সিরিয়ার বিদ্রোহীদের সঙ্গে যোগাযোগের পথ খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮:৫০

স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করা সিরিয়ার বিদ্রোহীদের সঙ্গে যোগাযোগের উপায় খুঁজছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন। তুরস্কসহ এ অঞ্চলের অন্য অংশীদারদের সহায়তায় সিরিয়ার সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্কের যাত্রা শুরু করতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেন, ওয়াশিংটনের হাতে বিভিন্ন দলের সঙ্গে যোগাযোগের অনেক উপায় আছে। সেগুলোর একটিকে ওয়াশিংটন সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছিল।
মিলার আরও বলেন, ‘কয়েক দিন ধরেই আমরা এসব আলাপ-আলোচনা করছি। সিরিয়ার ভেতরে যেসব দেশের প্রভাব রয়েছে, সেসব দেশের সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফোনে কথা বলেছেন এবং আমরা এই আলোচনা চালিয়ে যাব।’
এইচটিএস একসময় আল-কায়েদার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিল। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, তুরস্ক ও জাতিসংঘ আল-কায়েদাকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। এখন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও অনেক পশ্চিমা ও আরব দেশ আসাদের পতনে নেতৃত্ব দেওয়া এইচটিএসের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছে।
হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতৃত্বে সিরিয়ার বিদ্রোহীরা মাত্র ১২ দিনে দামেস্ক দখল করেছেন। গত রোববার বিদ্রোহীরা রাজধানী দামেস্কে প্রবেশ করলে পালিয়ে যান দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ।
এইচটিএস একসময় আল-কায়েদার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিল। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, তুরস্ক ও জাতিসংঘ আল-কায়েদাকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। এখন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও অনেক পশ্চিমা ও আরব দেশ আসাদের পতনে নেতৃত্ব দেওয়া এইচটিএসের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন গত চার দিনে দুবার তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদানের সঙ্গে কথা বলেন বলেও জানিয়েছেন মিলার।
সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে তুরস্কের সেনারা অবস্থান করছেন। সেখানে তাঁরা বিদ্রোহীদের, বিশেষ করে সিরিয়ান ন্যাশনাল আর্মিকে (এসএনএ) সহায়তা দিচ্ছেন। যদিও তুরস্ক বিদ্রোহের নেতৃত্বে থাকা এইচটিএসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে।
এইচটিএসের নেতা আহমেদ আল-শারা। তিনি আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি নামেই অধিক পরিচিত। যুক্তরাষ্ট্র তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাব দিতে অস্বীকার করেছেন মিলার। তবে তিনি কোনো সম্ভাবনাই উড়িয়ে দেননি।
ম্যাথু মিলার বলেন, ‘প্রাসঙ্গিক সব দলের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে, একভাবে বা অন্যভাবে আমাদের যোগাযোগের সক্ষমতা আছে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
জোলানিকে ২০১৩ সালে সন্ত্রাসী ঘোষণা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি তখন বলেছিল, ইরাকের আল-কায়েদা শাখা জোলানিকে সিরিয়ার আসাদ সরকারকে উৎখাত করে সেখানে ইসলামিক শরিয়া আইন প্রতিষ্ঠা করতে বলেছে।
আধুনিক যুগের মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে বড় মোড় ঘোরানো ঘটনাগুলোর একটি বাশার আল-আসাদ সরকারের পতন। বাসারের পতনের মধ্য দিয়ে আরব বিশ্বে রাশিয়া ও ইরানের প্রভাব অনেকটাই ভূলুণ্ঠিত হয়েছে। আসাদ রাশিয়া পালিয়ে গেছেন বলে শোনা যাচ্ছে।
অর্ধশতাব্দীর বেশি সময় ধরে আসাদ পরিবার সিরিয়া শাসন করেছে। ২০১১ সাল থেকে দেশটিতে গৃহযুদ্ধ চলছে।