ইসকনের প্রতিষ্ঠা-লক্ষ্য-কর্মসূচি, যেসব দেশে নিষিদ্ধ তারা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২:৫৪
ইসকনের লোগো

ইসকনের প্রতিষ্ঠাতা অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটিতে ১৯৬৬ সালের ১৩ জুলাই এই সংগঠনের যাত্রা শুরু হয়। ইসকন মূলত বৈষ্ণব ধর্মের একটি অংশ ও ভগবান কৃষ্ণকে কেন্দ্র করে তাদের ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
ভক্তিযোগ বা কৃষ্ণভাবনামৃত সংস্কৃতি হাজার বছরের ধরে শুধুমাত্র ভারতবর্ষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। তবে সময়ের ব্যবধানে বিশ্বের বহু দেশে সম্প্রসারণ ঘটেছে সংগঠনটির। বর্তমানে বিশ্বের প্রায় শতাধিক দেশে ইসকনের অস্তিত্ব রয়েছে। তবে কিছু দেশে সংগঠনটি নিষিদ্ধ।

ইসকনের কর্মসূচি
ইসকনের প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে মন্দির নির্মাণ, ধর্মীয় উপদেশ দেওয়া, শ্রীমদ্ভগবদগীতা প্রচার, ভক্তি কার্যক্রম এবং দাতব্য সংস্থা পরিচালনা। মন্দির রক্ষণাবেক্ষণ ও আধ্যাত্মিক অনুশীলনও করে থাকে ইসকন। সংস্কৃতি চর্চার অংশ হিসেবে যোগব্যায়াম ও জীবনযাত্রার উপর শিক্ষামূলক প্রোগ্রাম করে থাকে সংগঠনটি। তাছাড়া দরিদ্রদের জন্য বিনামূল্যে নিরামিষ খাবারও বিতরণ করে থাকে ইসকন।

বাংলাদেশে ইসকনের যাত্রা
বাংলাদেশে বর্তমানে ব্যাপকভাবে সক্রিয় ইসকন। সত্তরের দশকের শুরুতে এ দেশে সংঘটির কার্যক্রম শুরু হয়। রাজধানী ঢাকার স্বামীবাগ মন্দির, যা বর্তমানে ইসকনের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত এটি সংগঠনটির প্রথম কেন্দ্রগুলোর মধ্যে অন্যতম। তাছাড়া দেশজুড়ে তারা আরও বেশ কয়েকটি মন্দির পরিচালনা করছে।
ইসকনের বাংলাদেশ শাখা তাদের বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনা করে যেমন ধর্মপ্রচার, মন্দির পরিচালনা ও বার্ষিক রথযাত্রা উৎসবের আয়োজন। স্বামীবাগ মন্দিরে ভক্তরা নিয়মিত কৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ করেন ও ভগবানের সেবা করে থাকেন।

যেসব দেশে নিষিদ্ধ ইসকন
বাংলাদেশে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টে একটি আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন আইনজীবী আল মামুন রাসেল। সেই নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব, ইরান, আফগানিস্তান ও রাশিয়াতে ইসকনকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নে ১৯৭০ ও ১৯৮০’র দশকে ইসকনকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। তবে ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ইসকন রাশিয়া ও অন্যান্য সাবেক সোভিয়েত দেশে কর্মকাণ্ড চালানোর অনুমতি পায়।
এছাড়া ইসকনের কর্মকাণ্ড তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান, কাজাখস্তান ও তুর্কেমেনিস্তানে কঠোর নজরদারিতে রাখা হয় বলেও আইনি নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
চীনে ইসকনের কার্যক্রমের অনুমতি নেই। ইসকনসহ বিদেশি ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোকে প্রকাশ্যে কাজ করার অনুমতি দেওয়া হয় না দেশটিতে। এছাড়া সিঙ্গাপুরেও এটির কোনো কার্যক্রম চালাতে দেওয়া হয় না। মালয়েশিয়াতেও নিষিদ্ধ ইসকন। দেশটিতে ইসকনের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ধর্মান্তরকরণের অভিযোগ আছে।

যেসব দেশে সক্রিয় ইসকন
ভারত, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া, জার্মানি, দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিল, কেনিয়া, তাঞ্জানিয়া, উগান্ডা, দুবাই ও ইসরায়েলে ব্যাপকভাবে সক্রিয় ইসকন। এছাড়া মেক্সিকো, কানাডা, জাপান, থাইল্যান্ড, মরিশাস, ফিজি, আর্জেন্টিনা ও কলম্বিয়ায় সংগঠনটি সক্রিয়।