যুক্তরাজ্যের লন্ডনের হোয়াইট চ্যাপেল মেট্রো স্টেশনের নামফলক বাংলা এবং ইংরেজি দুই ভাষাতেই লেখা আছে। সেই নামফলক ঘিরে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি এক ব্রিটিশ এমপি এই বাংলা লেখার বিরোধিতা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘সাইনেজ বা নামফলক কেবল ইংরেজিতেই হওয়া উচিত।
হোয়াইটচ্যাপেলের নাম বাংলা ভাষায় লেখা থাকায় আপত্তি তোলা রুপার্ট হলেন ‘রিফর্ম ইউকে’ রাজনৈতিক দলের এমপি। এই ব্রিটিশ এমপির পক্ষে দাঁড়িয়েছেন বিশ্বের শীর্ষ ধনকুবের ইলন মাস্ক।
যুক্তরাজ্যের এমপি রুপার্ট লোউ স্টেশনের বাংলা নামফলকে সরাসরি বিরোধিতা করে বলেছেন, ‘এটা লন্ডন- এখানে স্টেশনের নাম শুধুমাত্র ইংরেজিতেই লেখা উচিত... শুধু ইংরেজিতেই।’
রুপার্টের সেই সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে জবাব দিলেন ধনকুবের ইলন মাস্ক।
অতি ডানপন্থী মনভাবাপন্ন মাস্ক রুপার্টকে সমর্থন করে একশব্দের জবাবে লেখেন- ‘হ্যাঁ’।
ইলন মাস্ক যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত। সম্প্রতি ব্রিটেনের ডানপন্থি রাজনৈতিক দল রিফর্ম ইউকের নীতিমালার বিষয়ে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। তিনি রিফর্ম ইউকের বর্তমান নেতা নাইজেল ফারাজকে সরিয়ে তার জায়গায় রুপার্ট লোয়েরকে বসানোর পক্ষে মত দিয়েছেন।
এই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি লোয়ের পোস্টকে সমর্থন করেন।
২০২২ সাল থেকে পূর্ব লন্ডনের বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকার এই টিউব স্টেশনের নাম লেখা বাংলা ভাষায়। বর্তমানে এই অঞ্চলের মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ মানুষই হল বাঙালি। এই অঞ্চলে আগে থেকেই বহু দোকানের নাম রয়েছে বাংলা ভাষায়। এই আবহে দীর্ঘদিন ধরে দাবি ছিল হোয়াইটচ্যাপেল স্টেশনের নাম যাতে বাংলায় লেখা হয়।
সেই দাবি মেনে বাংলা ভাষাকে সম্মান দেওয়ার জন্য সেখানকার স্টেশনের নামে বাংলা যোগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল লন্ডন প্রশাসন।
‘রিফর্ম ইউকে’ অতি ডানন্থী দলটি গঠন করা হয়েছিল ২০১৮ সালে। নাইজেল ফারাজ এই রাজনৈতিক দলটির প্রধান। ব্রিটিশ সংসদের নিম্নকক্ষ বা হাউজ অব কমন্সের (৫০ আসন বিশিষ্ট) এই দলটির সদস্য সংখ্যা মাত্র ৫। এদিকে লন্ডনের এসেম্বলিতে (২৫ সদস্য বিশিষ্ট) রিফর্ম ইউকে’র সদস্য সংখ্যা মাত্র ১।
রাজনৈতিকভাবে এই দলটি ততটাও প্রাসঙ্গিক না থাকলেও বিগত দিনে ইংল্যান্ডে অতি ডানপন্থার একটি ‘ঢেউ’ দেখা গিয়েছে। বিশেষ করে পাকিস্তানি ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে নাবালিকা ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর থেকে।
এদিকে রুপার্টের পোস্টের পর সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। অনেক ব্যবহারকারী তার বক্তব্যকে সমর্থন করে বলেছেন, যুক্তরাজ্যে শুধু ইংরেজি ভাষাতেই সাইনবোর্ড থাকা উচিত। অন্যদিকে, অনেকে এর বিরোধিতা করে বলেছেন, একটি বহুজাতিক ও বৈচিত্র্যময় সমাজে বিভিন্ন ভাষায় সাইনেজ থাকা দোষের কিছু নয়।
সূত্র: এনডিটিভি, হিন্দুস্তান টাইমস।