত রবিবার, ২৪ নভেম্বর রাতে উচ্চপর্যায়ের এক বৈঠকের পর এ প্রস্তাবে সম্মতি জানান ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
এরপর গতকাল মঙ্গলবার যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার জন্য মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকেন নেতানিয়াহু। বৈঠকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন করে মন্ত্রিসভা। বৈঠক শেষে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমরা চুক্তি কার্যকর করব। তবে চুক্তির কোনো লঙ্ঘন হলে জোর প্রতিক্রিয়া জানাব।’
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পূর্ণ সমন্বয় সাপেক্ষে আমরা সামরিক তৎপরতা বন্ধ রাখব। তবে যদি হিজবুল্লাহ চুক্তি লঙ্ঘন করে বা ফের সশস্ত্র হওয়ার চেষ্টা করে, আমরা আঘাত করব।’