যুদ্ধাস্ত্রের বাজারে যুক্তরাষ্ট্রকে হারাল তুরস্ক!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০:০৯

বিশ্বের সামরিক শক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে এগিয়ে থাকা দেশ বর্তমানে নেই বললেই চলে। এমন সময়েও পরমাণু শক্তিধর দেশটিকে যুদ্ধাস্ত্রের বাজারে পিছিয়ে দেওয়ার মতো বাজার তৈরি করেছে ইউরেশিয়ার পরাশক্তি তুরস্ক। বলা হচ্ছে, যুদ্ধাস্ত্রের বাজারে সবচেয়ে কার্যকর ও প্রাণঘাতী এক যুদ্ধাস্ত্রের বাজার বলতে গেলে একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ করছে এরদোয়ানের দেশ। এমনকি যুদ্ধের ময়দানে বহুবার সক্ষমতার প্রমাণও দিয়েছে তুর্কি এসব যুদ্ধাস্ত্র।
বর্তমানে বৈশ্বিক মনুষ্যবিহীন আকাশযানের বাজারে ৬৫ শতাংই তুরস্কের দখলে—এমন দাবি করেছেন তুরস্কের বৃহত্তম ড্রোন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বাইকার মাকিনার সেলজুক বাইরাক্তার। এ সময় তুরস্ককে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ড্রোন উৎপানকারী দেশ বলেও দাবি করেন তিনি। সেলজুক বাইরাক্তার জানান, বিশ্ব বাজারে ড্রোন বিক্রির প্রায় ৬০ শতাংশ তার কোম্পানির দখলে। সম্প্রতি ডেইলি সাবাহর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
তুর্কি এ কর্মকর্তা জানান, গত তিন বছরে বাইকার বিশ্বের বৃহত্তম ড্রোন উৎপাদনকারী কোম্পানি হিসেবে নিজেদের অবস্থান ধরে রেখেছে। বর্তমানে কোম্পানিটি তার নিকটতম আমেরিকান প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে অন্তত তিনগুন বড় উৎপানকারী বলেও জানান সেলজুক বাইরাক্তার। তুরস্কের প্রতিরক্ষা ও উড্ডয়ন খাতে নির্ভরতার প্রতীকে পরিণত হয়েছে বায়কার। বর্তমানে সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ও দ্রুত উৎপাদন সক্ষমতা সম্পন্ন ড্রোন নির্মাতা হিসেবে পরিচিত তারা।
ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী রাশিয়ার বিরুদ্ধে বায়রাকতার টিবি২ ড্রোন ব্যবহার করার পর এটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিতি পায়। পাশাপাশি, আজারবাইজান ও উত্তর আফ্রিকার যুদ্ধেও এই ড্রোন ব্যবহার হয়। সেলজুক জানান, বায়রাকতার টিবি২ বর্তমানে সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হওয়া ড্রোন।
তুরস্কের প্রতিরক্ষা উপকরণ রপ্তানি খাতে আয় করা করা ৫৫০ কোটি ডলারের এক তৃতীয়াংশই আসে বায়কারের মাধ্যমে। ২০২৩ সালে বায়কারের রাজস্ব আয়ের ৯০ শতাংশই এসেছিল বিদেশি বাজার থেকে। আগের বছরের ১২০ কোটি থেকে ২০২৩ সালে ১৮০ কোটি ডলারের উন্নীত হয় তাদের রপ্তানি আয়। এ বছরের আগস্ট পর্যন্ত ৩৪ দেশে বায়রাকতার টিবি২ ও আরও ১০ দেশে আকিনজি ড্রোন রপ্তানির চুক্তি করেছে বায়কার।
বাইরাকতার সিরিজের টিবি৩ ড্রোনটি তুরস্কের প্রথম ড্রোন ক্যারিয়ারের জন্য তৈরি করা হয়েছে। যা এরই মধ্যে ছোট রানওয়ের বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ থেকে উড্ডয়ন ও অবতরণ করার সফল পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে। তুরস্কের প্রথম মনুষ্যবিহীন জেট বিমান নির্মাণ করেছে বায়কার, যার নাম রাখা হয়েছে কিজিলেলমা। ২০২২ সালে পরীক্ষামূলক ফ্লাইটের পর সম্প্রতি বাণিজ্যিকভাবে এর উৎপাদন শুরু হতে যাচ্ছে।