যুক্তরাজ্যের সেন্ট্রাল লন্ডনে নাগরিক সংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী 

বেশি স্যাংশন দিলে আমরাও দিতে পারি

অগ্নিসন্ত্রাস করে মানুষকে হত্যা করাই বিএনপির আন্দোলন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ১২:৩৬
যুক্তরাজ্যে নাগরিক সংবর্ধনায় বক্তব্য দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‌‘একটা খেলা শুরু হয়েছে, স্যাংশন। কথায় কথায় স্যাংশন, কে কাকে স্যাংশন দেয়, সেটা আমার প্রশ্ন। আমি স্পষ্ট করে একটা কথাই বলছি, যাদের দিয়ে সন্ত্রাস দমন করলাম, জঙ্গিবাদ দমন করলাম তাদের ওপরে স্যাংশন, এটা কোন ধরনের কথা? তাহলে কী জঙ্গি আর সন্ত্রাসী থাকবে বাংলাদেশে? আমি সবাইকে বলে দিয়েছি, এসব নিয়ে মাথা ঘামানোর কিছু নেই।’
গতকাল সোমবার স্থানীয় সময় বিকেলে যুক্তরাজ্যের সেন্ট্রাল লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার এলাকার ম্যাথডিস্ট চার্চ হলে নাগরিক সংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ এই সংবর্ধনার আয়োজন করে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি সবাইকে বলে দিয়েছি, এসব (স্যাংশন) নিয়ে মাথা ঘামানোর কিছু নেই। আপনাদেরও বলব স্যাংশন-ট্যাংশন নিয়ে মাথা ঘামাবেন না।’
স্যাংশন নিয়ে প্রবাসীদের চিন্তা না করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদেরও বলব স্যাংশন-ট্যাংশন নিয়ে মাথা ঘামাবেন না। দেশ আমাদের, আমাদের দেশটাকে আমরাই গড়ে তুলব। কারও মুখাপেক্ষী হতে হবে না। বেশি স্যাংশন দিলে আমরাও স্যাংশন দিতে পারি। আমরাও দিয়ে দেব।’
সরকারপ্রধান আরও বলেন, ‘আমরা দেখি, রোজ আন্দোলন করবে, সরকার উৎখাত করবে। আলটিমেটাম পেলাম, ১০ ডিসেম্বর…ডাকঢোল পিটাল। কেউ ঘাবড়ে গেল, কেউ ভয় পেল; আমি বললাম ভয় পাওয়ার কিছু নেই। ১০ ডিসেম্বর আসল, গ্যাস বেলুনের গ্যাস চুপসে গেল। এখনো প্রতিদিন ধমক শুনি। ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি, আমাদেরই করা ডিজিটাল বাংলাদেশ দিয়ে আমাদেরকেই উৎখাতের চক্রান্ত।’
যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা যোগ দেন। লন্ডনের বাইরের দূরদূরান্তের শহর ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকেও এই সভায় যোগ দিতে আসেন অনেকে।

‘অগ্নিসন্ত্রাস করে মানুষকে হত্যা করাই বিএনপির আন্দোলন’
যেকোনো মূল্যে বাংলাদেশে গণতন্ত্র অব্যাহত রাখার কথাও উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘অগ্নিসন্ত্রাস করে মানুষকে হত্যা করা আর দেশের সম্পদ ধ্বংস করাই বিএনপির আন্দোলন। অগ্নিসন্ত্রাসের কথা জনগণ ভুলেনি। আর কোনো অত্যাচার হলে জনগণ ছাড় দেবে না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে প্রচুর অর্থ সম্পদ বানিয়েছে। জনগণ কিছু না পেলেও তারা মানি লন্ডারিং করে প্রচুর টাকা বিদেশে পাচার করেছে। তাদের কারণেই দেশে ইমার্জেন্সি হলো। আমাকেই প্রথম জেল খাটতে হলো। তারা আন্দোলন করুক, আমাদের কোনো আপত্তি নেই।’
তিনি বলেন, ‘জনগণ তাদের সঙ্গে নেই। আন্দোলনের নামে তারা যদি দেশের মানুষকে আবার অত্যাচার করতে চায় তাহলে তাদের কোনো ছাড় নেই।’
বাংলাদেশে গণতন্ত্র অব্যাহত রাখতে সরকার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে কাজ করছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ করতে সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে গত ১৭ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর ৭৮তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন এবং অন্যান্য উচ্চ পর্যায়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখান থেকে গত ২৩ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটন ডিসি পৌঁছান তিনি। ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থানের সময় যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া সংবর্ধনায় যোগ দেন এবং ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাস পরিদর্শন করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী আজ ৩ অক্টোবর রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে (লন্ডন সময়) বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে (বিজি-২০৮) লন্ডন ত্যাগ করবেন। ৪ অক্টোবর বাংলাদেশ সময় বেলা সাড়ে ১২টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।