বিগত সাত বছর ধরে ইরান এবং সৌদি আরবের মধ্যে কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিল না। কিন্তু এই দীর্ঘ সাত বছর পরে দেশ দুটি আবার কূটনৈতিক সম্পর্কস্থাপনে রাজি হয়েছে। চীনের মধ্যস্থতায় রাজধানী বেইজিংয়ে শীর্ষ কর্মকর্তাদের এক বৈঠকের পর সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে আবার সম্পর্ক স্থাপনে একমত হয়।
দুই দেশের মধ্যে আবার বাণিজ্য এবং নিরাপত্তা সহযোগিতাও শুরু হবে। সেই সঙ্গে দুই মাসের মধ্যে দুই দেশ পরস্পরের রাজধানীতে তাদের দূতাবাস খুলবে।
চীনের মধ্যস্থতায় এটি ঘটায় দুই দেশই বেইজিং এর ভূমিকার প্রশংসা করেছে। সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র হলেও ইরান ও চীন এই দুই দেশের সঙ্গেই তাদের সম্পর্কে টানাপোড়ন আছে। আবার ইয়েমেনে যে গৃহযুদ্ধ চলছে, সেখানে ইরান এবং সৌদি আরব দুই পরস্পরবিরোধী পক্ষকে সমর্থন ও সহযোগিতা দেয়।
২০১৬ সাল হতে মধ্যপ্রাচ্যের এই দুই বড় দেশের মধ্যে কোন কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিল না। সেই বছরেই সৌদি আরব এক শিয়া নেতার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পর, তেহরানে অবস্থিত সৌদি দূতাবাসে হামলা হয়েছিল। তারপর দুই দেশের সম্পর্কে নাটকীয় অবনতি ঘটে।
বিবিসির একজন সংবাদদাতা ফ্র্যাংক গার্ডনার জানিয়েছেন, বেইজিংয়ে মাত্র চারদিনের এক সমঝোতা আলোচনায় গত সাত বছরের হিমশীতল কূটনৈতিক সম্পর্কের বরফ গলানো সম্ভব হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। এতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে চীন সরকার।
তবে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের মানে এই নয় যে, তাদের নীতিগত অবস্থানে কোন পরিবর্তন ঘটেছে। পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগের চ্যানেল খোলা রাখাটাই এখানে মুখ্য উদ্দেশ্য বলে মনে হচ্ছে।
ইয়েমেনের যুদ্ধ যেমন দুই দেশের সম্পর্কের মাঝে বিরাট ফাটল তৈরি করেছে, তেমনি সৌদি আরবে শিয়া মুসলিমদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়, সেটা নিয়েও আছে বিরোধ। সৌদি আরবের অবকাঠামোর ওপর সম্প্রতি অনেক মারাত্মক ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে। এসব হামলার পেছনে ইরানের সামরিক বাহিনীর সাহায্য আছে বলে মনে করা হয়।
এ সপ্তাহেই লন্ডনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সল বিন ফারহান বলেছিলেন, তাদের মধ্যে যে মতপার্থক্যই থাকুক, তেহরানের সঙ্গে সংলাপের পথ সবসময় খোলা ছিল।
সূত্র: বিবিসি।