রাশিয়ার আগ্রাসনের অবসান ঘটাতে তাঁর দেশ ২০২৫ সালে সর্বশক্তি দিয়ে যুদ্ধ করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। প্রায় তিন বছর আগে প্রতিবেশী ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করেছিল রাশিয়া।
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে গতকাল মঙ্গলবার রাতে ঘড়ির কাঁটা ১২টার ঘরে যাওয়ার আগ দিয়ে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন জেলেনস্কি। তিনি বলেন, ‘২০২৫ সাল হোক আমাদের বছর। আমরা জানি, শান্তি আমাদের উপহার হিসেবে দেওয়া হবে না। তবে রাশিয়াকে থামাতে এবং এ যুদ্ধ শেষ করতে আমরা সবকিছু করব।’
এএফপির বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে রাশিয়ার কাছে নিজেদের প্রায় সাত গুণ বেশি ভূখণ্ডের দখল হারিয়েছে ইউক্রেন। সেই সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে আসার পর দেশটির প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ও রাজনৈতিক সমর্থন হ্রাসের সম্ভাবনাও দেখা দিয়েছে।
জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন ট্রাম্প। তার আগেই কিয়েভের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা যতটা সম্ভব বাড়ানোর চেষ্টা করছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বাইডেন প্রশাসন গত সোমবার ইউক্রেনের জন্য নতুন করে প্রায় ৬০০ কোটি মার্কিন ডলার সামরিক বাজেট সহায়তা প্রদান করেছে।
ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি ক্ষমতায় গেলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যুদ্ধ শেষ করবেন। ইউক্রেনের আশঙ্কা যুদ্ধ শেষ করে শান্তি প্রতিষ্ঠার বিনিময়ে তাদের হয়তো রাশিয়ার দখল করা ভূখণ্ডের পুরোটাই ক্রেমলিনের হাতে তুলে দিতে হবে।
নতুন বছরের ভাষণে জেলেনস্কি আরও বলেন, প্রাধান্য চাইলে ইউক্রেনকে অবশ্যই লড়াই চালিয়ে যেতে হবে, যুদ্ধক্ষেত্রে এবং সম্ভাব্য যেকোনো শান্তি আলোচনায়।
জেলেনস্কি বলেন, ‘আসছে বছরের প্রতিটি দিন আমি এবং আমাদের সবাইকে অবশ্যই এমন একটি ইউক্রেনের জন্য লড়াই করতে হবে যে দেশটি যথেষ্ট শক্তিশালী হবে। কারণ, শুধু এমন একটি ইউক্রেনকে সম্মান করা হবে এবং কথা শোনা হবে। যুদ্ধক্ষেত্র ও আলোচনার টেবিল—উভয় জায়গাতেই।’
ভাষণে জেলেনস্কিকে ট্রাম্পের ফিরে আসার ব্যাপারে আশাবাদী বলে মনে হয়েছে। জেলেনস্কি বলেন, ‘আমেরিকার নতুন প্রেসিডেন্টের পুতিনের আগ্রাসন শেষ করার ইচ্ছা আছে এবং শান্তি অর্জনে তাঁর সক্ষমতা নিয়ে আমার মনে কোনো সন্দেহ নেই।’
নিজের নতুন বছরের ভাষণে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন স্পষ্টভাবে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে কোনো কথা বলেননি। তবে তিনি রাশিয়ার সেনাদের ‘সাহস ও বীরত্বের’ প্রশংসা করেছেন।
পুতিন বলেন, ‘রাশিয়ার প্রতিরক্ষার জন্য যাঁরা সামরিক শ্রম দিতে ব্রতী হয়েছেন, আপনারাই সত্যিকারের নায়ক।’