ভূখণ্ড পুনরুদ্ধার নিয়ে জেলেনস্কি বলেন, আমাদের সেনাবাহিনীর সেই শক্তি নেই, এটাই সত্য।ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি স্বীকার করেছেন, রাশিয়া অধিকৃত ভূখণ্ড পুনরুদ্ধারে তাদের সেনাবাহিনীর শক্তি পর্যাপ্ত নয়। তিনি বলেছেন, কূটনীতিই এসব ভূখণ্ড মুক্ত করার সম্ভাব্য পথ হতে পারে।
জাপানি সংবাদমাধ্যম কিওডো নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। সোমবার (০২ ডিসেম্বর) ইউক্রেনের সংবাদমাধ্যম কিয়েভ ইন্ডিপেনডেন্টের প্রতিবেদন থেকে এ কথা জানা গেছে।
জেলেনস্কি উল্লেখ করেন, যদি ইউক্রেন ন্যাটোর সদস্যপদ নিশ্চিত করতে পারে, তবে কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় রাশিয়ার দখলে থাকা কিছু এলাকা উদ্ধার করা সম্ভব হতে পারে। তবে সামরিক অভিযানের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি ও সক্ষমতা অর্জনের আগ পর্যন্ত বাহিনী ব্যবহার করে ভূমি পুনরুদ্ধার নিয়ে চিন্তা করা ঠিক হবে না।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার হামলার পর ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডের বড় অংশ দখল করা হয়েছে। এর আগে, ২০১৪ সালে রাশিয়া ক্রিমিয়া অঞ্চল দখল করে। এসব অঞ্চলের পুনরুদ্ধার প্রসঙ্গে জেলেনস্কি বলেন, আমাদের সেনাবাহিনীর সেই শক্তি নেই, এটাই সত্য। আমাদের কূটনৈতিক সমাধান খুঁজে নিতে হবে।
জেলেনস্কি আরও বলেন, রাশিয়ার নতুন আগ্রাসন প্রতিরোধের মতো যথেষ্ট সামরিক সক্ষমতা অর্জনের পরই বাহিনী ব্যবহার করে মুক্তির বিষয়ে ভাবা যেতে পারে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, ন্যাটোর সদস্যপদ পেলে রাশিয়া অধিকৃত অঞ্চলের কূটনৈতিক সমাধান সহজ হতে পারে। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, ন্যাটোর সদস্যপদ পাওয়া গেলেও চার্টারের ৫ নম্বর ধারা। যা সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিরক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা রাখে, পুরো ইউক্রেনের ক্ষেত্রে কার্যকর হবে না। কারণ, ন্যাটো দেশগুলো সরাসরি যুদ্ধে জড়াতে ঝুঁকি নিতে চায় না।
জেলেনস্কি মার্কিন রাজনীতির সম্ভাব্য পরিবর্তন নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় ক্ষমতায় এলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইউক্রেন কোনো আত্মসমর্পণ করবে না।
জেলেনস্কির বক্তব্য কিয়েভের সাম্প্রতিক কৌশলগত পরিবর্তন নির্দেশ করে। আগে তিনি ইউক্রেনের ভৌগোলিক অখণ্ডতাকে সব ধরনের আলোচনার পূর্বশর্ত হিসেবে উল্লেখ করতেন। তবে এখন তিনি ন্যাটোর সদস্যপদ নিশ্চিত করার বিনিময়ে অধিকৃত অঞ্চলগুলোর অবস্থা পরে নির্ধারণে রাজি হতে পারেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন।
এর আগে ইউক্রেন যুদ্ধ এখন ‘জটিল পর্বে’ প্রবেশ করেছে বলে মন্তব্য করেন জেলেনস্কি। আন্তর্জাতিক সহায়তা যথেষ্ট নয় উল্লেখ করে, দ্রুত ন্যাটোর সঙ্গে আলোচনা শুরুর জন্য তিনি আহ্বান জানান। যুদ্ধ পরিস্থিতি, কূটনীতির সম্ভাবনা এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতির সমীকরণে ইউক্রেনের এই অবস্থান নতুন দিকনির্দেশনা হতে পারে।